একটি মামলায় হাইকোর্ট জামিন দিল আচার্য মাহবুবুলকে

- আপডেট : ৪ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 38
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: শেষ পর্যন্ত ইউনির্ভাসিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি মেঘালয়া (ইউএসটিএম)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও আচার্য মাহবুবুল হক গুয়াহাটি হাইকোর্ট থেকে একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন। উল্লেখ্য, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বেশ কিছুদিন ধরে মাহবুবুল হককে টার্গেট করে নানা ধরনের আজগুবি অভিযোগ করে যাচ্ছিলেন। তিনি অসম সীমান্তবর্তী মেঘালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিএম-এর বিরুদ্ধেও বেশকিছু অভিযোগ তোলেন। পরে অবশ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, এই অভিযোগসমূহের সবগুলি মিথ্যা। কারণ, ইউএসটিএম-এর পড়ুয়ারা রাজ্য ও জাতীয় স্তরে খুবই নজরকাড়া ফলাফল করেছে। মাহবুবুল হক ডিগ্রি বিক্রি করছেন বলে হিমন্ত-র অভিযোগ সম্পর্কে কোনও প্রমাণ মেলেনি।
বিগত ২১ ফেব্রুয়ারি অসমের করিমগঞ্জ পুলিশ মাহবুবুল হকের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের করে। এই করিমগঞ্জ জেলার নাম পালটে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ‘শ্রীভূমি’ রেখেছেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি মাহবুবুল হকের ‘রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন’-এর অধীন করিমগঞ্জের একটি সিবিএসই স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় জালিয়াতি হওয়ার অভিযোগে মাহবুবুল হককে গভীর রাতে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার পুলিশ গুয়াহাটি থেকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, ‘রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন’-এর অধীন ওই সিবিএসই স্কুলটির সঙ্গে ইউএসটিএম-এর আচার্যের সম্পর্ক হচ্ছে, তিনি ওই রিসার্চ ফাউন্ডেশনটির প্রতিষ্ঠাতা যা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রসারের জন্য কাজ করে চলেছে। সিবিএসই স্কুলের কিছু ছাত্রের দাবি ছিল, স্কুল কর্তৃপক্ষ নাকি তাদেরকে পরীক্ষায় জালিয়াতি করতে দেয়নি। অথচ পড়ুয়াদের আশা ছিল, তারা পরীক্ষায় জালিয়াতি করে নম্বর বাড়ানোর সুযোগ পাবে। এই অভিযোগে ওই পড়ুয়ারা স্কুলে ভাঙচুর করে। হিমন্ত বিশ্ব শর্মার পুলিশ পড়ুয়াদের পক্ষ নিয়ে ইউএসটিএম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে গ্রেফতার করে। যদিও ওই সিবিএসই স্কুল পরিচালনার সঙ্গে আচার্য মাহবুবুল হকের কোনও সম্পর্ক ছিল না। গুয়াহাটির বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছে, ইদানীং হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও তাঁর স্ত্রী অসমে এক ‘শিক্ষা সাম্রাজ্য’র প্রতিষ্ঠার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছেন এবং এই শিক্ষা সাম্রাজ্যে যাতে কেউ নাক না গলাতে পারে তার জন্য সমস্ত প্রতিদ্বন্দ্বীদের নরমে-গরমে বিরত রাখছেন। হিমন্ত চেয়েছিলেন মেঘালয়ে তিনি একটি মেডিক্যাল কলেজ করবেন। কিন্তু মাহবুবুল হক আগেই তা করে ফেলায় তিনি এখন অসমের এই কৃতী সন্তানকে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করছেন। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আদলতকেও কি ম্যানেজ করেছেন, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত আগাম বলে দিচ্ছেন যে, মাহবুবুল হককে এখন সুদীর্ঘকাল কারাগারে থাকতে হবে। অর্থাৎ তিনি বিচারাধীন বিষয়ে আগাম রায় দিয়ে দিচ্ছেন। মাহবুবুল হক শ্রীভূমির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে জামিন চাইলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
মাহবুবুল হকের আইনজীবী অংশুমান বরা বলেছেন, আমরা গত শুক্রবার গুয়াহাটি হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করি। আর তার প্রথম শুনানিতেই একটা মামলায় হাইকোর্ট আচার্য মাহবুবুল হককে জামিন দিয়ে দিয়েছে। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আগেই অনুমান করতে পেরেছিল যে, আগেই মাহবুবুল হককে জামিন দেওয়া হবে পারে। তাই তারা একই ধরনের আরও একটি এফআইআর দায়ের করে। এই মামলাটি আজ মঙ্গলবার অন্য একজন বিচারকের এজলাসে উঠবে। অংশুমান বরা বলেন, আমরা আশা করিছি এই ক্ষেত্রেও আমরা সুবিচার পাব।
আচার্য মাহবুবুল হকের বিরুদ্ধে হিমন্তের আর একটি অভিযোগ হচ্ছে, তিনি নাকি পাহাড় কেটে রাজধানী গুয়াহাটিতে বন্যা সৃষ্টি করেছেন! এটা নাকি তাঁর ‘অপারেশন ফ্লাড জিহাদের’ একটি অংশ।