বেঙ্গালুরু, ১০ মার্চ: অপরাধ সংগঠিত হলেই মুসলিম যোগ খোঁজা জেনো রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশে। সম্প্রতি কর্ণাটকে এক গণধর্ষণের ঘটনায় মুসলিমদের টার্গেট করে ঘৃণা প্রচার শুরু করেছে হিন্দুত্ববাদীরা। ‘গণধর্ষণের হোর্তা জেহাদিরা’ এমনই নানা ঘৃণা প্রচার শুরু হয়েছে সামাজিক মাধ্যমজুড়ে। উল্লেখ্য, ৬ মার্চ রাতে কর্ণাটকের কোপ্পালে এক ইসরাইলি পর্যটক সহ এক মহিলাকে গণধর্ষণের ঘটনা সামনে আসে। গণধর্ষণের পর ইসরাইলি পর্যটককে খুন করে খালে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় মুসলিম যোগ টেনে ইসরাইল-ফিলিস্থিনি তত্ব খাড়া করেছে হিন্দুত্ববাদীরা। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা দাবি করেছেন, ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরাইলি বর্বরতার বদলা নিতেই ইসরাইলি পর্যটক গণধর্ষণ করেছে ভারতীয় মুসলিমরা। এমনই নানা মিথ্যা ও ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে মুসলিমদের টার্গেট করে ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ভুয়ো খবর ছড়ানোয় অতি পরিচিতি গেরুয়া পন্থী ‘মিঃ সিনহা’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট। অতীতে একাধিক ভুয়ো খবর ছড়িয়ে দাঙ্গায় উস্কানি দিতে দেখা গিয়েছে ওই অ্যাকাউন্টটিকে। কর্ণাটকের ঘটনাকে সামনে রেখে এক পোস্টে মিঃ সিনহা লিখেছে, “কর্ণাটকে এক ইসরাইলি পর্যটক এবং ওড়িশার এক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তাদের সঙ্গি তিন পুরুষকেও বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। ইসরাইলি পর্যটককে ধর্ষণের পিছনে ফিলিস্তিনপন্থীরা জড়িত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দিলে হবে না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উচিত মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার। না হলে কংগ্রেস শাসিত রাজ্য সরকার এটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করবে।” এই পোস্টের পরই আগুনের মত ঘৃণা ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই কমেন্টে দেশজুড়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে দমন-নিপীড়ন, দেশ থেকে তাড়ানো এবং হত্যা করার দাবি তুলেছে। কেউ কেউ লিখেছে, ‘জিহাদি অপরাধীরা যুক্ত’, ‘এটি প্রো-ফিলিস্তিনদের কাজ’ এবং ‘জিহাদিরা ছাড়া আবার কে!’
এদিকে গণধর্ষণের ঘটনায় তিন অমুসলিম অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হল ২২ বছরের মল্লেশ ওরফে হান্ডি মাল্লা, ২১ বছর বয়সী চেতন সাই। পুলিশ জানিয়েছে, তৃতীয় অভিযুক্তকে তামিলনাড়ু থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার কর্ণাটকের মন্ত্রী শিবরাজ তাঙ্গাদাগি বলেন, ‘এই জঘন্য অপরাধে জড়িত তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এমন নৃশংস ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”