গাজার পাশে ইন্দোনেশিয়া, অস্থায়ী আশ্রয় পাবেন ১,০০০ শরণার্থী

- আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
- / 47
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: গাজার চলমান সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য ইন্দোনেশিয়া অস্থায়ী আশ্রয়দাতা হিসেবে এগিয়ে এসেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো ৮ এপ্রিল জাকার্তায় এক অনুষ্ঠানে জানান, প্রথম ধাপে প্রায় ১,০০০ ফিলিস্তিনিকে গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জাকার্তায় এক আলোচনাসভায় তিনি জানান, ইন্দোনেশিয়া যুদ্ধাহত, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং এতিম ফিলিস্তিনিদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
প্রাবোয়ো বলেন, ‘আমরা আহত, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, এতিম ফিলিস্তিনিদের উদ্ধার করতে প্রস্তুত।’ তিনি জানিয়েছেন, প্রথম দফায় প্রায় ১,০০০ ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেওয়া হতে পারে এবং তাদের পূর্ণ সুস্থতা ও গাজায় নিরাপদ পরিস্থিতি না আসা পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়াতেই রাখা হবে। এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফিলিস্তিন ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের নির্দেশ দিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিন প্রশ্নে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে গাজায় মানবিক সহায়তাও পাঠিয়েছে। প্রাবোয়ো আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার পক্ষে ইন্দোনেশিয়ার অঙ্গীকার আমাদের সরকারকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করেছে।’ যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, ‘এই পরিকল্পনা সহজ নয়।’
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেই প্রাবোয়ো বলেছিলেন, পরিস্থিতি সাপেক্ষে গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতেও প্রস্তুত ইন্দোনেশিয়া।
এর আগে গত মাসে হিব্রু গণমাধ্যমে এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইসরাইল ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, যার আওতায় ১০০ জন গাজাবাসীকে নির্মাণ খাতে কাজের জন্য ইন্দোনেশিয়ায় নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও উভয় দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, তথাপি এই প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের জন্য জেরুসালেম ও জাকার্তার মধ্যে একটি বিশেষ যোগাযোগ চ্যানেল খোলা হয়েছিল বলে জানা যায়।
এ দিকে গাজা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনা ছড়ায় যখন ফেব্রুয়ারির শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজাকে দখল করে তমধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরাদ হিসেবে গড়ে তোলার এবং ফিলিস্তিনিদের মিশর, জর্ডান বা অন্য কোনও দেশে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও আরব দেশগুলো এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। মিশর গাজা থেকে ৫ লাখ মানুষ উত্তর সিনাইয়ে স্থানান্তরের খবর অস্বীকার করে জানায়, ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ার যেকোনও চেষ্টাকে তারা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
যদিও এই পরিকল্পনা চরম ডানপন্থী ইসরাইলি মন্ত্রীরা স্বাগত জানান, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং আরব দেশগুলো একে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। তা সত্ত্বেও, ইসরাইলি সরকার এখনও ফিলিস্তিনিদের স্বেচ্ছা স্থানান্তরে উৎসাহিত করার পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে।