অসমে উচ্ছেদ করতে গিয়ে চলল গুলি, মৃত ২, আহত বহু

- আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৩, বুধবার
- / 8
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রায় ছয় মাস আগে সরকারি জমি হাতিয়ে বসবাস করার ‘অপরাধে’ অসমের বুরহা চাপোরি এলাকায় নির্মম উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছিল হিমন্ত বিশ্ব শর্মার পুলিশ। তাদের জন্য সরকার পুনর্বাসনের কোনও ব্যবস্থা না করে এক রাতেই তাদের গৃহহারা করে দিয়েছিল। ছ’মাস পরে যেখানে তারা কোনোমতে মাথা গোঁজার বন্দোবস্ত করেছিল, সেটাও প্রকৃতির রোষানলে ভেসে যাওয়ায় তারা অকুলপাথারে পড়ে। যেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল সাম্প্রতিক বন্যা বিপর্যয়ের পর অস্থায়ীভাবে থাকার জন্য তারা ফের ফিরে আসে বুরহা চাপোরির অভয়ারণ্যে। তাদের বাধা দেয় জঙ্গলের গার্ডরা। কিন্তু বাধা দেওয়াটা হিংসায় পরিণত হয়।
ফরেস্ট গার্ড বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়ে মেরে ফেলে একজনকে এবং তাদের গুলিতে আহত আরও কয়েকজন। বিকেল পর্যন্ত খবর, মারা গিয়েছেন দু’জন। জঙ্গল গার্ডের গুলিতে প্রথমে যিনি মারা গিয়েছেন, তিনি দু’সন্তানের জননী রহিমা খাতুন। জঙ্গল গার্ডের গুলিতে আহত হয়েছেন কয়েকজন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বাধীন অসমের বিজেপি সরকার ২৫০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করেছিল ‘বেআইনি’ভাবে সরকারি জমিতে বসবাস করার জন্য।
ব্রহ্মপুত্র নদীর দক্ষিণ তটে বুরহা চাপোরির অভয়ারণ্যে ১৮৯২ হেক্টর জমি খালি করিয়েছিল সরকার বলে দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী শর্মা। কিন্তু এই পরিমাণ জমির উপর যারা দীর্ঘদিন বাস করেছে তাদের পুনর্বাসনের কথা একবারও মুখে আনেননি মুখ্যমন্ত্রী।
রহিমা খাতুনের পরিবার বন্যার কারণে দু’দিন আগেই ফিরে এসেছিল বুরহা চাপোরিতে। ত্রিপল টাঙিয়ে সেখানে তারা তাদের গরু-ছাগল নিয়ে অস্থায়ীভাবে বাস করতে এসেছিল। কারণ জায়গাটা উঁচু হওয়ায় বন্যার জল সেখানে আসে না।
এ কথা জানিয়েছেন নওগাঁও-এর অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট আধুল নুর। ফরেস্ট অফিসার জয়ন্ত ডেকা বলেছেন, প্রায় ১০০০ মানুষ ছুরি, দা এবং অন্য ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর চড়াও হয়েছিল। এদের মধ্যে সংখ্যায় মহিলারা ছিলেন বেশি। নিজেদের সুরক্ষার জন্য জঙ্গলের গার্ডরা শূন্যে গুলি ছুড়েছে। জয়ন্ত ডেকা বলেন, আহত হয়েছেন আমাদের কিছু জঙ্গলগার্ডও। তবে ডেকা এটা বলেননি, শূন্যে গুলি ছুঁড়লে কীভাবে মারা যান রহিমা খাতুন। প্রথমতঃ এতবড় ঘটনা ছিল না যে গুলি ছুড়তে হবে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী।