১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রিপোর্ট বিজ্ঞানীদের

গাজায় ছয়টি হিরোশিমা বোমার সমতুল্য বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ইসরাইল 

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার
  • / 48

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি যুদ্ধবিমানের বোমাবর্ষণের মাত্রা হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে প্রায় ছয়গুণ বেশি শক্তিশালী, এমনটাই দাবি করেছে সায়েন্টিস্ট ফর গ্লোবাল সিকুইরিটির-এর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত গাজার উপর প্রায় ৭০,০০০ টন বিস্ফোরক ফেলেছে ইসরাইল, যা পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এই অঞ্চলের জন্য এক বিধ্বংসী আঘাত। ব্র্যাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস স্টাডিজের এমেরিটাস অধ্যাপক পল রজার্স ব্রিটিশ সাংবাদিক ওয়েন জোনস-কে বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এই ধরণের ধ্বংসযজ্ঞ আমরা আর কখনো দেখিনি।’

রজার্স বলেন, তশীতল যুদ্ধের সময় আমরা বলতাম, এক কিলোটন মানে এক হাজার টন টিএনটি। এখন যে ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহৃত হচ্ছে, তা টিএনটির তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী।দ তিনি বলেন, এই ৭০,০০০ টন বিস্ফোরক ব্যবহার প্রায় ছয়টি হিরোশিমা বোমার সমান ধ্বংসক্ষমতা তৈরি করেছে। রজার্স আরও বলেন,তমানুষ আসলে বুঝতেই পারছে না, এই ধ্বংস কতটা তীব্র এবং কতটা নিয়মিতভাবে ঘটেছে। পশ্চিমা গণমাধ্যমে এর খুব সামান্যই প্রচার হয়েছে, তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যের চ্যানেলগুলো অনেক বেশি দেখাচ্ছে। এর ফলে গোটা আরব বিশ্বে যে ক্ষোভ, এবং বলতে হবে ঘৃণা, সৃষ্টি হয়েছে তা যেন স্পর্শ করবার মতো।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর, যুদ্ধ শুরুর ২৬ দিন পর ইউরো মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানায়, ইসরাইলি বাহিনী তখন পর্যন্ত গাজায় ২৫,০০০ টন বোমা ফেলেছে ১২,০০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে। ওই সময় সায়েন্টিস্ট ফর গ্লোবাল সিকুইরিটি বলেছিল, এর মানে গড়ে প্রতি লক্ষ্যবস্তুর উপর ২ টনের বেশি বোমা ফেলা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘এই তারিখ পর্যন্ত গাজা যে পরিমাণ বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে, তা দুইটি পারমাণবিক বোমার সমতুল্য। অথচ গাজার এলাকা মাত্র ৩৬০ বর্গ কিলোমিটার, যেখানে ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ছিল ৯০০ বর্গ কিলোমিটার।’

ইসরাইলের ১৭ মাসব্যাপী সামরিক অভিযান গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংস হয়ে গেছে। বসতবাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল, এমনকি শরণার্থী শিবিরও একের পর এক বোমার লক্ষ্য হয়েছে। এই লাগাতার আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন ৫১,০০০-এরও বেশি মানুষ। পুরো উপত্যকা এখন ধ্বংসপ্রাপ্ত, জীবনধারণের ন্যূনতম শর্তগুলোরও অভাব। মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজার অবস্থাকে তদুর্বিষহ ও ও অস্থিতিশীলক্ষ্ম পরিস্থিতি বলে বর্ণনা করেছে, যেখানে জীবনধারণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রিপোর্ট বিজ্ঞানীদের

গাজায় ছয়টি হিরোশিমা বোমার সমতুল্য বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ইসরাইল 

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি যুদ্ধবিমানের বোমাবর্ষণের মাত্রা হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে প্রায় ছয়গুণ বেশি শক্তিশালী, এমনটাই দাবি করেছে সায়েন্টিস্ট ফর গ্লোবাল সিকুইরিটির-এর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত গাজার উপর প্রায় ৭০,০০০ টন বিস্ফোরক ফেলেছে ইসরাইল, যা পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এই অঞ্চলের জন্য এক বিধ্বংসী আঘাত। ব্র্যাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস স্টাডিজের এমেরিটাস অধ্যাপক পল রজার্স ব্রিটিশ সাংবাদিক ওয়েন জোনস-কে বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এই ধরণের ধ্বংসযজ্ঞ আমরা আর কখনো দেখিনি।’

রজার্স বলেন, তশীতল যুদ্ধের সময় আমরা বলতাম, এক কিলোটন মানে এক হাজার টন টিএনটি। এখন যে ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহৃত হচ্ছে, তা টিএনটির তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী।দ তিনি বলেন, এই ৭০,০০০ টন বিস্ফোরক ব্যবহার প্রায় ছয়টি হিরোশিমা বোমার সমান ধ্বংসক্ষমতা তৈরি করেছে। রজার্স আরও বলেন,তমানুষ আসলে বুঝতেই পারছে না, এই ধ্বংস কতটা তীব্র এবং কতটা নিয়মিতভাবে ঘটেছে। পশ্চিমা গণমাধ্যমে এর খুব সামান্যই প্রচার হয়েছে, তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যের চ্যানেলগুলো অনেক বেশি দেখাচ্ছে। এর ফলে গোটা আরব বিশ্বে যে ক্ষোভ, এবং বলতে হবে ঘৃণা, সৃষ্টি হয়েছে তা যেন স্পর্শ করবার মতো।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর, যুদ্ধ শুরুর ২৬ দিন পর ইউরো মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানায়, ইসরাইলি বাহিনী তখন পর্যন্ত গাজায় ২৫,০০০ টন বোমা ফেলেছে ১২,০০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে। ওই সময় সায়েন্টিস্ট ফর গ্লোবাল সিকুইরিটি বলেছিল, এর মানে গড়ে প্রতি লক্ষ্যবস্তুর উপর ২ টনের বেশি বোমা ফেলা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘এই তারিখ পর্যন্ত গাজা যে পরিমাণ বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে, তা দুইটি পারমাণবিক বোমার সমতুল্য। অথচ গাজার এলাকা মাত্র ৩৬০ বর্গ কিলোমিটার, যেখানে ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ছিল ৯০০ বর্গ কিলোমিটার।’

ইসরাইলের ১৭ মাসব্যাপী সামরিক অভিযান গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংস হয়ে গেছে। বসতবাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল, এমনকি শরণার্থী শিবিরও একের পর এক বোমার লক্ষ্য হয়েছে। এই লাগাতার আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন ৫১,০০০-এরও বেশি মানুষ। পুরো উপত্যকা এখন ধ্বংসপ্রাপ্ত, জীবনধারণের ন্যূনতম শর্তগুলোরও অভাব। মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজার অবস্থাকে তদুর্বিষহ ও ও অস্থিতিশীলক্ষ্ম পরিস্থিতি বলে বর্ণনা করেছে, যেখানে জীবনধারণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।