১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওআইসি-র বৈঠকে কাশ্মীর ইস্যু তুললেন ইমরান, আফগানিস্তান ও ফিলিস্তিন নিয়ে বিশেষ আলোচনা

মাসুদ আলি
  • আপডেট : ২২ মার্চ ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 11

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : একদিকে আস্থাভোটে গদি হারাবার ভয় আর অপরদিকে সুযোগ পেয়ে বিশ্বনেতা হওয়ার যোগ্যতা প্রমাণে আবেগঘন বত্তৃ«তা ৫৭টি মুসলিম দেশের প্রতিনিধির সামনে। পাকিস্তানের পার্লামেন্ট হাউসের হলঘরে মুসলিম উম্মাহ ঐক্য নিয়ে মিনি রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনের প্রথম দিন নজর কাড়লেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান । ক’মাস আগে আফগানিস্তান নিয়ে ওআইসি সদস্যদের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক সফল হওয়ার পর আবার মুসলিম উম্মাহর ঐক্য নিয়ে পাকিস্তানে এই দ্বিতীয় বৈঠক সাড়া ফেলেছে আন্তর্জাতিক মহলে।

অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসির সদস্য ৫৭টি দেশের মধ্যে ৪৬টি দেশের বিদেশমন্ত্রীরা এসেছেন ইসলামাবাদে। বাকি দেশ তাদের সিনিয়র অফিসারদের পাঠিয়েছেন। এ ছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন রাষ্ট্রসংঘ, আরব লিগ, জিসিসি, রাশিয়া ফেডারেশান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন-এর প্রতিনিধিরা। আর বিশেষ আমন্ত্রিত রয়েছে চিন, কানাডা-সহ কয়েকটি দেশের বিদেশমন্ত্রীরাও। ওআইসির ৪৮তম বিদেশমন্ত্রীদের এই বৈঠকের মূল বিষয় মুসলিম উম্মাহর একতা, ইনসাফ ও উন্নয়ন।

উদ্বোধনী ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান তাঁর আবেগঘন বক্তৃতায় বলেন, ফিলিস্তিন-সহ আফগানিস্তান ও কাশ্মীরের মানুষদের দুর্দশা নিয়ে সমাধানে পৌঁছতে ওআইসি ব্যর্থ। ফিলিস্তিন জেরুসালেম ও আল-আকসা মুক্ত হয়নি, রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও কাশ্মীরে গণভোট হল না, আর আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসীদের গড় ভেবে সাজা দেওয়া হচ্ছে এ’নও। ওআইসি নীরব দর্শক। তবে ১৫ মার্চ রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্তে ইসলামোফোবিয়া দিবসের ঘোষণার প্রশংসা করে ইমরান  বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের সঙ্গে বিদ্বেষী আচরণ করা হচ্ছে, আক্রমণ করা হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে এই দিন ঘোষণা অনেকটা সাড়া ফেলেছে। তিনি বলেন, ইদানীং বহু মুসলিম দেশও মৌলবাদী মুসলিম, আধুনিক মুসলিম মধ্যপন্থী মুসলিম এই ধরনের বিভাজন শুরু করেছে, যার ফল হচ্ছে মারাত্মক।

ইসলাম বিদ্বেষীরা পশ্চিমাদের দেশে য’ন পথের উপর আক্রান্ত হচ্ছেন, ত’ন তাঁদের গায়ে লেগে থাকছে না তাঁরা কোন শ্রেণিভুক্ত। ফিলিস্তিন নিয়ে মুসলিম দেশও দ্বিধা বিভক্ত। আর এই বিভাজনের সুযোগ নিয়ে মুসলিম-বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে শক্তিধর দেশগুলো। তাদের ধারণা, ওআইসি কাগুজে বাঘ। এদের কোনও শক্তি নেই। ইমরান খান বলেন, এখন সময় এসেছে ওআইসি-কে বিশ্বের ১৫০ কোটি মুসলমানের সত্যকার প্রতিনিধিত্ব করতে হবে।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে আরব আমিরাতে ওআইসি-র বৈঠকে ভারতকে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল। তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সেই বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন। এবার চিনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সউদি আরবের বিদেশ মন্ত্রী প্রিন্স ফাইজাল বিন ফারহান এই বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা ঘোষণা করছি। সকলে মিলে ন্যায় ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে হবে। জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে এই আন্তর্জাতিক ফোরামে পাকিস্তানের মন্তব্য নিয়ে এখনও ভারতের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য জানা যায়নি। ইসলামাবাদে ওআইসির এই বৈঠক চলবে দু’দিন। এরপর পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে বিদেশি মেহমানরা উপস্থিত থাকবেন। ইসলামিক ডেভালপমেন্ট ব্যাংক, যারা আফগানিস্তান পুনর্গঠনে কিছুটা দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছে, সেই আইডিবি-র প্রধানও ইসলামাবাদে এসেছেন। আফগানিস্তান নিয়ে বিশেষ আলোচনার কর্মসূচি রয়েছে এই বৈঠকে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ওআইসি-র বৈঠকে কাশ্মীর ইস্যু তুললেন ইমরান, আফগানিস্তান ও ফিলিস্তিন নিয়ে বিশেষ আলোচনা

