২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন্দ্রীয় অনুদান থেকে বঞ্চিত ন্যাক বহির্ভূত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, রবিবার
  • / 4

সেখ কুতুবউদ্দিন: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আর্থিক বরাদ্দ পেতে প্রয়োজন ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন  কাউন্সিল (ন্যাক)-এর অনুমোদন। রাজ্য তথা দেশের বহু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই ন্যাক-এর অনুমোদন। আর ন্যাক না থাকার কারণে গবেষণা ও অন্যান্য  খাতে আর্থিকভাবে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে ওই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে।

রাজ্যগুলিকে পাঠানো এক নির্দেশিকায় ইউজিসি জানিয়েছে, ধাপে ধাপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি যাতে ন্যাক অনুমোদন করিয়ে নেয়, সেদিকে নজর দিতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে। ন্যাক নিয়ে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকেও জানিয়েছে ইউজিসি। এ দিকে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে যাতে ন্যাক অনুমোদন হয়, তার জন্য উপাচার্য এবং অধ্যক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করেছে এ রাজ্যের শিক্ষা দফতর।

রাজ্য সরকার অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৪২টি, যার মধ্যে ৩১টি রাজ্যপোষিত এবং বাকি ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যদিকে, সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে বর্তমানে ৫০৯টি কলেজ রয়েছে, যার মধ্যে ৫২টি নতুন কলেজ।

এ দিকে রাজ্যের ২০১৫ সালের আগে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাক পেয়েছে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। আরও বহু বিশ্ববিদ্যালয় এ’নও ন্যাক পায়নি।

অন্যদিকে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যায় রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের অধীনে।  এই বিশ্ববিদ্যালয়েও এখন ন্যাকের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে  পারেনি। তবে দ্রুত এই প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে  আলিয়া কর্তৃপক্ষ।

নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচ বছর অন্তর সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ন্যাকের মূল্যায়নে যোগ দিতে হয়। কিন্তু এই রাজ্যে কিছু কলেজ সেই মূল্যায়নে নিয়মিত যোগ দেয়। কিন্তু অনেক কলেজ একবার যোগ দিয়ে আর সেই বিষয়ে কোনওরকম আগ্রহ দেখায়নি। কোনও কোনও কলেজ কখনোই যোগ দেয়নি ওই কেন্দ্রীয় মূল্যায়নে। অথচ ওই মূল্যায়নে যোগ দিলে দু’টি কাজ হয়,একটা সর্বভারতীয় মূল্যায়ন  আর বরাদ্দের পথ মসৃণতর করা।

রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, এই রাজ্যের ১০০ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাকের মূল্যায়নে নিয়মিত যোগ দেয়, তাঁদের দফতর এবার সেই লক্ষ্যে এগোচ্ছে। চলছে এই বিষয়ে অনলাইনে সচেতনতা এবং তালিমের প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী কলকাতার একটি কলেজের অধ্যক্ষের বক্তব্য, ৩১ অগস্টের মধ্যে ন্যাকের ওয়েবসাইটে কলেজের বার্ষিক কোয়ালিটি অ্যাশিয়োরেন্স রিপোর্ট (একিউএআর) জমা দিতে হবে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। তার পরে আবার ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কলেজের সেল্ফ স্টাডি রিপোর্ট (এসএসআর) ন্যাকের দফতরে জমা দিতে হবে। কীভাবে আবেদন করতে হবে ওয়ার্কশপের মাধ্যমে একাধিকবার জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের।

এ দিকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের এক তথ্য অনুসারে, দেশের ৬৯৫টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৩৪ হাজারেরও বেশি কলেজ ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (নাক)-এর মান্যতা ছাড়াই চলছে। সম্প্রতি লোকসভায় বিষয়টি পেশ করা হয়েছে। সোমবার লোকসভায় একটি প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার।

ইউজিসি-র তথ্য অনুসারে, দেশের ১ হাজার ১১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৪১৮টি এবং ৪৩ হাজার ৭৯৬টি কলেজের মধ্যে মাত্র ৯ হাজার ০৬২টি কলেজে ন্যাক-এর মান্যতা রয়েছে। তিনি আরও জানান, দেশের ৩৪ হাজার ৭৩৪টি কলেজ ন্যাক-এর মান্যতা ছাড়াই চলছে। এই বিষয়ে আলিয়া, ডায়মন্ড হারবার-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ন্যাকের অনুমোদন প্রয়োজন। সেই প্রক্রিয়াও দ্রুত শুরু করা হবে। এই নিয়ে শিক্ষা দফতরের তরফেও  ন্যাক করানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিছু পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যার সমাধান হলে ন্যাকের আবেদন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে ন্যাক নেই, এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কেন্দ্রীয় অনুদান থেকে বঞ্চিত ন্যাক বহির্ভূত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, রবিবার

