মুম্বই: সম্প্রতি তৃতীয় মোদি সরকারের বাজেট (২০২৫-২৬) পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। শুধু তাই নয়, তারপর দিল্লিতেও বড় জয় পেয়েছে গেরুয়া শিবির। তারপরও চাঙ্গা হচ্ছে না শেয়ার বাজার। যা নিয়ে বাড়ছে চিন্তা। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি গেরুয়া শিবিরের এই জয় ও বাজেটে আস্থা ফেরাতে পারেনি দালাল স্ট্রিটে? তৃতীয় মোদি সরকারের উপর থেকে কি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমছে?
মঙ্গলবার দিনভর তুমুল ধস দেখা গিয়েছে ভারতীয় শেয়ার বাজারে। ভারতীয় বাজার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগ, সেই কারণেই প্রবল চাপে সেনসেক্স ও নিফটি। এ দিন ৭৬২৯৩.৬০ পয়েন্টে শেষ করেছে সেনসেক্স। ১০১৮.২০ পয়েন্ট বা ১.৩২ শতাংশ নেমে শেষ করেছে এই সূচক। নিফটি ৫০ বন্ধ হয়েছে ২৩০৭১.৮০ পয়েন্টে। এ দিন ৩০৯.৮০ পয়েন্ট বা ১.৩২ শতাংশ পড়েছে এই সূচক। তথ্য বলছে, এ দিন সব সেক্টোরাল সূচকগুলিই নিম্নমুখী হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ দিন বাজার খোলার সময় থেকেই কোনও চাঙ্গা ভাব দেখা যায়নি। দুপুর ১টা ৪০ নাগাদ ১০৭২ পয়েন্টের আশপাশে পড়ে যায় সেনসেক্স সূচক। অর্থাৎ ওই সময়ে পর্যন্ত ১.৩৮ শতাংশের আশেপাশে সূচক পতন হয়। ফলে ৭৬২৮০ পয়েন্টের আশপাশে থাকতে দেখা যায় সেনসেক্স সূচক। ধাক্কা খায় নিফটিও। নিফটি একই সময়ে ১.৩৮ শতাংশ পড়েছে। ফলে ৩০০-ও বেশি পয়েন্ট পড়ে গিয়ে ২৩০৬০ পয়েন্টের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে সূচক। ব্যাঙ্ক নিফটির অবস্থাও খারাপ। ৬০০ পয়েন্ট পড়ে গিয়েছে এই সূচক, নেমে গিয়েছে ৫০ হাজারেরও নীচে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ এই সূচক সাড়ে সাতশো পয়েন্ট পড়ে গিয়েছে। তারপর বেলা যত গড়িয়েছে শেয়ার বাজারে রক্তক্ষরণ অব্যাহত থেকেছে।
যদিও বিশেষজ্ঞ শিবিরের দাবি, এই শেয়ার পতন যতটা না অভ্যন্তরীণ কারণে তার থেকে অনেক বেশি বিদেশি প্রভাবের কারণে। আর এর একটা বড় কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্ধু তথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত পদক্ষেপ। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে সামগ্রিকভাবে বিশ্বের বাজারে ধাক্কা লেগেছে। তার বাইরে নেই ভারতও। সম্প্রতি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেটে কাটছাঁট করলেও বাজারে স্থায়িত্ব এখনও আসেনি। মঙ্গলবার বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপই মূলত দেখা গিয়েছে। এনএসই-তে অটো, ব্যাঙ্ক, এনার্জি, এফএমসিজি-সহ ১২টি সেক্টরেই নিম্নগামী হয়েছে সূচক। বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে স্মলক্যাপ ও মিডক্যাপ সেক্টর। বিএসই-তে ৮৫ শতাংশ স্টকের দামই পড়েছে। মাত্র ১৩ শতাংশ স্টকের দাম কিছুটা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক স্তরে শুল্ক যুদ্ধের কারণে ভারতও টালমাটাল হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।