Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the login-customizer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u419551674/domains/puberkalom.in/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
বাজেটে সংখ্যালঘু বরাদ্দ ৫৭ শতাংশ কমল কেন? কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ অভিষেকের | Puber Kalom
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাজেটে সংখ্যালঘু বরাদ্দ ৫৭ শতাংশ কমল কেন? কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ অভিষেকের

আবুল খায়ের
  • আপডেট : ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শনিবার
  • / 15

নয়াদিল্লি: সংসদে শুক্রবার বাজেট বত্তৃ«তায় কেন্দ্রকে চড়া সুরে বিঁধলেন তৃণমূলের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন কেন্দ্রকে কার্যত ত্রিমুখী আক্রমণ শানান অভিষেক। প্রশ্ন তোলেন, বাজেটে সংখ্যালঘু খাতে বরাদ্দ ৫৭ শতাংশ কমানো হল কেন?
এ দিন জিও নেটওয়ার্ক, রামায়ণ ও থ্রি ইডিয়েট— এই তিন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কেন্দ্রকে ত্রিফলা আক্রমণ করেন অভিষেক। বত্তৃতার শুরুতেই রামায়ণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, ‘এই বাজেট দেখে আমার রামায়ণের কথা মনে পড়ছে। রামায়ণে মারীচ যেমন সোনার হরিণ দেখিয়ে মা সীতাকে পথভ্রষ্ট করেছিল, এখানেও সরকার তেমনই করেছে। শুধু মরীচিকা! এই সরকারের আমলে রাবণ হয়ে হাজির হয়েছে ক্রোনি ক্যাপিটালিস্টরা (সুবিধাভোগী পুঁজিপতি)।’
হিন্দি সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়েট’-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, ‘‘বছরে দু-কোটি চাকরির কথা বলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু বেকারত্ব গত ৪৫ বছরের সর্বোচ্চ সীমা ছাড়িয়েছে। এই বাজেট হল ঘুরিয়ে জনগণের থেকে টাকা আদায় করার বাজেট। মধ্যবিত্তকে যে কর ছাড়ের কথা বলা হয়েছে তা ভ্রান্তিকর। ১২ লাখ পর্যন্ত কর ছাড়ের কথা বলা হলেও ৯৮,০০০ টাকা জিএসটিতে দিতে হবে মধ্যবিত্তকে। এ ছাড়াও অনেক সারচার্জ ও ট্যাক্স রয়েছে। এই বাজেট আমাকে হিন্দি সিনেমার ৩ ইডিয়টসের কথা মনে করিয়েছে। র‌্যাঞ্চোর কথা মনে করাচ্ছে। র‌্যাঞ্চো সেখানে প্রকৃত শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করেছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হিসেবে ‘ভাইরাস’ (সিনেমার চরিত্র) অনেক ঘোষণা করেছিলেন। দেশের মানুষ রোজগারে ট্যাক্স দেয়, আবার খরচেও ট্যাক্স দেয়।’’
