১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা ফেরানোর নামে কি নয়া ছক কষছে মায়ানমার ?

মাসুদ আলি
  • আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, রবিবার
  • / 5

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক :  অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর অবশেষে ৭০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চায় মায়ানমার৷ এর আগে দু’বার ফেরত নেওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হলেও তাদের ফেরত পাঠানো যায়নি৷ তাই প্রশ্ন উঠৈছে এবার সফল হবে কী না৷ কেউ কেউ বলছেন এটা মিয়ানমারের নতুন কোনো ফাঁদ নয় তো?

বাংলাদেশ  ৯ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর রয়েছেন। সেই তালিকা মিয়ানমারকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত৷ এই  ৯ লাখের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২৯ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের নাগরিক বলে নিশ্চিত করেছে৷

বাংলাদেশের পরারাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গত সপ্তাহে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মিয়ানমার প্রথম দফায় ৭০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চায়৷ কিন্তু আমরা চাই এক হাজার ১০০ রোহিঙ্গাকে প্রথম দফায় ফেরত নেওয়া হোক৷ এটা হলে একই পরিবারের সবাই যেতে পারবেন৷ তা না হলে পরিবারের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হবে৷’

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা ক্ষমতায় আসার পর প্রথম চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটির মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক হয়৷ এর আগে আরো দুইবার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়৷ ২০১৭ সাল থেকে এপর্যন্ত রাখাইনে নির্যাতনের শিকার হয়ে কমপক্ষে ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আসেন৷

শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ৯ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার তালিকা পাঠিয়েছি৷ ওরা তাদের পরিচিতি পরীক্ষা করছে, যদি সত্যি বলে থাকে৷ তারা ২৯ হাজারের পরিচিতি এখনপর্যন্ত নিশ্চিতের কথা বললেও আমাদের কাছে কোনো তালিকা পাঠায়নি৷’

তবে মিয়ানমার যদি এখন ৭০০ জনকে ফেরত নিতে চায় সে ব্যাপারে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা৷ তারা মনে করেন এটা মিয়ানমারের একটি ফাঁদ বা নতুন কোনো চাল হতে পারে৷

মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক মনে করেন, ‘একটি রোড ম্যাপ ছাড়া ৭০০ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না৷ আগে মিয়ানমার নিশ্চিত করবে যে সর্বমোট কত জনকে তারা কতদিনে ফেরত নেবে৷ নয়তো তারা এই ৭০০ জনকে ফেরত নিয়ে বলবে আমরা তো ফেরত নিয়েছি৷ আর নেবে না৷’

তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালে তারা একই কাজ করেছিল৷ কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে আর নেয়নি৷ ২০১১ সালে রোহিঙ্গাদের একটি তালিকা হস্তান্তর করা হয় মিয়ানমারকে৷ তখন তারা মাত্র ছয় হাজারকে রোহিঙ্গা বলে মেনে নেয়৷ তারা আসলে টোকেন হিসেবে কিছু রোহিঙ্গাকে নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বকে দেখাতে চায় আর কিছু নয়৷

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রোহিঙ্গা ফেরানোর নামে কি নয়া ছক কষছে মায়ানমার ?

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, রবিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক :  অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর অবশেষে ৭০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চায় মায়ানমার৷ এর আগে দু’বার ফেরত নেওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হলেও তাদের ফেরত পাঠানো যায়নি৷ তাই প্রশ্ন উঠৈছে এবার সফল হবে কী না৷ কেউ কেউ বলছেন এটা মিয়ানমারের নতুন কোনো ফাঁদ নয় তো?

বাংলাদেশ  ৯ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর রয়েছেন। সেই তালিকা মিয়ানমারকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত৷ এই  ৯ লাখের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২৯ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের নাগরিক বলে নিশ্চিত করেছে৷

বাংলাদেশের পরারাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গত সপ্তাহে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মিয়ানমার প্রথম দফায় ৭০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চায়৷ কিন্তু আমরা চাই এক হাজার ১০০ রোহিঙ্গাকে প্রথম দফায় ফেরত নেওয়া হোক৷ এটা হলে একই পরিবারের সবাই যেতে পারবেন৷ তা না হলে পরিবারের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হবে৷’

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা ক্ষমতায় আসার পর প্রথম চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটির মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক হয়৷ এর আগে আরো দুইবার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়৷ ২০১৭ সাল থেকে এপর্যন্ত রাখাইনে নির্যাতনের শিকার হয়ে কমপক্ষে ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আসেন৷

শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ৯ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার তালিকা পাঠিয়েছি৷ ওরা তাদের পরিচিতি পরীক্ষা করছে, যদি সত্যি বলে থাকে৷ তারা ২৯ হাজারের পরিচিতি এখনপর্যন্ত নিশ্চিতের কথা বললেও আমাদের কাছে কোনো তালিকা পাঠায়নি৷’

তবে মিয়ানমার যদি এখন ৭০০ জনকে ফেরত নিতে চায় সে ব্যাপারে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা৷ তারা মনে করেন এটা মিয়ানমারের একটি ফাঁদ বা নতুন কোনো চাল হতে পারে৷

মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক মনে করেন, ‘একটি রোড ম্যাপ ছাড়া ৭০০ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না৷ আগে মিয়ানমার নিশ্চিত করবে যে সর্বমোট কত জনকে তারা কতদিনে ফেরত নেবে৷ নয়তো তারা এই ৭০০ জনকে ফেরত নিয়ে বলবে আমরা তো ফেরত নিয়েছি৷ আর নেবে না৷’

তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালে তারা একই কাজ করেছিল৷ কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে আর নেয়নি৷ ২০১১ সালে রোহিঙ্গাদের একটি তালিকা হস্তান্তর করা হয় মিয়ানমারকে৷ তখন তারা মাত্র ছয় হাজারকে রোহিঙ্গা বলে মেনে নেয়৷ তারা আসলে টোকেন হিসেবে কিছু রোহিঙ্গাকে নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বকে দেখাতে চায় আর কিছু নয়৷