১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে আইএসএফের সভা নয়, জানালো প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৯ জানুয়ারী ২০২৪, শুক্রবার
  • / 6

মোল্লা জসিমউদ্দিন: চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই জোর ধাক্কা খেল আইএসএফ নেতৃত্ব। গত বৃহস্পতিবারের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করলো প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের দাবিতেই একপ্রকার মান্যতা দিল আদালত। আগামী ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে মঞ্চ তৈরি করে মাইক বেঁধে সভা করতে পারবে না আইএসএফ। এ ব্যাপারে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গল বেঞ্চের শর্তসাপেক্ষে দেওয়া সেই অনুমোদন খারিজের দাবিতে এদিন ডিভিশন বেঞ্চ এর দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। রাজ্যের যুক্তি, ‘ওই দিন ভিনটেজ কার র‍্যালি এবং এসইউসিআই-এর মিছিল রয়েছে। এছাড়াও কলকাতা পুলিশের ম্যারাথনের কর্মসূচি আছে। তাই রামলীলা ময়দানে অথবা রানি রাসমণি বা যে কোনও ইনডোর স্টেডিয়ামে সভা করুক আইএসফ’।

 

রাজ্যের আর্জি মেনে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ, ২১ জানুয়ারি ধর্ণতলায় আইএসএফের সভার অনুমতি খারিজ করে জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের ঠিক করে দেওয়া জায়গাতেই সভা করতে হবে আইএসএফকে’। এর পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘রাস্তা আটকে সভা করা যাবে না’। এ ব্যাপারে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে নওসাদ সিদ্দিকির দলকে কর্মসূচি ঠিক করার নির্দেশও দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন মামলার শুনানিতে রাজ্য সওয়াল-জবাবে জানায়, ‘দলীয় অনুষ্ঠান করার অধিকার সব দলের আছে, কিন্তু স্থান নির্বাচন তারা নিজেরা করতে পারে না। যে জায়গায় সভা করার আর্জি জানানো হয়েছে তার কাছেই শহিদ মিনার রয়েছে। এছাড়া ইডেন গার্ডেনের সামনেও বিস্তীর্ণ এলাকা রয়েছে। এন্টালির রামলীলা ময়দানেও সভা হতে পারে’।

 

শুক্রবার হাইকোর্ট জানায়, ‘রাস্তা আটকে সভা করা যাবে না। এ ব্যাপারে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে নওসাদ সিদ্দিকীর দলকে কর্মসূচি ঠিক করতে হবে’।ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে আগামী ২১ জানুয়ারি একটি সভা করতে চেয়ে আইএসএফ হেয়ার স্ট্রিট থানায় আবেদন জানিয়েছিল। তবে পুলিশ তা নাকচ করে দেয়। এরপরই নৌশাদ সিদ্দিকীরা কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। আইএসএফের সভার বিরোধিতা করে আদালতে রাজ্যের যুক্তি ছিল, “আইএসএফ যেদিন কর্মসূচি করতে চাইছে, সেদিন ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। একটি মিছিল যাওয়ার কথা রয়েছে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে দিয়ে। আগে থেকে অনুমতিও নেওয়া রয়েছে। আর সেই কারণেই পুলিশ আইএসএফকে ওই জায়গায় সভা করার অনুমতি দেয়নি।” গত বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নওশাদদের শর্তসাপেক্ষে সভা করার অনুমতি দিয়েছিলেন।

 

গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছিল, ‘৯টি শর্তে মেনে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করতে পারবে আইএসএফ’। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর নির্দেশ ছিল, -‘আইএসএফের সভায় এক হাজারের বেশি মানুষ জমায়েত করতে পারবেন না। সভার মঞ্চ লম্বা এবং চওড়ায় ২০ ফুটের বেশি করা যাবে না। আড়াইটে থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত সভা করা যাবে। সেখান থেকে কোনও আপত্তিকর বা উস্কানিমূলক মন্তব্য করা যাবে না। সভার কাজ পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যায় স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করতে হবে। ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে সভার মঞ্চ তৈরির কাজ করা যাবে না। পুলিশ এবং অয়োজকদের সভার ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে। রাজ্যকে সভাস্থল এবং আশপাশে পর্যাপ্ত পুলিশের বন্দোবস্ত করতে হবে। সভার কারণে যান চলাচলে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে, তা-ও দেখতে হবে, আইএসএফ ১৫টির বেশি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবে না’। তবে এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দেয়। রাজ্যের প্রস্তাবিত জায়গাতেই সভা করতে বলেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে আইএসএফের সভা নয়, জানালো প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ

আপডেট : ১৯ জানুয়ারী ২০২৪, শুক্রবার

মোল্লা জসিমউদ্দিন: চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই জোর ধাক্কা খেল আইএসএফ নেতৃত্ব। গত বৃহস্পতিবারের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করলো প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের দাবিতেই একপ্রকার মান্যতা দিল আদালত। আগামী ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে মঞ্চ তৈরি করে মাইক বেঁধে সভা করতে পারবে না আইএসএফ। এ ব্যাপারে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গল বেঞ্চের শর্তসাপেক্ষে দেওয়া সেই অনুমোদন খারিজের দাবিতে এদিন ডিভিশন বেঞ্চ এর দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। রাজ্যের যুক্তি, ‘ওই দিন ভিনটেজ কার র‍্যালি এবং এসইউসিআই-এর মিছিল রয়েছে। এছাড়াও কলকাতা পুলিশের ম্যারাথনের কর্মসূচি আছে। তাই রামলীলা ময়দানে অথবা রানি রাসমণি বা যে কোনও ইনডোর স্টেডিয়ামে সভা করুক আইএসফ’।

 

রাজ্যের আর্জি মেনে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ, ২১ জানুয়ারি ধর্ণতলায় আইএসএফের সভার অনুমতি খারিজ করে জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের ঠিক করে দেওয়া জায়গাতেই সভা করতে হবে আইএসএফকে’। এর পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘রাস্তা আটকে সভা করা যাবে না’। এ ব্যাপারে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে নওসাদ সিদ্দিকির দলকে কর্মসূচি ঠিক করার নির্দেশও দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন মামলার শুনানিতে রাজ্য সওয়াল-জবাবে জানায়, ‘দলীয় অনুষ্ঠান করার অধিকার সব দলের আছে, কিন্তু স্থান নির্বাচন তারা নিজেরা করতে পারে না। যে জায়গায় সভা করার আর্জি জানানো হয়েছে তার কাছেই শহিদ মিনার রয়েছে। এছাড়া ইডেন গার্ডেনের সামনেও বিস্তীর্ণ এলাকা রয়েছে। এন্টালির রামলীলা ময়দানেও সভা হতে পারে’।

 

শুক্রবার হাইকোর্ট জানায়, ‘রাস্তা আটকে সভা করা যাবে না। এ ব্যাপারে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে নওসাদ সিদ্দিকীর দলকে কর্মসূচি ঠিক করতে হবে’।ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে আগামী ২১ জানুয়ারি একটি সভা করতে চেয়ে আইএসএফ হেয়ার স্ট্রিট থানায় আবেদন জানিয়েছিল। তবে পুলিশ তা নাকচ করে দেয়। এরপরই নৌশাদ সিদ্দিকীরা কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। আইএসএফের সভার বিরোধিতা করে আদালতে রাজ্যের যুক্তি ছিল, “আইএসএফ যেদিন কর্মসূচি করতে চাইছে, সেদিন ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। একটি মিছিল যাওয়ার কথা রয়েছে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে দিয়ে। আগে থেকে অনুমতিও নেওয়া রয়েছে। আর সেই কারণেই পুলিশ আইএসএফকে ওই জায়গায় সভা করার অনুমতি দেয়নি।” গত বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নওশাদদের শর্তসাপেক্ষে সভা করার অনুমতি দিয়েছিলেন।

 

গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছিল, ‘৯টি শর্তে মেনে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করতে পারবে আইএসএফ’। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর নির্দেশ ছিল, -‘আইএসএফের সভায় এক হাজারের বেশি মানুষ জমায়েত করতে পারবেন না। সভার মঞ্চ লম্বা এবং চওড়ায় ২০ ফুটের বেশি করা যাবে না। আড়াইটে থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত সভা করা যাবে। সেখান থেকে কোনও আপত্তিকর বা উস্কানিমূলক মন্তব্য করা যাবে না। সভার কাজ পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যায় স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করতে হবে। ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে সভার মঞ্চ তৈরির কাজ করা যাবে না। পুলিশ এবং অয়োজকদের সভার ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে। রাজ্যকে সভাস্থল এবং আশপাশে পর্যাপ্ত পুলিশের বন্দোবস্ত করতে হবে। সভার কারণে যান চলাচলে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে, তা-ও দেখতে হবে, আইএসএফ ১৫টির বেশি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবে না’। তবে এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দেয়। রাজ্যের প্রস্তাবিত জায়গাতেই সভা করতে বলেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।