শিশু কোলে নিয়ে ইডি দফতর সল্টলেক সিজিও ছাড়েন সাংসদ অভিষেক-পত্নী রুজিরা

- আপডেট : ২৩ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার
- / 12
পুবের কলম প্রতিবেদকঃ কয়লা পাচার কাণ্ডে ইডি তদন্তকারীদের প্রথম মুখোমুখি হন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পত্নী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তকারীদের প্রায় সাড়ে ছ’ঘণ্টা জেরা পর্বের শেষে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫.২১ মিনিট নাগাদ ছেলেকে কোলে সল্টলেকের ইডি দফতর সিজিও কমপ্লেক্স ছাড়েন অভিষেক-পত্নী।
কয়লা পাচার কাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি’র (ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর) তলবে বারংবার হাজিরা এড়িয়ে ছিলেন সাংসদ অভিষেক পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড সময়কালে খুদে কোলের সন্তান আয়াংশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর পক্ষে দিল্লি গিয়ে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয় বলে ইডিকে জানিয়েছিল সাংসদ-পত্নী। শেষমেষ আদালতের নির্দেশে ইডির জেরার মুখোমুখি হন রুজিরা। অবশ্য এই মর্মে ২৪ ঘন্টা আগে অভিষেক স্ত্রী, রাজ্যের মুখ্যসচিব ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারকে ইমেল মারফত খবর পাঠিয়েছিল ইডি।
কয়লা পাচার মামলায় রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বৃস্পতিবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ দল দিল্লি থেকে কলকাতায় উড়ে আসে। এদিন তদন্তকারী সেই অফিসারদের জেরার মুখোমুখি হন অভিষেক-পত্নী। বৃস্পতিবার সকাল ১১.৮ মিনিট নাগাদ দুধ সাদা রঙের ইনোভা ডব্লুবি ০২এএল ৫৫৫৫ গাড়ি চেপে সল্টলেকের ডি এফ ব্লকে সিজিও কমপ্লেক্স দফতরে যান রুজিরা। আড়াই বছরের পুত্র সন্তান আয়াংশ-কে কোলে নিয়ে সিজিও দফতরের গেটের বাইরে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে ইডির দফতরে উঠে যান রুজিরা। ইডি সূত্রে খবর, রুজিরার দুটি বিদেশী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
এদিনের জেরায় সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয় রুজিরার কাছে। কারণ তদন্তকারীরা জানতে পারছে কয়লা পাচারের টাকা ঘুরপথে ওই ব্যাংকে গিয়েছে। সেই সূত্র খুঁজে বার করার চেষ্টা করতে গোয়েন্দারা। এক্ষেত্রে তদন্তে কয়লা পাচার কাণ্ডে কিং পিন অনুপ মাঝি, পলাতক তৃণমূল যুব নেতা বিনয় মিশ্র, অনুপ মাজি ছাড়াও পাচার কাজে জড়িত আরও বেশ কিছু ব্যক্তির নাম তুলে ধরেন ইডির গোয়েন্দারা। অভিযুক্ত ওই সমস্ত ব্যক্তিকে চিনতেন কি না! রুজিরার কাছে তা জানতে চান তদন্তকারীরা।
এদিনে গোটা জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের রুজিরার বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সেই তদন্তের মনিটরিং হয় দিল্লি থেকে। গোটা জেরা চলাকালীন হয়েছে ভিডিও রেকর্ডিং-ও। ইডি সূত্রে খবর, রুজিরার সন্তান সঙ্গে থাকার দরুন জেরা মুখে খুদে শিশু সন্তান বারংবার কেঁদে উঠেছিল। ফলে এক্ষেত্রে ইডি গোয়েন্দাদের প্রশ্ন উত্তর পর্বে তৈরি হয় ব্যাঘাত। সব শেষে এদিন তদন্তকারীদের প্রায় সাড়ে ছয় ঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদে পর বিকেল ৫.২১ মিনিট নাগাদ পুত্র সন্তানকে কোলে নিয়েই পায়ে হেঁটে সিজিও কমপ্লেক্স-এর বাইরে বেরিয়ে আসেন রুজিরা। যদিও রুজিরাকে গাড়িতে তুলতে প্রথমে তার অপেক্ষারত গাড়ি সিজিওর ভিতরে ঢোকানো হয়েছিল।
কিন্তু অভিষেক পত্নী পায়ে হেঁটে সিজিও ছাড়বেন বলে সেই গাড়ি আবার বাইরের রাস্তায় বের করে আনা হয়। এদিকে, অভিষেক-পত্নীর হাজিরাকে কেন্দ্র করে সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্স দফতরের বাইরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ের ঘেরাটোপে মোড়া ছিল। সাংবাদিক থেকে শুরু করে কেউ যাতে সিজিও পাঁচিল টপকাতে না পারেন, সেজন্য মোতায়েন রাখা হয়েছিল বিধাননগর বিশাল পুলিশ বাহিনীকে। সেই নিরাপত্তা এমনই পর্যায়ে ছিল যে পুলিশকে সচিত্র পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভিতরে ঢুকতে হয় সিজিও কর্মীদের। সিজিও-র বাহির-প্রবেশের মূলদ্বারের ভিডিওগ্রাফী করে রাখতে বসানো হয়েছিল পুলিশের ক্যামেরা।