২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কর্মকর্তারা ধর্ম পরিবর্তন করলেও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যালঘু মর্যাদা দাবি করা যায় না, হাইকোর্ট

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 9

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মেডিক্যাল কলেজ, আর ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনরিটি এডুকেশনাল ইন্সটিটিউশন অ্যাক্ট তৈরি হয় ২০০৪ সালে। এই আইনের ২জি ধারা অনুযায়ী, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাকেই বলা হবে যে প্রতিষ্ঠানটি সংখ্যালঘুদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং সেটি পরিচালনা করেন সংখ্যালঘুরা।

কিন্তু ইলাহাবাদ হাইকোর্টে আসা এক মামলার আবেদনকারী মেডিক্যাল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টিরা ২০১৪ সালে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন থেকে তাঁরা ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানটির সংখ্যালঘু মর্যাদা সার্টিফিকেটও হাসিল করেন। কিন্তু আপত্তি ওঠে উত্তরপ্রদেশের মেডিক্যাল এডুকেশন ও ট্রেনিং বিভাগের পক্ষ থেকে। তারা কলেজে ফিজ নির্ধারণ করতে চায়।

কলেজ জানায়, তারা প্রাইভেট কলেজ হলেও সংখ্যালঘু স্ট্যাটাস প্রাপ্ত। সংখ্যালঘু তকমা নিয়ে শেষপর্যন্ত মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়ে দিল কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় প্রতিষ্ঠাতারা সংখ্যালঘু ছিলেন না। কেবলমাত্র পরবর্তীতে ধর্ম পরিবর্তন করে সংখ্যালঘু চরিত্র দাবি করা যায় না। তাছাড়া ইউপি-র নতুন আইনে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু চরিত্র দাবি করলে রাজ্যের এনওসি প্রয়োজন। সেটাও নেওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, সংবিধানের আর্টিকেল ৩০ অনুযায়ী দেশের সংখ্যালঘুরা নিজেদের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা ও পরিচালনা করার অধিকারী। এই নিয়ে একাধিক মামলা হয়েছে আদালতে। সংখ্যালঘু পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিছু সুবিধা পেয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে রাজ্য সরকারের আইনের সঙ্গে সাজুয্য রেখে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ ও পরিচালনা করা। যদিও এই অধিকার বজায় রাখা নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে মামলা চলছে।

সম্প্রতি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মূলত উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ ইউব্লিউসি সংরক্ষণের আইন পাস করেছে কিন্তু তার আওতা থেকে সংখ্যালঘু পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ১০ শতাংশ সংরক্ষণ কার্যকর হওয়ার কথা।

আলোচ্য মামলায় উল্লেখিত কলেজের কর্মকর্তারা পরবর্তীতে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে সংখ্যালঘু মর্যাদার দাবি করলেও রাজ্য সরকার সেটাকে মান্যতা দিতে চায়নি।

হাইকোর্টও সাফ জানিয়ে দিল প্রতিষ্ঠার সময় সংখ্যালঘুদের জন্য ও সংখ্যালঘুদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত শর্তগুলি অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে। রিট পিটিশন বাতিল করে বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী ও বিচারপতি ডি কে উপাধ্যায়ের বেঞ্চ জানিয়ে দিল রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ নির্ধারিত ফিজ অবশ্যই মেনে চলতে হবে আবেদনকারীর মেডিক্যাল ও বিডিএস কলেজে। সংখ্যালঘু মর্যাদা দাবির আবেদন খারিজ করা হল আরও এক যুক্তিতে যে ২০০৬ সালের ইউপি আইন অনুযায়ীও এই প্রতিষ্ঠানটি সংখ্যালঘু মর্যাদা পেতে পারে না।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কর্মকর্তারা ধর্ম পরিবর্তন করলেও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যালঘু মর্যাদা দাবি করা যায় না, হাইকোর্ট

আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মেডিক্যাল কলেজ, আর ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনরিটি এডুকেশনাল ইন্সটিটিউশন অ্যাক্ট তৈরি হয় ২০০৪ সালে। এই আইনের ২জি ধারা অনুযায়ী, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাকেই বলা হবে যে প্রতিষ্ঠানটি সংখ্যালঘুদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং সেটি পরিচালনা করেন সংখ্যালঘুরা।

কিন্তু ইলাহাবাদ হাইকোর্টে আসা এক মামলার আবেদনকারী মেডিক্যাল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টিরা ২০১৪ সালে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন থেকে তাঁরা ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানটির সংখ্যালঘু মর্যাদা সার্টিফিকেটও হাসিল করেন। কিন্তু আপত্তি ওঠে উত্তরপ্রদেশের মেডিক্যাল এডুকেশন ও ট্রেনিং বিভাগের পক্ষ থেকে। তারা কলেজে ফিজ নির্ধারণ করতে চায়।

কলেজ জানায়, তারা প্রাইভেট কলেজ হলেও সংখ্যালঘু স্ট্যাটাস প্রাপ্ত। সংখ্যালঘু তকমা নিয়ে শেষপর্যন্ত মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়ে দিল কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় প্রতিষ্ঠাতারা সংখ্যালঘু ছিলেন না। কেবলমাত্র পরবর্তীতে ধর্ম পরিবর্তন করে সংখ্যালঘু চরিত্র দাবি করা যায় না। তাছাড়া ইউপি-র নতুন আইনে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু চরিত্র দাবি করলে রাজ্যের এনওসি প্রয়োজন। সেটাও নেওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, সংবিধানের আর্টিকেল ৩০ অনুযায়ী দেশের সংখ্যালঘুরা নিজেদের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা ও পরিচালনা করার অধিকারী। এই নিয়ে একাধিক মামলা হয়েছে আদালতে। সংখ্যালঘু পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিছু সুবিধা পেয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে রাজ্য সরকারের আইনের সঙ্গে সাজুয্য রেখে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ ও পরিচালনা করা। যদিও এই অধিকার বজায় রাখা নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে মামলা চলছে।

সম্প্রতি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মূলত উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ ইউব্লিউসি সংরক্ষণের আইন পাস করেছে কিন্তু তার আওতা থেকে সংখ্যালঘু পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ১০ শতাংশ সংরক্ষণ কার্যকর হওয়ার কথা।

আলোচ্য মামলায় উল্লেখিত কলেজের কর্মকর্তারা পরবর্তীতে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে সংখ্যালঘু মর্যাদার দাবি করলেও রাজ্য সরকার সেটাকে মান্যতা দিতে চায়নি।

হাইকোর্টও সাফ জানিয়ে দিল প্রতিষ্ঠার সময় সংখ্যালঘুদের জন্য ও সংখ্যালঘুদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত শর্তগুলি অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে। রিট পিটিশন বাতিল করে বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী ও বিচারপতি ডি কে উপাধ্যায়ের বেঞ্চ জানিয়ে দিল রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ নির্ধারিত ফিজ অবশ্যই মেনে চলতে হবে আবেদনকারীর মেডিক্যাল ও বিডিএস কলেজে। সংখ্যালঘু মর্যাদা দাবির আবেদন খারিজ করা হল আরও এক যুক্তিতে যে ২০০৬ সালের ইউপি আইন অনুযায়ীও এই প্রতিষ্ঠানটি সংখ্যালঘু মর্যাদা পেতে পারে না।