সংবিধান নয়, বিজেপি বিশ্বাস করে মনুস্মৃতি প্রিয়াঙ্কার পর এবার সরব রাহুলও

রিপোর্টার:
  • শেষ আপডেট: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘বিজেপি সংবিধানে বিশ্বাস করে না, বিশ্বাস করে মনুস্মৃতিতে।’
ভারতীয় সংবিধান সংসদে গৃহীত হওয়ার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংসদে বিশেষ আলোচনা চলছে। সেই আলোচনায় শুক্রবারই বিজেপিকে তুলোধোনা করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি।

 

গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করে প্রিয়াঙ্কার তীব্র শ্লেষ ছিল, ‘দেশ সংবিধান মেনে চলে, সংঘের বিধান নয়।’ আর এবার তাঁর দাদা রাহুল গান্ধি এই ইস্যুতে সুর আরও চড়ালেন। লোকসভায় সংবিধান নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে শনিবার রাহুল আরও বলেন, ‘বিজেপি সংবিধানে বিশ্বাস করে না, বিশ্বাস করে মনুস্মৃতিতে। আমরা দিনরাত সংবিধানকে অনুসরণ করি। কিন্তু বিজেপি সেটা করে না। ওদের বই হল মনুস্মৃতি।’

এদিন রাহুলের মুখে উঠে আসে সাভারকর প্রসঙ্গ। রাহুল বলেন, ‘সাভারকর তাঁর লেখাতেই স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, ভারতীয় সংবিধানের সবথেকে খারাপ বিষয় হল এতে ভারতীয় বলে কিছু নেই। যখন আপনি (বিজেপি) সংবিধান রক্ষার কথা বলেন, আপনি সাভারকারকে উপহাস করছেন। আপনি সাভারকারকে গালি দিচ্ছেন। মহাত্মা গান্ধি জেলে গিয়েছিলেন, নেহরুজি জেলে গিয়েছিলেন। সাভারকর ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। আমরা সংবিধান মেনে চলি। বিজেপির বই মনুস্মৃতি।

 

আমরা প্রত্যেক গরিব মানুষকে বলতে চাই যে আপনারা সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত। সংবিধান বলে যে ধর্ম, বর্ণ, জাতপাত, লিঙ্গ বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা যায় না। আপনারা যেখানেই যান, সেখানে এক ধর্মের বিরুদ্ধে আরেক ধর্মকে লড়িয়ে দেন। আপনারা ঘৃণা ছড়ান। সংবিধানে কোথায় এটা লেখা আছে?’ ইন্ডিয়া জোটের প্রসঙ্গ টেনে রাহুল বলেন, ‘সংবিধানকে রক্ষা করারই ইন্ডিয়া জোটের চিন্তাধারা।

 

আম্বেদকরজি বলেছেন, যদি রাজনৈতিক সমতা থাকে, কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমতা না থাকে, তবে রাজনৈতিক সমতাও নষ্ট হয়ে যাবে। আজ রাজনৈতিক সমতা শেষ হয়ে গিয়েছে। দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান দখল করে নেওয়া হয়েছে। কোনও সামাজিক সমতা নেই। সেই কারণেই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে জাতভিত্তিক জনসুমারি। আমরা নিশ্চিত করব যে সংরক্ষণে ৫০ শতাংশের সীমা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

 

হাথরসের প্রসঙ্গ তুলে রাহুল বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমি হাথরসে গিয়েছিলাম। যারা অপরাধী তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। নির্যাতিতার পরিবার ঘরে বন্দি হয়ে রয়েছে। তাদের হুমকি দিচ্ছে। যে ধর্ষণ করল সে বাইরে ঘুরবে, আর নির্যাতিতার পরিবার ঘরে বন্দি হয়ে থাকবে এটা সংবিধানের কোথায় লেখা রয়েছে। এসব হয়তো মনুসংহিতায় লেখা আছে। ওই পরিবারকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।

 

আজও করা হয়নি। যদি না হয়, তাহলে আমরা ইন্ডিয়া জোটের তরফে তাদের অন্যত্র স্থানান্তরের ব্যবস্থা করব।’
মহাভারতের দ্রোণাচার্যের সঙ্গে বিজেপির তুলনা করে লোকসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘দ্রোণাচার্য যেমন একলব্যের বুড়ো আঙুল কেটেছিলেন, তেমনি বিজেপি আজকের যুব সমাজের আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে দিচ্ছে। সরকারি চাকরিতে ল্যাটারাল এন্ট্রি এনে যুবক, অনগ্রসর শ্রেণির, গরিবদের বুড়ো আঙুল কেটে ফেলছে বিজেপি।

 

৭০টির মতো পেপার লিক হয়েছে। এসব করে আসলে যুব সম্প্রদায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে ফেলা হয়েছে।’
আদানি-দুর্নীতি ইস্যুতে রাহুলের দাবি, ‘আদানি গোষ্ঠীকে অযৌক্তিক সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কারণে দেশের অন্যান্য ছোট ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।

 

দিল্লির বাইরে কৃষকদের উপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ হচ্ছে। তাদের উপর লাঠিচার্জ হচ্ছে। কৃষকরা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দাবি করছে। কিন্তু বিজেপি আদানি-আম্বানিদের লাভের সুবিধা দিচ্ছে এবং কৃষকদের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে দিচ্ছে।’

 

এই সংক্রান্ত আরও খবর
Copyright © 2025 Puber Kalom All rights reserved.
Developed By eTech Builder