১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদ ও চৈত্র সেলে লাভের আশায় মেটিয়াবুরুজের পোশাক হাব

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৭ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 4

আবদুল ওদুদ:  করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে পুরোপুরি স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে জনজীবন। অফিস, আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য সব কিছু স্বাভাবিক হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা লাভের আশায় মুখ দেখতে শুরু করেছেন। কলকাতার মেটিয়াবুরুজ থেকে হাওড়ার অঙ্কুরহাটি,উনসানি,বাঁকড়া এলাকায় বিপুল পরিমানে পোশাক শিল্পে সঙ্গে যুক্ত কারিগর এবং ওস্তাগাররা রয়েছেন। সামনে রয়েছে মুসলিমদের অন্যতম খুশির উৎসব ঈদ-উল-ফিতর । আর দিন কয়েক পর বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িত চৈত্র সেল শুরু হবে। ঈদ-উল-ফিতর এবং চৈত্র সেলকে সামনে রেখে মেটিয়াবুরুজ এবং হাওড়ার ঐতিহ্যবাহী মঙ্গলার হাট ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন। তাঁরা ভাবছেন এবার হয়তো মন্দা পরিস্থিতি কাটিয়ে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখতে পারবেন।

কিন্তু বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে খুব বেশি যে বেচাকেনা হবে এমনটা আশা করছেন না বহু ব্যবসায়ী। ফাল্গুন মাস শেষ পর্যায়ে আর ক’দিন পরেই শুরু হয়ে যাবে চৈত্র সেল। আর চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৭ দিন পরেই পবিত্র রমযান মাস। রমযানের শেষে পালিত হয় ঈদ-উল-ফিতর। সব মিলিয়ে দেড় মাসেরও কম সময় রয়েছে। কিন্তু বিক্রিবাটা বাড়েনি মেটিয়াবুরুজে। এশিয়ার বৃহৎ পোশাক শিল্পের হাবে সেই আগের মতো নেই কর্ম ব্যস্ততা। অলিতে গলিতে নেই মেশিনের ঘর ঘর শব্দ।

মেটিয়াবুরুজের রাস্তায় নেই আগের মতো ঠেলাওয়ালাদের চিৎকার। বর্তমানে অনেকটাই স্তব্ধ এশিয়া মহাদেশের অন্যতম গারমেন্টস শিল্পের হাব মেটিয়াবুরুজ। ফলে বে-রোজগার বাড়ছে। কাটিং মিস্ত্রি, আয়রন ম্যান, ঠেলাওয়ালা এবং দর্জিরাও কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে এবারও যদি ব্যবসায় লাভের মুখ না দেখতে পান তাহলে হয়তো আরও পিছিয়ে যাবে মেটিয়াবুরুজের পোশাক শিল্প।

বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মেটিয়াবুরুজের প্রখ্যাত বস্ত্র ব্যবসায়ী এসটি আলির কর্ণধার সেখ  নুরনবি বলেন, মেটিয়াবুরুজের ব্যবসার যে ঐতিহ্য তা আগের মতো নেই। সেই অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সম্প্রতি কয়েকদিনের মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে বিপুল সাড়া মিলেছিল। কিন্তু এ’ন আবার সেই আগের মতোই রয়েছে। চৈত্র সেল এবং ঈদ-উল-ফিতরের উপলক্ষ্যে কেমন বেচা-কেনা হবে বোঝা যাচ্ছে না। তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, করোনা এবং লকডাউন পরিস্থিতি কাটিয়ে অনেকটাই স্বাভাবিক। কাজেই আমরা আশা করছি এ বছর ভালো বেচা-কেনা হবে। জেলা থেকে ক্রেতারা মেটিয়াবুরুজ মুখী হবেন।

হাওড়ার অঙ্কুরহাটির লালি গারমেন্টের কর্ণধার সে’ গিয়াসউদ্দিন,  অপর এক গারমেন্টের কর্ণধার আনসার আলি খান বলেন, পরিস্থিতি যাই হোক আমরা আশা করছি এবছর বেচা-কেনা ভালো হবে। দেশের বাইরে এ’ন থেকেই অর্ডার আসছে। বাংলাদেশ ত্রিপুরা, অসমে যেতে শুরু করেছে, কিন্তু পশ্চিমবাংলায় তেমনভাবে বেচা-কেনা শুরু হয়নি। আশা করছি বাংলায় আবার সেই আগের মতো ব্যবসার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

মেটিয়াবুরুজের আরও এক ব্যবসায়ী ইসলামউদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যেই রাজ্যের বাইরে পোশাক যেতে শুরু করেছে। এবছর তাঁদের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণ হবে। বাংলার পোশাক শিল্প এবং মেটিয়াবুরুজের রেডিমেড পোশাক বিক্রেতারা আবারও লাভের মুখ  দেখবেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ঈদ ও চৈত্র সেলে লাভের আশায় মেটিয়াবুরুজের পোশাক হাব

আপডেট : ৭ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার

আবদুল ওদুদ:  করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে পুরোপুরি স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে জনজীবন। অফিস, আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য সব কিছু স্বাভাবিক হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা লাভের আশায় মুখ দেখতে শুরু করেছেন। কলকাতার মেটিয়াবুরুজ থেকে হাওড়ার অঙ্কুরহাটি,উনসানি,বাঁকড়া এলাকায় বিপুল পরিমানে পোশাক শিল্পে সঙ্গে যুক্ত কারিগর এবং ওস্তাগাররা রয়েছেন। সামনে রয়েছে মুসলিমদের অন্যতম খুশির উৎসব ঈদ-উল-ফিতর । আর দিন কয়েক পর বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িত চৈত্র সেল শুরু হবে। ঈদ-উল-ফিতর এবং চৈত্র সেলকে সামনে রেখে মেটিয়াবুরুজ এবং হাওড়ার ঐতিহ্যবাহী মঙ্গলার হাট ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন। তাঁরা ভাবছেন এবার হয়তো মন্দা পরিস্থিতি কাটিয়ে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখতে পারবেন।

কিন্তু বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে খুব বেশি যে বেচাকেনা হবে এমনটা আশা করছেন না বহু ব্যবসায়ী। ফাল্গুন মাস শেষ পর্যায়ে আর ক’দিন পরেই শুরু হয়ে যাবে চৈত্র সেল। আর চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৭ দিন পরেই পবিত্র রমযান মাস। রমযানের শেষে পালিত হয় ঈদ-উল-ফিতর। সব মিলিয়ে দেড় মাসেরও কম সময় রয়েছে। কিন্তু বিক্রিবাটা বাড়েনি মেটিয়াবুরুজে। এশিয়ার বৃহৎ পোশাক শিল্পের হাবে সেই আগের মতো নেই কর্ম ব্যস্ততা। অলিতে গলিতে নেই মেশিনের ঘর ঘর শব্দ।

মেটিয়াবুরুজের রাস্তায় নেই আগের মতো ঠেলাওয়ালাদের চিৎকার। বর্তমানে অনেকটাই স্তব্ধ এশিয়া মহাদেশের অন্যতম গারমেন্টস শিল্পের হাব মেটিয়াবুরুজ। ফলে বে-রোজগার বাড়ছে। কাটিং মিস্ত্রি, আয়রন ম্যান, ঠেলাওয়ালা এবং দর্জিরাও কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে এবারও যদি ব্যবসায় লাভের মুখ না দেখতে পান তাহলে হয়তো আরও পিছিয়ে যাবে মেটিয়াবুরুজের পোশাক শিল্প।

বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মেটিয়াবুরুজের প্রখ্যাত বস্ত্র ব্যবসায়ী এসটি আলির কর্ণধার সেখ  নুরনবি বলেন, মেটিয়াবুরুজের ব্যবসার যে ঐতিহ্য তা আগের মতো নেই। সেই অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সম্প্রতি কয়েকদিনের মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে বিপুল সাড়া মিলেছিল। কিন্তু এ’ন আবার সেই আগের মতোই রয়েছে। চৈত্র সেল এবং ঈদ-উল-ফিতরের উপলক্ষ্যে কেমন বেচা-কেনা হবে বোঝা যাচ্ছে না। তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, করোনা এবং লকডাউন পরিস্থিতি কাটিয়ে অনেকটাই স্বাভাবিক। কাজেই আমরা আশা করছি এ বছর ভালো বেচা-কেনা হবে। জেলা থেকে ক্রেতারা মেটিয়াবুরুজ মুখী হবেন।

হাওড়ার অঙ্কুরহাটির লালি গারমেন্টের কর্ণধার সে’ গিয়াসউদ্দিন,  অপর এক গারমেন্টের কর্ণধার আনসার আলি খান বলেন, পরিস্থিতি যাই হোক আমরা আশা করছি এবছর বেচা-কেনা ভালো হবে। দেশের বাইরে এ’ন থেকেই অর্ডার আসছে। বাংলাদেশ ত্রিপুরা, অসমে যেতে শুরু করেছে, কিন্তু পশ্চিমবাংলায় তেমনভাবে বেচা-কেনা শুরু হয়নি। আশা করছি বাংলায় আবার সেই আগের মতো ব্যবসার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

মেটিয়াবুরুজের আরও এক ব্যবসায়ী ইসলামউদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যেই রাজ্যের বাইরে পোশাক যেতে শুরু করেছে। এবছর তাঁদের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণ হবে। বাংলার পোশাক শিল্প এবং মেটিয়াবুরুজের রেডিমেড পোশাক বিক্রেতারা আবারও লাভের মুখ  দেখবেন।