‘ওবিসি, সংখ্যালঘুদের স্কলারশিপ বন্ধ করেছে, আপনারা না দিলে রাজ্য চালাবে’, কেন্দ্রের বঞ্চনায় সাগরদিঘি থেকে সোচ্চার মুখ্যমন্ত্রী

- আপডেট : ১৬ জানুয়ারী ২০২৩, সোমবার
- / 9
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সাগরদিঘি থেকে কেন্দ্রকে ম্যারাথন তোপ মুখ্যমন্ত্রীর। সোমবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওবিসি,সংখ্যালঘুদের স্কলারশিপ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। আপনারা জেনে রাখুন, আপনারা না দিলে, রাজ্য চালাবে। এদিন নাম না করে তৃণমূলের সাকেত গোখেলের গ্রেফতারি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করেছে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে এক সমাজকর্মীকে। এত সাহস কে দিল?
বঙ্গভবনের সিসিটিভি ফুটেজ খুলে নিয়ে গেছে দিল্লি, গুজরাত পুলিশ। পাশাপাশি জাকির হোসেনের বাড়িতে তল্লাশি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে বিজেপি নেতাদের বাড়িগুলি তল্লাশি করতে বলুন। জাকির হোসেনকে প্রাণে মারারও চেষ্টা করা হয়েছিল।
ফের ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ৬ হাজার কোটি টাকা ১০০ দিনের কাজের পাওনা ছিল। বাংলায় বাড়ির টাকাও বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। মুর্শিদাবাদ নদী ভাঙন রোধে দায়িত্ব ছিল কেন্দ্রের। কাজ না করলে আমাদের টাকা ফেরত দাও, সাগরদিঘি থেকে হুঁশিয়ারি মমতার। কাজ করিয়ে টাকা দেয় না কেন্দ্র। নিজের পকেট থেকে টাকা দেয় না কেন্দ্র। কাজ না করতে পারলে, আমাদের টাকা আমাদের ফেরৎ দাও।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি যদি মনে করে ওরা নিজস্ব জমিদারি চালাবে তা হলে ভুল করবে। ক্ষমতা আছে বলে হিরো, আর না হলে বিগ জিরো। বিরোধী দলগুলি যেখানে ক্ষমতায় আছে, সেখানেই ভাতে মারার চেষ্টা। গণতন্ত্রকে বুলডোজ করার চেষ্টা, এবার শুনে রাখো তোমরা ক্লোজার হবে। এই সাগরদিঘির মাটি থেকে আমি বলছি।
আমি সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে কাজ করি। ৭০ লক্ষ মানুষ এবার গঙ্গা সাগরে এসেছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য কেন্দ্র গঙ্গা সাগরকে একটা পয়সাও দেয় না। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে, মমতার হুঙ্কার কিছু করতে হবে না, আমরাই করে নেব। তৃণমূল কংগ্রেস বাঘের বাচ্চার মতো লড়াই করতে জানে। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস মানুষকে ভালোবাসতে জানেন। একজন খারাপ হলেই সবাই খারাপ নয়। ফের দুর্নীতি ইস্যুতে সরব হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি কোনও ভুল করেন মানুষের কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিন। দেখবেন এতে আপনার ভালো হবে।
এদিন সাগরদিঘি থেকে গায়ক অরিজিৎ সিংয়ের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, অরিজিৎ খুব ভালো মনের মাটির মানুষ। ও (অরিজিৎ) আমাকে বলেছে, দিদি আমি জঙ্গিপুরে একটা হাসপাতাল করতে চাই। আমি বলেছি আমরা তোমার পাশে আছি।
এদিন ফের স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে চাইছে না। আমি ডিএমকে বলছি, এই ধরনের কাজ যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি করবে, তাদের হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করে দিন। মাটি মানুষের সরকার যেমন মানুষের পাশে দাঁড়াতে জানে, সেইভাবে প্রয়োজনে কঠোর হতেও জানে।
দিদির দূত কর্মসূচি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমস্যা থাকলে সমাধান হবে। আপনার জানান। এতগুলো কাজ যখন সরকার করেছে, বাকিগুলোও করবে সরকার। কিন্তু কেউ কুৎসায় কান দেবেন না।
উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৮৬ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেয়েছে, সাড়ে ৯ কোটি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেওয়া হয়েছে, ৯ কোটি খাদ্যসাথী দেওয়া হয়েছে, ৭২ কোটি অন্যান্য পরিষেবা পেয়েছে মানুষ। এদিন সাগরদিঘি থেকে মুর্শিদাবাদ থেকে সিরাজদৌল্লার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদের সকল মানুষকে সোচ্চার হোয়ার আহবান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বঞ্চনার বিরুদ্ধে আপনারা সোচ্চার হন, বলুন আমাদের টাকা ফেরত দাও, আমাদের বাঁচতে দাও।