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : একদিকে আস্থাভোটে গদি হারাবার ভয় আর অপরদিকে সুযোগ পেয়ে বিশ্বনেতা হওয়ার যোগ্যতা প্রমাণে আবেগঘন বত্তৃ«তা ৫৭টি মুসলিম দেশের প্রতিনিধির সামনে। পাকিস্তানের পার্লামেন্ট হাউসের হলঘরে মুসলিম উম্মাহ ঐক্য নিয়ে মিনি রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনের প্রথম দিন নজর কাড়লেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান । ক’মাস আগে আফগানিস্তান নিয়ে ওআইসি সদস্যদের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক সফল হওয়ার পর আবার মুসলিম উম্মাহর ঐক্য নিয়ে পাকিস্তানে এই দ্বিতীয় বৈঠক সাড়া ফেলেছে আন্তর্জাতিক মহলে।

অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসির সদস্য ৫৭টি দেশের মধ্যে ৪৬টি দেশের বিদেশমন্ত্রীরা এসেছেন ইসলামাবাদে। বাকি দেশ তাদের সিনিয়র অফিসারদের পাঠিয়েছেন। এ ছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন রাষ্ট্রসংঘ, আরব লিগ, জিসিসি, রাশিয়া ফেডারেশান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন-এর প্রতিনিধিরা। আর বিশেষ আমন্ত্রিত রয়েছে চিন, কানাডা-সহ কয়েকটি দেশের বিদেশমন্ত্রীরাও। ওআইসির ৪৮তম বিদেশমন্ত্রীদের এই বৈঠকের মূল বিষয় মুসলিম উম্মাহর একতা, ইনসাফ ও উন্নয়ন।

উদ্বোধনী ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান তাঁর আবেগঘন বক্তৃতায় বলেন, ফিলিস্তিন-সহ আফগানিস্তান ও কাশ্মীরের মানুষদের দুর্দশা নিয়ে সমাধানে পৌঁছতে ওআইসি ব্যর্থ। ফিলিস্তিন জেরুসালেম ও আল-আকসা মুক্ত হয়নি, রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও কাশ্মীরে গণভোট হল না, আর আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসীদের গড় ভেবে সাজা দেওয়া হচ্ছে এ’নও। ওআইসি নীরব দর্শক। তবে ১৫ মার্চ রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্তে ইসলামোফোবিয়া দিবসের ঘোষণার প্রশংসা করে ইমরান  বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের সঙ্গে বিদ্বেষী আচরণ করা হচ্ছে, আক্রমণ করা হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে এই দিন ঘোষণা অনেকটা সাড়া ফেলেছে। তিনি বলেন, ইদানীং বহু মুসলিম দেশও মৌলবাদী মুসলিম, আধুনিক মুসলিম মধ্যপন্থী মুসলিম এই ধরনের বিভাজন শুরু করেছে, যার ফল হচ্ছে মারাত্মক।

ইসলাম বিদ্বেষীরা পশ্চিমাদের দেশে য’ন পথের উপর আক্রান্ত হচ্ছেন, ত’ন তাঁদের গায়ে লেগে থাকছে না তাঁরা কোন শ্রেণিভুক্ত। ফিলিস্তিন নিয়ে মুসলিম দেশও দ্বিধা বিভক্ত। আর এই বিভাজনের সুযোগ নিয়ে মুসলিম-বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে শক্তিধর দেশগুলো। তাদের ধারণা, ওআইসি কাগুজে বাঘ। এদের কোনও শক্তি নেই। ইমরান খান বলেন, এখন সময় এসেছে ওআইসি-কে বিশ্বের ১৫০ কোটি মুসলমানের সত্যকার প্রতিনিধিত্ব করতে হবে।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে আরব আমিরাতে ওআইসি-র বৈঠকে ভারতকে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল। তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সেই বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন। এবার চিনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সউদি আরবের বিদেশ মন্ত্রী প্রিন্স ফাইজাল বিন ফারহান এই বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা ঘোষণা করছি। সকলে মিলে ন্যায় ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে হবে। জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে এই আন্তর্জাতিক ফোরামে পাকিস্তানের মন্তব্য নিয়ে এখনও ভারতের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য জানা যায়নি। ইসলামাবাদে ওআইসির এই বৈঠক চলবে দু’দিন। এরপর পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে বিদেশি মেহমানরা উপস্থিত থাকবেন। ইসলামিক ডেভালপমেন্ট ব্যাংক, যারা আফগানিস্তান পুনর্গঠনে কিছুটা দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছে, সেই আইডিবি-র প্রধানও ইসলামাবাদে এসেছেন। আফগানিস্তান নিয়ে বিশেষ আলোচনার কর্মসূচি রয়েছে এই বৈঠকে।