রিলায়্যান্সের জিও টেলি সংযোগের শুরুর কথা মনে করিয়ে দিয়ে এই তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘জিও-র ফ্রি ডেটা প্ল্যান এক সময় কোটি কোটি গ্রাহককে প্রলুব্ধ করেছিল। এখন সেই জিও-ই বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার তুলে দিয়েছে। ফলে মোবাইলের সংযোগ টিকিয়ে রাখাটাই গ্রাহকদের অনেকের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সরকারও নানা ফ¨ি করে মানুষকে প্রলুব্ধ করেছে। তার পর জাঁতাকলে পিষছে। বাজেটে বার্ষিক ১২ লাখ টাকা আয় পর্যন্ত করে ছাড় দেওয়া জিও-র ওই প্ল্যানের মতো। এক দিকে ছাড় দিয়ে অন্য দিক দিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে।’
বাজেটে বাংলাকে বঞ্চনা করার অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, নির্মলা সীতারামন যে বাজেট পেশ করেছেন, সেটা বাংলা বিরোধী বাজেট। সুপরিকল্পিতভাবে বাংলার উন্নয়নযজ্ঞকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা। বিহারে শুধু বিজেপি সরকারে আছে বলে বিহার প্যাকেজ পাচ্ছে। আর বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় নেই বলে বাংলা পাচ্ছে বঞ্চনা। দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর নামে ‘হাফ ফেডারেলিজম’ চলছে। বিহারে বিজেপির ১২ জন সাংসদ আছেন। বাংলাতেও বিজেপির ১২ জন সাংসদ। কিন্তু বিহারে বিজেপি শাসন ক্ষমতায়। তাই বিহার বোনাস পাচ্ছে। আর বাংলায় যেহেতু বিজেপি বিরোধী আসনে, তাই বাংলার জন্য বঞ্চনা। এটাই ‘হাফ ফেডারেলিজম’। বাংলার জন্য উল্লেখযোগ্য একটিও আর্থিক প্যাকেজ বা বড় প্রকল্প ঘোষণা করা হয়নি। উলটে বাংলার বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা পাওনা। সেই বকেয়াও মেটানো হচ্ছে না। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আর্থিক অবরোধ। সুপরিকল্পিতভাবে বাংলার উন্নয়ন এবং আর্থিক বৃদ্ধি রুখে দেওয়া হচ্ছে। শুধু ১০০ দিনের কাজে ৭ হাজার কোটির বেশি বকেয়া রাজ্যের। বাংলার ৫৯ লক্ষ শ্রমিক বঞ্চিত। আবাস যোজনায় ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া। এতে ১৩ লক্ষ পরিবার বঞ্চিত। তবে বাংলা মাথা নত করবে না। বাংলা নিজের শক্তিতে উন্নতি করবে। অভিষেকের কটাক্ষ, কন্দ্রের মোদি সরকার ‘রবিনহুডের বিপরীত মডেল’। রবিনহুড বড়লোকের থেকে নিয়ে গরিবদের বিলিয়ে দিতেন। এই সরকার তার ঠিক উলটো। এরা গরিবের থেকে কেড়ে নিয়ে বড়লোকদের আরও বড়লোক করছে। বাজেটে সংখ্যালঘু খাতে কেন বরাদ্দ কমানো হয়েছে তা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ২০২৫ সালে ৫ ট্রিলিয়ন অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছিল মোদি সরকার। তাহলে বিজেপি সরকার বাজেটে সংখ্যালঘু বিষয়ক বরাদ্দ কেন ৫৭ শতাংশ কমিয়েছে?

