মুর্শিদাবাদেও কি সন্দেশখালির ছক বিজেপির?

- আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার
- / 33
পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: গো-বলয়ের রাজ্যগুলির মতো বাংলাতেও তীব্র ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে চলেছে বিজেপি। সন্দেশখালিতেও তারা সেই চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর দেখা যায় বিজেপি সেখানে ধরাশায়ী। মুখ থুবড়ে পড়েছে সাম্প্রদায়িক, বিভাজনমূলক, বিদ্বেষ ও মেরুকরণের রাজনীতি দিয়ে তৈরি করা তাদের সেই সাধের ‘সাজানো চিত্রনাট্য’।
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে ব্যর্থ হলেও তারা নতুন আশা নিয়ে সেই ‘সন্দেশখালি ছক’ই প্রয়োগ করতে চলেছে মুর্শিদাবাদে? রাজ্যের শাসক শিবিরের বক্তব্য, উন্নয়নের প্রশ্নে টক্কর দিতে না পেরে বিজেপি শুধু সাম্প্রদায়িক ও বিভাজনের রাজনীতিকে হাতিয়ার করেই ভোটে ফায়দা তোলার চেষ্টা করে চলেছে। ফলে তারা ‘সাজানো চিত্রনাট্য’ তৈরি করে যাচ্ছে যাতে মেরুকরণের লাভের ফসল ঘরে তোলা যায়।
♦ আমরা একত্রে বাঁচব, লড়ব এবং জিতব: মমতা
কিন্তু, বাংলার শান্তিপ্রিয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তৃণমূলের কটাক্ষ, সন্দেশখালিতেও ফায়দা তুলতে ‘পরিকল্পিত চিত্রনাট্য’ তৈরি করা হয়েছিল, এখন মুর্শিদাবাদেও বিজেপি সেটা করার চেষ্টা করছে। শনিবারই ঘাসফুল শিবির অভিযোগ করেছে, মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনার সরেজমিনে পরিদর্শনে এসেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। তাদেরকে হিংসা কবলিত স্থানগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে পাঠিয়েছে কেন্দ্র।
কিন্তু, তাদের আসল উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাদের উদ্দেশ্য যেনতেনপ্রকারেণ বাংলার ভাবমূর্তিকে খাটো করা। বাংলার কুৎসা করা। আর সেই কাজ করতেই, সাজানো চিত্রনাট্য তৈরি করতেই মহিলা কমিশনের সদস্যরা সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান, সুতির সব জায়গা ঘুরে সেখানকার মহিলাদের দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিচ্ছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, এই ধরনের সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য পরে সেখানে নিজেদের পছন্দমতো মনগড়া গল্প লিখে নিতে পারবেন এই মহিলা কমিশনের সদস্যরা, যাতে বাংলার বিরুদ্ধে কুৎসাকে আরও জোরদার করা যায়।
বাংলার বিরুদ্ধে মনগড়া কাহিনি লেখা যায়। তৃণমূলের আরও অভিযোগ, জাতীয় মহিলা কমিশনকে আসলে বাংলায় রাজনৈতিক অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে পাঠিয়েছে বিজেপি। সেই লক্ষ্যেই তারা কাজ করে চলেছে। তৃণমূলের প্রশ্ন, একমাত্র বাংলা ছাড়া এই মহিলা কমিশনকে কেন অন্য কোনও রাজ্যে কেন দেখা যায় না? বিশেষ করে যেসব রাজ্যে ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার রয়েছে সেখানে? কেন মণিপুর জ্বললেও সেখানে জাতীয় মহিলা কমিশন যায় না? সন্দেশখালি প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তৃণমূল জানিয়েছে, বিজেপি একই ধরনের কাজ সন্দেশখালির ক্ষেত্রেও করেছিল।
সেখানেও সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেই ‘মডেল’ই এখন অ্যাপ্লাই করা হচ্ছে মুর্শিদাবাদে। তৃণমূলের কটাক্ষ, এইসব অপকর্ম, কুৎসা সাফল্যের সঙ্গে করতে পারার জন্যই তো জাতীয় মহিলা কমিশনের নেত্রী রেখা শর্মাকে বিজেপি রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে। তবে বাংলার মানুষ সব জানে, বোঝে। সন্দেশখালিতে যেমন ‘সাজানো চিত্রনাট্য’ দিয়েও গেরুয়া শিবির মেরুকরণের রাজনীতি করতে ব্যর্থ হয়েছে, মুর্শিদাবাদেও সেটাই হবে।
মুর্শিদাবাদের হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবাই বিজেপির এই বিভেদের, বিভাজনের, সাম্প্রদায়িকতার, মেরুকরণের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করবে। রাজনৈতিক মহলেরও বক্তব্য, সন্দেশখালিতে মহিলাদের নাকি রাতের অন্ধকারে পার্টি অফিসে ডাকা হত পিঠে বানানোর জন্য। পরে একাধিক স্ট্রিং অপারেশনে প্রমাণ হয়ে যায় সবটাই বিজেপির সাজানো ঘটনা। ফলে মুখ থুবড়ে পড়ে বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির তাস। মুর্শিদাবাদেও তার ব্যতিক্রম হবে না।