‘সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার’ -এবার বাংলাদেশকে জবাব বিদেশ মন্ত্রকের

- আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
- / 138
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা ও মোদি সরকারের জমানায় ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন- এই দুইয়ের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মুহাম্মদ শফিকুল আলম দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।
তাঁর কথায়, ‘আমরা পশ্চিমবঙ্গ ও ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করছি সংখ্যালঘু মুসলিমদের সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যেন প্রয়োজনীয় যথাযথ পদক্ষেপ করা হয়।’
এত স্পষ্টভাবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা দেওয়ার যে দাবি তোলা হয়েছে তাতে তীব্র গোঁসা হয়েছে ভারত সরকারের। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তুলনা করার প্রচেষ্টা অসৎ উদ্দেশ্য ছাড়া আর কিছুই নয়।
শুক্রবার এই প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের মন্তব্যের নিন্দা করে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তুলনা করার এই প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ অসৎ। বাংলাদেশের এই মন্তব্য হল–সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতন ও হত্যার পরও যেখানে অপরাধীরা মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই পরিস্থিতির সঙ্গে ভারতের তুলনা টানা একটি প্রচ্ছন্ন ও ছলনামূলক প্রচেষ্টা।
বাংলাদেশে বর্তমানে অপরাধীরা মুক্তভাবে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু ভারতে আইনশৃঙ্খলা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্যের জবাব দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের ঘটনাবলী নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর চলমান নির্যাতনের সঙ্গে ভারতের উদ্বেগের তুলনা করার চেষ্টা অসৎ উদ্দেশ্য ছাড়া কিছুই নয়।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও লিখেছে, অযাচিত মন্তব্য করার পরিবর্তে বাংলাদেশের উচিত নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় মনোনিবেশ করা।
উল্লেখ্য, মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুসলিম, খ্রিস্টান সহ দেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষকরে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে। মুসলিমদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করার চেষ্টা হচ্ছে।
মসজিদে, গির্জায় হামলা হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ, উগ্র ধর্মান্ধ হিন্দুত্ববাদীরা এই তাণ্ডব চালাচ্ছে আর তাতে পদ্ম-প্রশাসনের মদদ রয়েছে। কিন্তু, দেশের গেরুয়া শিবিরের নেতাদের সংখ্যালঘু নিগ্রহ নিয়ে কোনও হেলদোল নেই। বরং একের পর এক উস্কানি ভাষণ দিয়ে তাঁরা মুসলিম বিদ্বেষ আরও তীব্র করার চেষ্টা করছেন।
খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও সাম্প্রতিক নির্বাচনী প্রচারগুলিতে মুসলিম-বিদ্বেষী মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে। আর বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে বঙ্গ বিজেপি নেতারা রে রে করে ময়দানে নেমেছিলেন ও মুহাম্মদ ইউনূসকে অশালীন আক্রমণ করেছিলেন।
এমনকী প্রধানমন্ত্রী মোদিও ইউনূসের সঙ্গেে দখা করে সেদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছিলেন। সেই খবর ভারতের সংবাদপত্রগুলিতে ফলাও করে ছাপাও হয়েছিল। তার পালটা এবার ভারতের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে বাংলাদেশ মুখ খুলতেই হাটে হাড়ি ভেঙে গেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।