পুবের কলম প্রতিবেদক: ছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। ঢাকার সেই স্টেডিয়াম নাম পালটে হয়ে গেল বাংলাদেশ জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা। আন্তর্জাতিক মানের এই স্টেডিয়াম থেকে মুছে গেল বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের নাম। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম এক প্রেস বিবৃতিতে ঢাকার স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ নানা বিষয় নিয়ে উত্তাল। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত এই স্টেডিয়াম বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম হিসেবে গণ্য হত এতদিন। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই স্টেডিয়াম। যদিও তখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। সেই সময় তা ছিল পূর্ব পাকিস্তান। স্টেডিয়ামের নাম ছিল ঢাকা স্টেডিয়াম। সেই সময় একইসঙ্গে এই স্টেডিয়ামে ক্রিকেটের সঙ্গে সঙ্গে ফুটবলও খেলা হত। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ জন্ম নেওয়ার পর এটিকে আন্তর্জাতিক করে তোলার চেষ্টা করা হয়। ১৯৭৮ সালে এই মাঠেই একটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেছিলেন কিংবদন্তি বক্সার মুহাম্মদ আলি। ১৯৯৮ সালে আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা ঢাকার স্টেডিয়ামের নাম পালটে করে দেন ঢাকা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। ক্রিকেট ফুটবলের পাশাপাশি এই মাঠে অ্যাথলটিক ট্র্যাকও রয়েছে। একদিকে যেমন এই স্টেডিয়ামে ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধন হয়েছে, অন্যদিকে তেমনই এই স্টেডিয়ামেই ২০১১ সালে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের বর্ণাঢ্য উদ্বোধনও হয়েছে। এই মাঠেই খেলে গিয়েছেন মেসি, ডি’মারিয়া, সার্জিও আগুয়েরোর মতো ফুটবলার। এখন এটি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান মাঠ। আগে এই স্টেডিয়ামের দর্শকাসন সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার। সংস্কারের পর এখন তার দর্শকাসন সংখ্যা ৩৫ হাজার।
ঢাকার স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন নিয়ে আলোচনাও যেমন চলছে, তেমনই সমালোচনাও হচ্ছে ব্যাপক। যদিও কোনও একটি নামজাদা স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন নতুন নয়। ভারতেও এমন নাম পরিবর্তনের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হয়েছে। ফিরোজ শাহ কোটলা, যা দিল্লি তথা ভারতের অন্যতম একটি সেরা স্টেডিয়াম। আন্তর্জাতিক মহলে ‘ফিরোজ শাহ কোটলা’ নামটিও যথেষ্ট সমাদৃত ছিল। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির মৃত্যুর পর ২০১৯ সালে ফিরোজ শাহ কোটলা নাম পালটে স্টেডিয়ামের নামকরণ হয় অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম। দর্শকাসন সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, আহমদাবাদ স্টেডিয়াম। যেটি প্রথমে পরিচিত ছিল মোতেরা নামে। পরে তা করা হয় সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেলের নামে। এরপর সেই নামও পালটে দিয়ে বর্তমানে তার নাম নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম। তাছাড়া গুজরাতের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম, তারও নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে নিরঞ্জন শাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম। তিনিও বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের ঘনিষ্ঠ।