১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একটি পা নেই,  চোখে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন, রোজ ৩ কিমি হেঁটে স্কুলে যায় ধুবড়ির রসুল

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৩ অগাস্ট ২০২২, বুধবার
  • / 10

হাবিব মণ্ডল:  একটি পা নেই, তবে দু’চোখে স্বপ্ন আছে। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন, বড় মানুষ হওয়ার স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে তাই রোজ এক পায়ে খুঁড়িয়ে ৩ কিলোমিটার দূরে স্কুলে যায় রসুল হক। শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও প্রতিবদ্ধকতা যে বাধা হতে পারে না,  সেটাই যেন প্রমাণ করতে চায় অসমের ধুবরি জেলার দশমের ছাত্র। জেলার মতিচর হাইস্কুলের এই ছাত্রের একটি পা উরু থেকে কাটা। তবুও সকল বিঘ্নতাকে হার মানিয়ে শিক্ষার অমোঘ টানে প্রতিদিন স্কুলে ছোটে ধুবরির ছোট বাসজানি গ্রামের রসুল হক। পরের বছর সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেবে।

সম্প্রতি রসুলের খুঁড়িয়ে স্কুলে যাওয়ার মর্মস্পর্শী একটি ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়,  পিঠে ভারী ব্যাগ নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে স্কুলে যাচ্ছে ওই কিশোর। হৃদয়বিদারক সেই ভিডিয়ো দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি অনেকে। আবার বহু মানুষ তার এই অসম লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছে।

ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ বয়সি রসুল মাত্র দু’বছর বয়সে এক কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। টাকার অভাবে সেই সময় তার যথাযথ চিকিৎসা করতে পারেননি পেশায় শ্রমিক বাবা। ফলে হারাতে হয়েছিল একটি পা। তবে হার মানেনি এই কিশোর। বুকে আশার আলো নিয়ে অঙ্কুরিত হচ্ছে বনস্পতি হওয়ার লক্ষ্যে।

পেশায় শ্রমিক রসুলের বাবা জাকির হোসেন জানান, ‘মাত্র দু’বছর বয়সে ছেলেটা কঠিন রোগে পড়েছিল। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার ছিল, কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা হয়নি। আক্ষেপের সুরে তিনি জানান, ‘অভাব আর দারিদ্রতার বেড়া পার হতে না পারায় একটা পা হারাতে হয় ছেলেটার। তবে সে আশাহত হয়নি। প্রতিদিন সে পরিস্থিতি এবং প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ে যাচ্ছে। ওর বিশ্বাস একদিন আলো খুঁজে পাবে। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তাই তো রোজ ৩ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যায়।’– দীপ্ত কণ্ঠে জানান জাকির।

তাঁর আক্ষেপ, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হলেও আজও ছেলেটা সরকারি কোনও প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেল না। স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদের কাছে তিনি রসুলের পড়াশোনার খরচ বহনের আর্জি জানিয়েছেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

একটি পা নেই,  চোখে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন, রোজ ৩ কিমি হেঁটে স্কুলে যায় ধুবড়ির রসুল

আপডেট : ৩ অগাস্ট ২০২২, বুধবার

হাবিব মণ্ডল:  একটি পা নেই, তবে দু’চোখে স্বপ্ন আছে। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন, বড় মানুষ হওয়ার স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে তাই রোজ এক পায়ে খুঁড়িয়ে ৩ কিলোমিটার দূরে স্কুলে যায় রসুল হক। শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও প্রতিবদ্ধকতা যে বাধা হতে পারে না,  সেটাই যেন প্রমাণ করতে চায় অসমের ধুবরি জেলার দশমের ছাত্র। জেলার মতিচর হাইস্কুলের এই ছাত্রের একটি পা উরু থেকে কাটা। তবুও সকল বিঘ্নতাকে হার মানিয়ে শিক্ষার অমোঘ টানে প্রতিদিন স্কুলে ছোটে ধুবরির ছোট বাসজানি গ্রামের রসুল হক। পরের বছর সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেবে।

সম্প্রতি রসুলের খুঁড়িয়ে স্কুলে যাওয়ার মর্মস্পর্শী একটি ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়,  পিঠে ভারী ব্যাগ নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে স্কুলে যাচ্ছে ওই কিশোর। হৃদয়বিদারক সেই ভিডিয়ো দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি অনেকে। আবার বহু মানুষ তার এই অসম লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছে।

ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ বয়সি রসুল মাত্র দু’বছর বয়সে এক কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। টাকার অভাবে সেই সময় তার যথাযথ চিকিৎসা করতে পারেননি পেশায় শ্রমিক বাবা। ফলে হারাতে হয়েছিল একটি পা। তবে হার মানেনি এই কিশোর। বুকে আশার আলো নিয়ে অঙ্কুরিত হচ্ছে বনস্পতি হওয়ার লক্ষ্যে।

পেশায় শ্রমিক রসুলের বাবা জাকির হোসেন জানান, ‘মাত্র দু’বছর বয়সে ছেলেটা কঠিন রোগে পড়েছিল। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার ছিল, কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা হয়নি। আক্ষেপের সুরে তিনি জানান, ‘অভাব আর দারিদ্রতার বেড়া পার হতে না পারায় একটা পা হারাতে হয় ছেলেটার। তবে সে আশাহত হয়নি। প্রতিদিন সে পরিস্থিতি এবং প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়ে যাচ্ছে। ওর বিশ্বাস একদিন আলো খুঁজে পাবে। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তাই তো রোজ ৩ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যায়।’– দীপ্ত কণ্ঠে জানান জাকির।

তাঁর আক্ষেপ, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হলেও আজও ছেলেটা সরকারি কোনও প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেল না। স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদের কাছে তিনি রসুলের পড়াশোনার খরচ বহনের আর্জি জানিয়েছেন।