সিবিআইয়ের তদন্তকারি অফিসারদের সম্পত্তির হিসাব চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়!

- আপডেট : ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, বৃহস্পতিবার
- / 10
পারিজাত মোল্লা: কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের ভুমিকায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার প্রাথমিক নিয়োগে সিবিআই-ইডি এর তদন্তের শ্লথ গতি নিয়ে বলেন, ‘দরকার হলে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারদের সম্পত্তির হিসাব চাইব। তাঁরা যদি সতর্ক হয়ে কাজ না করেন তা হলে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখব।’
অতীতে বারবার দেখা গিয়েছে সর্ষের মধ্যেই ভূত। সিবিআই-ইডি অফিসাররাও সন্দেহের ঊর্ধ্বে থাকেন না। তাঁদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যেমন সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তা রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সিরই অধিকর্তা।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এদিন সম্ভবত সেই সন্দেহই প্রকাশ করে হুঁশিয়ার করতে চেয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআই প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের আওতায় রয়েছে। সেই কারণেই হয়তো সিবিআইয়ের কার্যকলাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লেখার কথা জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে বৃহস্পতিবার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। আগে দেখা যেত, এ ধরনের মামলার শুনানি দেড়-দুই মাস অন্তর হত। কিন্তু বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ঘনঘন শুনানি চালিয়ে তদন্তের গতি ক্রমশ বৃদ্ধি ঘটাচ্ছেন।
এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সিকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘সিবিআইয়ের জন্য খুব খারাপ সময় আসছে। এখনও যদি সিবিআই ঠিকমতো কাজ না করে তাহলে তাদের জন্য খুব খারাপ দিন অপেক্ষা করছে’।
জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের দুর্নীতি কাণ্ডের ব্যাপারে ১০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট পেশ করবে সিবিআই। বৃহস্পতিবার বিচারপতি নির্দেশ দিলেন, সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সোমনাথ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। তদন্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে এদিন আরও কড়া ভাষায় ভর্ত্সনা করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে সিবিআইকে তাঁর নির্দেশ, সোমনাথ বিশ্বাসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে’।
সিবিআই অফিসাররা যে সবাই সৎ নন, বা তাঁদের ভূমিকা যে কাচের মতো স্বচ্ছ নয় সেই প্রমাণ আগেও মিলেছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সেটাই যেন আরও একবার বেরিয়ে পড়ল। আদালতের পর্যবেক্ষণ, তদন্তকারি অফিসার-সহ গোটা টিমের গয়ংগচ্ছ মনোভাবের জন্যই ২০১৬-র টেট দুর্নীতি মামলায় এত সময় লাগছে। নইলে যাঁদের ধরে তদন্ত করার কথা তাঁরা সবাই জেলে রয়েছেন। সিবিআই চাইলেই পারে সবটা খুঁজে বের করতে। এর আগে বাংলার ইতিহাসে বেশ কয়েক হাই প্রোফাইল মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তকারি অফিসার ছিলেন পার্থসারথি বসু।
২০০৮ সালে পার্থসারথিকে উল্টোডাঙার ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখা। উদ্ধার হয়েছিল নগদ ১৪ লক্ষ টাকা। সোমনাথ বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ যেন সেই স্মৃতিকেই উস্কে দিচ্ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।