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাজেটে সংখ্যালঘু বরাদ্দ ৫৭ শতাংশ কমল কেন? কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ অভিষেকের

আপডেট : ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শনিবার

নয়াদিল্লি: সংসদে শুক্রবার বাজেট বত্তৃ«তায় কেন্দ্রকে চড়া সুরে বিঁধলেন তৃণমূলের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন কেন্দ্রকে কার্যত ত্রিমুখী আক্রমণ শানান অভিষেক। প্রশ্ন তোলেন, বাজেটে সংখ্যালঘু খাতে বরাদ্দ ৫৭ শতাংশ কমানো হল কেন?
এ দিন জিও নেটওয়ার্ক, রামায়ণ ও থ্রি ইডিয়েট— এই তিন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কেন্দ্রকে ত্রিফলা আক্রমণ করেন অভিষেক। বত্তৃতার শুরুতেই রামায়ণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, ‘এই বাজেট দেখে আমার রামায়ণের কথা মনে পড়ছে। রামায়ণে মারীচ যেমন সোনার হরিণ দেখিয়ে মা সীতাকে পথভ্রষ্ট করেছিল, এখানেও সরকার তেমনই করেছে। শুধু মরীচিকা! এই সরকারের আমলে রাবণ হয়ে হাজির হয়েছে ক্রোনি ক্যাপিটালিস্টরা (সুবিধাভোগী পুঁজিপতি)।’
হিন্দি সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়েট’-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, ‘‘বছরে দু-কোটি চাকরির কথা বলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু বেকারত্ব গত ৪৫ বছরের সর্বোচ্চ সীমা ছাড়িয়েছে। এই বাজেট হল ঘুরিয়ে জনগণের থেকে টাকা আদায় করার বাজেট। মধ্যবিত্তকে যে কর ছাড়ের কথা বলা হয়েছে তা ভ্রান্তিকর। ১২ লাখ পর্যন্ত কর ছাড়ের কথা বলা হলেও ৯৮,০০০ টাকা জিএসটিতে দিতে হবে মধ্যবিত্তকে। এ ছাড়াও অনেক সারচার্জ ও ট্যাক্স রয়েছে। এই বাজেট আমাকে হিন্দি সিনেমার ৩ ইডিয়টসের কথা মনে করিয়েছে। র‌্যাঞ্চোর কথা মনে করাচ্ছে। র‌্যাঞ্চো সেখানে প্রকৃত শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করেছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হিসেবে ‘ভাইরাস’ (সিনেমার চরিত্র) অনেক ঘোষণা করেছিলেন। দেশের মানুষ রোজগারে ট্যাক্স দেয়, আবার খরচেও ট্যাক্স দেয়।’’
রিলায়্যান্সের জিও টেলি সংযোগের শুরুর কথা মনে করিয়ে দিয়ে এই তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘জিও-র ফ্রি ডেটা প্ল্যান এক সময় কোটি কোটি গ্রাহককে প্রলুব্ধ করেছিল। এখন সেই জিও-ই বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার তুলে দিয়েছে। ফলে মোবাইলের সংযোগ টিকিয়ে রাখাটাই গ্রাহকদের অনেকের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সরকারও নানা ফ¨ি করে মানুষকে প্রলুব্ধ করেছে। তার পর জাঁতাকলে পিষছে। বাজেটে বার্ষিক ১২ লাখ টাকা আয় পর্যন্ত করে ছাড় দেওয়া জিও-র ওই প্ল্যানের মতো। এক দিকে ছাড় দিয়ে অন্য দিক দিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে।’
বাজেটে বাংলাকে বঞ্চনা করার অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, নির্মলা সীতারামন যে বাজেট পেশ করেছেন, সেটা বাংলা বিরোধী বাজেট। সুপরিকল্পিতভাবে বাংলার উন্নয়নযজ্ঞকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা। বিহারে শুধু বিজেপি সরকারে আছে বলে বিহার প্যাকেজ পাচ্ছে। আর বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় নেই বলে বাংলা পাচ্ছে বঞ্চনা। দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর নামে ‘হাফ ফেডারেলিজম’ চলছে। বিহারে বিজেপির ১২ জন সাংসদ আছেন। বাংলাতেও বিজেপির ১২ জন সাংসদ। কিন্তু বিহারে বিজেপি শাসন ক্ষমতায়। তাই বিহার বোনাস পাচ্ছে। আর বাংলায় যেহেতু বিজেপি বিরোধী আসনে, তাই বাংলার জন্য বঞ্চনা। এটাই ‘হাফ ফেডারেলিজম’। বাংলার জন্য উল্লেখযোগ্য একটিও আর্থিক প্যাকেজ বা বড় প্রকল্প ঘোষণা করা হয়নি। উলটে বাংলার বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা পাওনা। সেই বকেয়াও মেটানো হচ্ছে না। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আর্থিক অবরোধ। সুপরিকল্পিতভাবে বাংলার উন্নয়ন এবং আর্থিক বৃদ্ধি রুখে দেওয়া হচ্ছে। শুধু ১০০ দিনের কাজে ৭ হাজার কোটির বেশি বকেয়া রাজ্যের। বাংলার ৫৯ লক্ষ শ্রমিক বঞ্চিত। আবাস যোজনায় ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া। এতে ১৩ লক্ষ পরিবার বঞ্চিত। তবে বাংলা মাথা নত করবে না। বাংলা নিজের শক্তিতে উন্নতি করবে। অভিষেকের কটাক্ষ, কন্দ্রের মোদি সরকার ‘রবিনহুডের বিপরীত মডেল’। রবিনহুড বড়লোকের থেকে নিয়ে গরিবদের বিলিয়ে দিতেন। এই সরকার তার ঠিক উলটো। এরা গরিবের থেকে কেড়ে নিয়ে বড়লোকদের আরও বড়লোক করছে। বাজেটে সংখ্যালঘু খাতে কেন বরাদ্দ কমানো হয়েছে তা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ২০২৫ সালে ৫ ট্রিলিয়ন অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছিল মোদি সরকার। তাহলে বিজেপি সরকার বাজেটে সংখ্যালঘু বিষয়ক বরাদ্দ কেন ৫৭ শতাংশ কমিয়েছে?