নয়াদিল্লি, ১১ ফেব্রুয়ারিঃ তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। সাংসদ। জেলে থাকাকালীন জোরালো আবেদন করেছিলেন প্যারলের জন্য, যাতে সংসদে বক্তব্য রাখতে পারেন। আপ্রাণ চেয়েছিলেন সংসদের মতো জায়গায় নিজের মতামত ব্যক্ত করতে। আদালত তাঁর প্যারল মঞ্জুর করতেই মঙ্গলবার সংসদে কাশ্মীর ইস্যুতে কার্যত ঝড় তুললেন বারামুল্লাহর নির্দল সাংসদ ফারুক ইঞ্জিনিয়ার।
সরব হলেন কাশ্মীরে নিরীহ সাধারণ মানুষদের হত্যার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি, জম্মু-কাশ্মীরে দু’জন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়টি এদিন সংসদে তুলে ধরেন রশিদ। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেন তিনি। সংসদে জিরো আওয়ারে বিষয়টি উত্থাপন করেন রশিদ। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, উপত্যকার দুই বেসামরিক নাগরিক ওয়াশিম আহমেদ মির ও মাখান দিনকে বাহিনী হত্যা করেছে।
এই হত্যার ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করা হোক। তিনি বলেন, ‘হামারা খুন সস্তা নেহি হ্যায়’ (আমাদের রক্ত সস্তা নয়)। উল্লেখ্য, রশিদকে দিল্লি হাইকোর্ট সোমবার প্যারল মঞ্জুর করে। হাইকোর্ট তাঁকে ১১ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে যাওযার অনুমতি দেয়। সেইমতো এদিন সংসদে আসেন রশিদ। বৃহস্পতিবারও রশিদ সংসদে বক্তব্য পেশের সুযোগ পেলে সেখানেও তিনি কাশ্মীর ইস্যুতে ফের জোরালো আওয়াজ তুলবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, সেই ২০১৯ সাল থেকে তিহার জেলে বন্দি ইঞ্জিনিয়ার রশিদ। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে অর্থ যোগান দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। সম্প্রতি, মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছিল, জম্মু-কাশ্মীরে মানবাধিকার ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। সাংবাদিক, সমাজকর্মীদের পর্যন্ত রেয়াত করা হচ্ছে না। তাদের অফিস, বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আটক করা হচ্ছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করছে।
২০১৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৬জন সাংবাদিককে জেরা করা হয়েছে তাদের রিপোটিংয়ের কারণে। এই প্রসঙ্গে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে আকার প্যাটেল বলেন, নিরাপত্তাজনিত অভিযানের নামে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরাই ভয়ংকর সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। নির্যাতিন, ধর্ষণ, বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দোষীরা শাস্তি পাচ্ছে না। এদিন রশিদের মন্তব্য বিখ্যাত মানবাধিকার সংগঠন ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’-এর বক্তব্যকেই আরও একবার মান্যতা দিল।