ইন্তেখাব আলম: পশ্চিমবঙ্গের কৃষি, শিল্প-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়নের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য বিপুল পরিমাণ আর্থিক ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করল ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট তথা নাবার্ড। শুক্রবার কলকাতায় অনুষ্ঠিত রাজ্য ঋণ সেমিনারে বাংলার কৃষি-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য ৩.৮০ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ ঘোষণা করেন নাবার্ডের চিফ জেনারেল ম্যানেজার পি কে ভরদ্বাজ। এ দিন রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ঋণের ঘোষণা করে নাবার্ডের মুখ্য মহাব্যবস্থাপক পি কে ভরদ্বাজ বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ ঋণের পরিমাণ গত অর্থ বছরের তুলনায় ২০.৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ দিন ঋণ সেমিনারে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পরিকল্পনা থেকে প্রাপ্ত ক্ষেত্রভিত্তিক ঋণের সম্ভাবনাগুলিকে একত্রিত করে রাজ্য স্তরে স্টেট ফোকাস পেপার প্রকাশ করেন রাজ্য সরকারের অর্থ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব প্রভাত কুমার মিশ্র। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কৃষি দফতরের প্রধান সচিব ওংকার সিংহ মীনা, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুখ্য মহাব্যবস্থাপক সুমতি মেরি এল. এন. সি. গুইতে, ভারতীয় স্তেট ব্যাঙ্কের মুখ্য জেনারেল ম্যানেজার সত্যেন্দ্র কুমার সিংহ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা।
নাবার্ড-এর চিফ জেনারেল ম্যানেজার পি কে ভরদ্বাজ জানান, বাংলার উন্নয়নের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে মোট ৩.৮০ লক্ষ কোটি টাকার সম্ভাব্য ঋণ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে কৃষি, কৃষি-পরিকাঠামো সহ সংযুক্ত কার্যক্রমের জন্য ১.২৭ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় কৃষি উৎপাদনকারী সংস্থা, জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধি, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সত্যেন্দ্র কুমার সিংহ নাবার্ডের কৃষি গবেষণার প্রশংসার পাশাপাশি রাজ্যের রাফতানি সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উপর জোর দেন। এ ছাড়াও রাজ্যের ফসল বৈচিত্র্যকরণ ও টেকসই কৃষি অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি। অন্যদিকে, রাজ্যের আর্থিক উন্নয়ন, উচ্চশিক্ষার প্রসার এবং লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণের জন্য উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে নাবার্ডের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানান ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুখ্য মহাব্যবস্থাপক মেরি এল এন সি গুইতে।
এ দিন রাজ্য ঋণ সেমিনারে রাজ্যের কৃষি দফতরের প্রধান সচিব ওংকার সিংহ মীনা বলেন, বর্তমানে কৃষি ঋণ বিতরণ ৭৫,০০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে এবং এটি চলতি বছরে ১ লক্ষ কোটি টাকা অতিক্রম করতে পারে। তিনি বাজার চাহিদার ভিত্তিতে পরিকল্পনা, জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন ট্যাগিং-এর পাশাপাশি রাজ্যে ডাল, ভুট্টা ও তৈলবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির উপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে রাজ্যের অর্থ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব প্রভাত কুমার মিশ্র কৃষি ও সংশ্লিষ্ট খাতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সহায়তা এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য সমন্বিত উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন।