১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংসদে অচলাবস্থার মধ্যে কুয়েত সরকারের পদত্যাগ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৬ এপ্রিল ২০২২, বুধবার
  • / 9

পুবের কলম প্রতিবেদক: কুয়েতের ক্ষমতাসীন আল-সাবাহ পরিবারের সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ। ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে দেশটির নির্বাচিত সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে বিরোধী আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা চলছে।

 

দেশটির বেশ কয়েকজন বিরোধী সংসদ সদস্য কোভিড-১৯ মহামারি, দুর্নীতি মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। আগামী বুধবার দেশটির সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের সময় নির্ধারিত রয়েছে। সংসদে বিরোধীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহ নেতৃত্বাধীন সরকার তৃতীয়বারের মতো পদত্যাগ করল।

 

গত বছরের জানুয়ারিতে কুয়েতের তৎকালীন সরকারের পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহ নেতৃত্বাধীন সরকার একই বছরের মার্চে গঠন করা হয়। সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের এই বিরোধে সংসদে আইন প্রণয়নের কাজ থমকে যায়। এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারি এবং তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় দেশটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অর্থনীতির চাকা সচল করার লক্ষ্যে সংসদে বাজেট পাস এবং বিদেশি ঋণ নিতেও বাধার সম্মুখীন হয় সরকার।

 

কুয়েতে মন্ত্রিসভার সঙ্গে সংসদের অচলাবস্থা কয়েক দশক ধরে চলে আসছে। যা বিভিন্ন সময়ে দেশটির সরকারের রদবদল এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে সমাধান করা হয়েছে। তবে এতে বিনিয়োগ ও সংস্কার কাজ ব্যাপক বাধাগ্রস্ত হয়। দেশটির সংসদের বিরোধী আইনপ্রণেতারা ২০১৯ সালের শেষের দিকে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহকে দুর্নীতি, করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। একই সঙ্গে গত বছরের মার্চে সংসদে পাসকৃত একটি প্রস্তাবের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

 

ওই প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনো ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ২০২২ সালের শেষের দিক পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। শেখ সাবাহকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের সাধারণ ক্ষমার দাবি জানানো বিরোধীদের সঙ্গে সংসদের এই অচলাবস্থা কাটাতে সম্প্রতি দেশটির সরকার আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে।

 

কুয়েতে রাজনৈতিক দলের অনুমতি না থাকলেও দেশটির সংসদের ক্ষমতা অন্যান্য উপসাগরীয় রাজতন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি। দেশটির সংসদের আইন পাস ও আটকে দেওয়ার ক্ষমতা, মন্ত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ডাক দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। কুয়েতের রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাসের আল-আবদালি বলেছেন, ক্ষমতাসীন পরিবারের কিছু সদস্য তাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সংসদকে ব্যবহার করেছে। কারণ তারা ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে। যে কারণে বৈরীতা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রয়টার্সকে তিনি বলেন , কুয়েতের ক্ষমতাসীন পরিবারে প্রজন্মের লড়াই চলছে। সরকারের পদত্যাগ গ্রহণ এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সংসদে অচলাবস্থার মধ্যে কুয়েত সরকারের পদত্যাগ

আপডেট : ৬ এপ্রিল ২০২২, বুধবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: কুয়েতের ক্ষমতাসীন আল-সাবাহ পরিবারের সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ। ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে দেশটির নির্বাচিত সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে বিরোধী আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা চলছে।

 

দেশটির বেশ কয়েকজন বিরোধী সংসদ সদস্য কোভিড-১৯ মহামারি, দুর্নীতি মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। আগামী বুধবার দেশটির সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের সময় নির্ধারিত রয়েছে। সংসদে বিরোধীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহ নেতৃত্বাধীন সরকার তৃতীয়বারের মতো পদত্যাগ করল।

 

গত বছরের জানুয়ারিতে কুয়েতের তৎকালীন সরকারের পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহ নেতৃত্বাধীন সরকার একই বছরের মার্চে গঠন করা হয়। সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের এই বিরোধে সংসদে আইন প্রণয়নের কাজ থমকে যায়। এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারি এবং তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় দেশটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অর্থনীতির চাকা সচল করার লক্ষ্যে সংসদে বাজেট পাস এবং বিদেশি ঋণ নিতেও বাধার সম্মুখীন হয় সরকার।

 

কুয়েতে মন্ত্রিসভার সঙ্গে সংসদের অচলাবস্থা কয়েক দশক ধরে চলে আসছে। যা বিভিন্ন সময়ে দেশটির সরকারের রদবদল এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে সমাধান করা হয়েছে। তবে এতে বিনিয়োগ ও সংস্কার কাজ ব্যাপক বাধাগ্রস্ত হয়। দেশটির সংসদের বিরোধী আইনপ্রণেতারা ২০১৯ সালের শেষের দিকে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহকে দুর্নীতি, করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। একই সঙ্গে গত বছরের মার্চে সংসদে পাসকৃত একটি প্রস্তাবের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

 

ওই প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনো ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ২০২২ সালের শেষের দিক পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। শেখ সাবাহকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের সাধারণ ক্ষমার দাবি জানানো বিরোধীদের সঙ্গে সংসদের এই অচলাবস্থা কাটাতে সম্প্রতি দেশটির সরকার আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে।

 

কুয়েতে রাজনৈতিক দলের অনুমতি না থাকলেও দেশটির সংসদের ক্ষমতা অন্যান্য উপসাগরীয় রাজতন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি। দেশটির সংসদের আইন পাস ও আটকে দেওয়ার ক্ষমতা, মন্ত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ডাক দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। কুয়েতের রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাসের আল-আবদালি বলেছেন, ক্ষমতাসীন পরিবারের কিছু সদস্য তাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সংসদকে ব্যবহার করেছে। কারণ তারা ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে। যে কারণে বৈরীতা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রয়টার্সকে তিনি বলেন , কুয়েতের ক্ষমতাসীন পরিবারে প্রজন্মের লড়াই চলছে। সরকারের পদত্যাগ গ্রহণ এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।