নিজামুদ্দিন হত্যা মামলা, জামিনের আবেদন খারিজ ৪ অভিযুক্তের

- আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২, শনিবার
- / 6
শফিকুল ইসলাম, নদিয়া: নদিয়ার দেবগ্রামে নিজামুদ্দিন হত্যায় ধৃত ৪ জনের জামিনের আবেদন কৃষ্ণনগর জেলা আদালতের বিচারক খারিজ করেছেন। এই মামলায় নরেন ঘোষ নামে এক ছানা ব্যবসায়ী এখনও পলাতক বলে রাজ্য রেল পুলিশ জানিয়েছে। তার বাড়ি মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর থানা এলাকায়। ঘটনার পর থেকে নরেন ঘোষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে নদিয়ার দেবগ্রাম স্টেশনে বেলডাঙার বেগুনবাড়ির ২৫ বছরের যুবক নিজামুদ্দিন সেখকে দুষ্কৃতীরা ট্রেন থেকে নামিয়ে প্রচণ্ড মারধর করে রেল লাইনে ছুঁড়ে ফেলে হত্যা করে। এই ঘটনায় রেল পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করে।
ধৃতদের নাম, রিঙ্কু ঘোষ, বাবাই ঘোষ, বীরু ঘোষ ও সুদীপ ঘোষ। অভিযুক্তদের আইনজীবীরা কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে তাদের জামিনের জন্য আবেদন করে গত বৃহস্পতিবার। জেলা আদালতের (জজ কোর্ট) বিচারক তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করেছেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী আলি আহসান আলমগীর ও জ্যোতি সাধুখাঁ জানিয়েছেন।
ধৃতদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখা হয়েছে। রাজ্য রেল পুলিশ সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী। তবে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে আরপিএফের বিরুদ্ধে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রেলের পক্ষ থেকে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল রেলকে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও সদর্থক সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী আলি আহসান আলমগীর। তিনি জানান নিজামুদ্দিন হত্যায় যারা জড়িত তাদের সঙ্গে কোনও আপোষ করবে না নিহত নাজিমুদ্দিনের বড় ভাই আবদুর রহিম সহ পুরো পরিবার। ওই আইনজীবী বলেন, নাজিমুদ্দিন হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও মানবাধিকার সংস্থা গণআন্দোলন করছে। তারা প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করে চলেছে। তার অনুরোধ সাধারণ মানুষ যেন নাজিমউদ্দিনের পরিবারের পাশে থাকে।
একইসঙ্গে মৃত যুবকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। এই চিঠি পাঠিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী আলি আহসান আলমগীর। তিনি জানান, বেলডাঙার বেগুনবাড়ির যুবক নাজিমুদ্দিন সেখের নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে ইস্টার্ন রেলওয়ের আধিকারিকদের চিঠি পাঠানো হয়।
ঘটনার নিরিখে রেলের সুরক্ষা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে রেলওয়ে কি পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আগামীতে সাধারণ যাত্রী সুরক্ষার নিরিখে রেলওয়ের পরিকল্পনা জানতে চেয়ে এই চিঠি।
আইনজীবীর বক্তব্য, ‘শিয়ালদহ লালগোলা শাখায় নিত্য যাত্রীদের দ্বারা সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি রোজকার ঘটনা। এর প্রতিকার না পেলে আমরা ইস্টার্ন রেলওয়ের বিরুদ্ধে মামলা করব।’
প্রসঙ্গত মৃত যুবকের নাম নাজিমুদ্দিন সেখ মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থানার বেগুনবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। ১৪ ডিসেম্বর রাতে শিয়ালদহ থেকে লালাগোলা মেমু ট্রেনে বাড়িতে ফেরার সময় ভেন্ডার কামরায় উঠেছিলেন। সেখানে কয়েকজন নিত্যযাত্রী নিজামুদ্দিনকে দেবগ্রাম স্টেশনের কাছে ট্রেন থেকে নামায় মারধর করে। পরে লাইনে ছুড়ে ফেলে দেয়। ট্রেনের চাকায় দু-টুকরো হয়ে যায় তার শরীর।