সেখ কুতুবউদ্দিন: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আর্থিক বরাদ্দ পেতে প্রয়োজন ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন  কাউন্সিল (ন্যাক)-এর অনুমোদন। রাজ্য তথা দেশের বহু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই ন্যাক-এর অনুমোদন। আর ন্যাক না থাকার কারণে গবেষণা ও অন্যান্য  খাতে আর্থিকভাবে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে ওই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে।

রাজ্যগুলিকে পাঠানো এক নির্দেশিকায় ইউজিসি জানিয়েছে, ধাপে ধাপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি যাতে ন্যাক অনুমোদন করিয়ে নেয়, সেদিকে নজর দিতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে। ন্যাক নিয়ে রাজ্যের শিক্ষা দফতরকেও জানিয়েছে ইউজিসি। এ দিকে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে যাতে ন্যাক অনুমোদন হয়, তার জন্য উপাচার্য এবং অধ্যক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করেছে এ রাজ্যের শিক্ষা দফতর।

রাজ্য সরকার অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৪২টি, যার মধ্যে ৩১টি রাজ্যপোষিত এবং বাকি ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যদিকে, সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে বর্তমানে ৫০৯টি কলেজ রয়েছে, যার মধ্যে ৫২টি নতুন কলেজ।

এ দিকে রাজ্যের ২০১৫ সালের আগে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাক পেয়েছে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। আরও বহু বিশ্ববিদ্যালয় এ’নও ন্যাক পায়নি।

অন্যদিকে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যায় রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের অধীনে।  এই বিশ্ববিদ্যালয়েও এখন ন্যাকের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে  পারেনি। তবে দ্রুত এই প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে  আলিয়া কর্তৃপক্ষ।

নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচ বছর অন্তর সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ন্যাকের মূল্যায়নে যোগ দিতে হয়। কিন্তু এই রাজ্যে কিছু কলেজ সেই মূল্যায়নে নিয়মিত যোগ দেয়। কিন্তু অনেক কলেজ একবার যোগ দিয়ে আর সেই বিষয়ে কোনওরকম আগ্রহ দেখায়নি। কোনও কোনও কলেজ কখনোই যোগ দেয়নি ওই কেন্দ্রীয় মূল্যায়নে। অথচ ওই মূল্যায়নে যোগ দিলে দু’টি কাজ হয়,একটা সর্বভারতীয় মূল্যায়ন  আর বরাদ্দের পথ মসৃণতর করা।

রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, এই রাজ্যের ১০০ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাকের মূল্যায়নে নিয়মিত যোগ দেয়, তাঁদের দফতর এবার সেই লক্ষ্যে এগোচ্ছে। চলছে এই বিষয়ে অনলাইনে সচেতনতা এবং তালিমের প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী কলকাতার একটি কলেজের অধ্যক্ষের বক্তব্য, ৩১ অগস্টের মধ্যে ন্যাকের ওয়েবসাইটে কলেজের বার্ষিক কোয়ালিটি অ্যাশিয়োরেন্স রিপোর্ট (একিউএআর) জমা দিতে হবে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। তার পরে আবার ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কলেজের সেল্ফ স্টাডি রিপোর্ট (এসএসআর) ন্যাকের দফতরে জমা দিতে হবে। কীভাবে আবেদন করতে হবে ওয়ার্কশপের মাধ্যমে একাধিকবার জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের।

এ দিকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের এক তথ্য অনুসারে, দেশের ৬৯৫টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৩৪ হাজারেরও বেশি কলেজ ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (নাক)-এর মান্যতা ছাড়াই চলছে। সম্প্রতি লোকসভায় বিষয়টি পেশ করা হয়েছে। সোমবার লোকসভায় একটি প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার।

ইউজিসি-র তথ্য অনুসারে, দেশের ১ হাজার ১১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৪১৮টি এবং ৪৩ হাজার ৭৯৬টি কলেজের মধ্যে মাত্র ৯ হাজার ০৬২টি কলেজে ন্যাক-এর মান্যতা রয়েছে। তিনি আরও জানান, দেশের ৩৪ হাজার ৭৩৪টি কলেজ ন্যাক-এর মান্যতা ছাড়াই চলছে। এই বিষয়ে আলিয়া, ডায়মন্ড হারবার-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ন্যাকের অনুমোদন প্রয়োজন। সেই প্রক্রিয়াও দ্রুত শুরু করা হবে। এই নিয়ে শিক্ষা দফতরের তরফেও  ন্যাক করানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিছু পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যার সমাধান হলে ন্যাকের আবেদন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে ন্যাক নেই, এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।