১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল-আকসায় ‘নজিরবিহীন’ বাড়ছে ইহুদিদের প্রবেশ 

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
  • / 3

পুবের কলম ওয়েব  মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ ভেঙে সেখানে ইহুদি মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা করছে দখলদার ইসরাইলের অবৈধ বসতিস্থাপনকারীরা।

হিব্রু ভাষায় বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এ নিয়ে তারা আলোচনা চালাচ্ছে বলে সতর্কতা জারি করেছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয়। শনিবার আলজাজিরা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, ‘আল-আকসা মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনাকে আমরা দখলকৃত জেরুজালেমে ইসলামিক এবং খ্রিস্টানদের পবিত্র স্থানে পদ্ধতিগত উসকানি হিসেবে বিবেচনা করি।’

ইসরাইলি বসতিস্থাপনকারীরা বহুদিন ধরেই আল-আকসা প্রাঙ্গণে উসকানিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তারা প্রায়ই মুসলিমদের পবিত্র এই স্থানে অনুপ্রবেশ করে, সেখানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ধর্মীয় আচার পালন করে এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সহায়তায় দাঙ্গা ও হামলা চালায়। আল-আকসা মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক ইসলামিক ওয়াক্ফ জানিয়েছে, গত বুধবার ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি ইহুদি মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করেন। গত সপ্তাহের সাপ্তাহিক ছুটি থেকেই ইহুদিদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘পাসওভারের’ ছুটি শুরু হয়। পাসওভারের ছুটি শুরুর পর চার হাজারের বেশি ইহুদি নিয়ম লঙ্ঘন করে এ পবিত্র স্থানে প্রবেশ করেছেন। কয়েক হাজার ইহুদিকে জেরুজালেমের ওল্ড সিটির লায়ন্স গেটে নেচে উল্লাস করতে দেখা যায়। এ সময় মুসলিমদের মসজিদে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।

অথচ ‘জেরুজালেম স্ট্যাটাস কু’ বা ঐতিহাসিক চুক্তি অনুযায়ী, অমুসলিমরা আল-আকসা প্রাঙ্গণে প্রার্থনা করতে পারবে না। তবুও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইহুদি কট্টরপন্থিরা সেখানে নিয়মিত প্রবেশ করছে এবং এখন তারা সরাসরি মসজিদটি গুঁড়িয়ে সেখানে ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের ডাক দিচ্ছে। ইহুদিরা বিশ্বাস করে, ‘টেম্পল মাউন্টেই’ তাদের পয়গম্বর আব্রাহাম (নবী ইব্রাহিম আ.) তার পুত্র ইসমাইলকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন। তাদের বিশ্বাস মতে, এখানেই ছিল ইহুদিদের প্রথম ও দ্বিতীয় পবিত্র উপাসনালয়। তারা মনে করে, তিন হাজার বছর আগে রাজা সুলেমান (হজরত সুলাইমান আ.) এখানে প্রথম উপাসনালয় নির্মাণ করেছিলেন। যেটি ধ্বংস করে দেয় ব্যাবিলনীয়রা।

২০০০ বছর ধরে ইহুদিরা তাদের স্বপ্নের ‘থার্ড টেম্পল’ বানানোর আশায় বসে আছে। ‘থার্ড টেম্পল’ তৈরি না করতে পারলে তাদের ‘মাসিহ’ দাজ্জালের আগমন হবে না- তারা এমনটাই বিশ্বাস করে। দাজ্জাল এসে ইহুদিদের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে দিবে। বহু বছর আগে ‘থার্ড টেম্পলের’ নকশা তৈরি করে রেখেছে ইহুদিরা। এ নকশা বর্তমানে আল আকসার পাশেই একটি বাড়ির ছাদে ভিজুয়ালাইজেশন করে সাজিয়ে রেখেছে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আল-আকসায় ‘নজিরবিহীন’ বাড়ছে ইহুদিদের প্রবেশ 

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার

পুবের কলম ওয়েব  মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ ভেঙে সেখানে ইহুদি মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা করছে দখলদার ইসরাইলের অবৈধ বসতিস্থাপনকারীরা।

হিব্রু ভাষায় বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এ নিয়ে তারা আলোচনা চালাচ্ছে বলে সতর্কতা জারি করেছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয়। শনিবার আলজাজিরা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, ‘আল-আকসা মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনাকে আমরা দখলকৃত জেরুজালেমে ইসলামিক এবং খ্রিস্টানদের পবিত্র স্থানে পদ্ধতিগত উসকানি হিসেবে বিবেচনা করি।’

ইসরাইলি বসতিস্থাপনকারীরা বহুদিন ধরেই আল-আকসা প্রাঙ্গণে উসকানিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তারা প্রায়ই মুসলিমদের পবিত্র এই স্থানে অনুপ্রবেশ করে, সেখানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ধর্মীয় আচার পালন করে এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সহায়তায় দাঙ্গা ও হামলা চালায়। আল-আকসা মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক ইসলামিক ওয়াক্ফ জানিয়েছে, গত বুধবার ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি ইহুদি মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করেন। গত সপ্তাহের সাপ্তাহিক ছুটি থেকেই ইহুদিদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘পাসওভারের’ ছুটি শুরু হয়। পাসওভারের ছুটি শুরুর পর চার হাজারের বেশি ইহুদি নিয়ম লঙ্ঘন করে এ পবিত্র স্থানে প্রবেশ করেছেন। কয়েক হাজার ইহুদিকে জেরুজালেমের ওল্ড সিটির লায়ন্স গেটে নেচে উল্লাস করতে দেখা যায়। এ সময় মুসলিমদের মসজিদে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।

অথচ ‘জেরুজালেম স্ট্যাটাস কু’ বা ঐতিহাসিক চুক্তি অনুযায়ী, অমুসলিমরা আল-আকসা প্রাঙ্গণে প্রার্থনা করতে পারবে না। তবুও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইহুদি কট্টরপন্থিরা সেখানে নিয়মিত প্রবেশ করছে এবং এখন তারা সরাসরি মসজিদটি গুঁড়িয়ে সেখানে ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের ডাক দিচ্ছে। ইহুদিরা বিশ্বাস করে, ‘টেম্পল মাউন্টেই’ তাদের পয়গম্বর আব্রাহাম (নবী ইব্রাহিম আ.) তার পুত্র ইসমাইলকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন। তাদের বিশ্বাস মতে, এখানেই ছিল ইহুদিদের প্রথম ও দ্বিতীয় পবিত্র উপাসনালয়। তারা মনে করে, তিন হাজার বছর আগে রাজা সুলেমান (হজরত সুলাইমান আ.) এখানে প্রথম উপাসনালয় নির্মাণ করেছিলেন। যেটি ধ্বংস করে দেয় ব্যাবিলনীয়রা।

২০০০ বছর ধরে ইহুদিরা তাদের স্বপ্নের ‘থার্ড টেম্পল’ বানানোর আশায় বসে আছে। ‘থার্ড টেম্পল’ তৈরি না করতে পারলে তাদের ‘মাসিহ’ দাজ্জালের আগমন হবে না- তারা এমনটাই বিশ্বাস করে। দাজ্জাল এসে ইহুদিদের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে দিবে। বহু বছর আগে ‘থার্ড টেম্পলের’ নকশা তৈরি করে রেখেছে ইহুদিরা। এ নকশা বর্তমানে আল আকসার পাশেই একটি বাড়ির ছাদে ভিজুয়ালাইজেশন করে সাজিয়ে রেখেছে।