২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৮৭ দিন অনশনের পর মারা গেলেন ফিলিস্তিনি বন্দি আদনান

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৩ মে ২০২৩, বুধবার
  • / 9

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক:ইসরাইলি সহিংতার বিরুদ্ধে টানা ৮৭ দিনের অনশনের পর মারা গেছেন ৪৫ বছর বয়সি ফিলিস্তিনি বন্দি খাদের আদনান। মঙ্গলবার সকালে খাদের আদনানকে কারাকক্ষে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যাওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর খবর প্রচার করে। কোনও অভিযোগ গঠন বা বিচার ছাড়াই ফিলিস্তিনি বন্দিদের আটক রাখাসহ নানা অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে তিনি প্রায় তিন মাস ধরে অনশন করছিলেন তিনি।

অনশনরত এই বন্দির মুক্তির জন্য বারবার আবেদন জানানো হলেও ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। পশ্চিম তীরের জেনিনের বাসিন্দা খাদের আদনান ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন ইসলামি জিহাদ- এর সদস্য ছিলেন। এ কারণে এর আগেও অন্তত ১১ বার গ্রেফতার হয়েছেন তিনি।

ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটি জানিয়েছে, এবারও বিনা অভিযোগে তাকে আটক করে দখলদার ইসরাইল। এর প্রতিবাদ জানিয়ে টানা ৮৭ দিন খাদ্য গ্রহণে বিরত ছিলেন তিনি। খাদের আদনানের সংগঠন ইসলামি জিহাদ বলেছে, আদনানের মৃত্যুর দায় পুরোপুরি ইসরাইলের। ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের মহাসচিব জিয়াদ আন নাখালা বলেছেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে জিহাদ অব্যাহত থাকবে। খাদের আদনানের মতো মানুষেরা আছে বলেই আজও ফিলিস্তিনিদের স্বপ্ন বেঁচে আছে। ইসরাইলি জুলুমের বিরুদ্ধে এদিন ফিলিস্তিনিরা মিছিলও করেন। তাতে ব্যাপক সাড়া মেলে। মিছিলের প্রতিবাদে অংশ নেন খাদেরের ছেলে আলি।

নিঃসন্দেহে তার এই আত্মত্যাগ অন্য ফিলিস্তিনিদের জন্যও শক্তি ও সাহস যোগাবে। খাদের আদনানের স্ত্রী বলেছেন, তার স্বামী ন্যায়ের পথে শহিদ হয়েছেন, এ জন্য তিনি গর্বিত। দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বামীর লাশ ফেরত দিতে দখলদার ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এই সাহসী নারী।

এপ্রিল মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দখলদার ইসরাইলের কারাগারে চার হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি আটক রয়েছেন। এর মধ্যে এক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। বিনা অভিযোগে ধরে এনে তাদের আটকে রাখা হয়েছে। এমন বন্দিদের তালিকায় নারী এবং শিশুও রয়েছে।

নানা উপায়ে হত্যা-নির্যাতনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভয়-ভীতি ছড়ানোর ইসরাইলি কৌশল পুরনো। কিন্তু তাদের এই কৌশল কাজে আসেনি। সব নির্মমতা ভেদ করে ন্যায় ও মুক্তির পথে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম ক্রমেই আরও জোরদার হচ্ছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর ভাষায়, এসবের অপকর্মের মাধ্যমে দখলদার ইসরাইল নিজের ধ্বংস তরান্বিত করছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৮৭ দিন অনশনের পর মারা গেলেন ফিলিস্তিনি বন্দি আদনান

আপডেট : ৩ মে ২০২৩, বুধবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক:ইসরাইলি সহিংতার বিরুদ্ধে টানা ৮৭ দিনের অনশনের পর মারা গেছেন ৪৫ বছর বয়সি ফিলিস্তিনি বন্দি খাদের আদনান। মঙ্গলবার সকালে খাদের আদনানকে কারাকক্ষে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যাওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর খবর প্রচার করে। কোনও অভিযোগ গঠন বা বিচার ছাড়াই ফিলিস্তিনি বন্দিদের আটক রাখাসহ নানা অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে তিনি প্রায় তিন মাস ধরে অনশন করছিলেন তিনি।

অনশনরত এই বন্দির মুক্তির জন্য বারবার আবেদন জানানো হলেও ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। পশ্চিম তীরের জেনিনের বাসিন্দা খাদের আদনান ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন ইসলামি জিহাদ- এর সদস্য ছিলেন। এ কারণে এর আগেও অন্তত ১১ বার গ্রেফতার হয়েছেন তিনি।

ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটি জানিয়েছে, এবারও বিনা অভিযোগে তাকে আটক করে দখলদার ইসরাইল। এর প্রতিবাদ জানিয়ে টানা ৮৭ দিন খাদ্য গ্রহণে বিরত ছিলেন তিনি। খাদের আদনানের সংগঠন ইসলামি জিহাদ বলেছে, আদনানের মৃত্যুর দায় পুরোপুরি ইসরাইলের। ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের মহাসচিব জিয়াদ আন নাখালা বলেছেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে জিহাদ অব্যাহত থাকবে। খাদের আদনানের মতো মানুষেরা আছে বলেই আজও ফিলিস্তিনিদের স্বপ্ন বেঁচে আছে। ইসরাইলি জুলুমের বিরুদ্ধে এদিন ফিলিস্তিনিরা মিছিলও করেন। তাতে ব্যাপক সাড়া মেলে। মিছিলের প্রতিবাদে অংশ নেন খাদেরের ছেলে আলি।

নিঃসন্দেহে তার এই আত্মত্যাগ অন্য ফিলিস্তিনিদের জন্যও শক্তি ও সাহস যোগাবে। খাদের আদনানের স্ত্রী বলেছেন, তার স্বামী ন্যায়ের পথে শহিদ হয়েছেন, এ জন্য তিনি গর্বিত। দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বামীর লাশ ফেরত দিতে দখলদার ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এই সাহসী নারী।

এপ্রিল মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দখলদার ইসরাইলের কারাগারে চার হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি আটক রয়েছেন। এর মধ্যে এক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। বিনা অভিযোগে ধরে এনে তাদের আটকে রাখা হয়েছে। এমন বন্দিদের তালিকায় নারী এবং শিশুও রয়েছে।

নানা উপায়ে হত্যা-নির্যাতনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভয়-ভীতি ছড়ানোর ইসরাইলি কৌশল পুরনো। কিন্তু তাদের এই কৌশল কাজে আসেনি। সব নির্মমতা ভেদ করে ন্যায় ও মুক্তির পথে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম ক্রমেই আরও জোরদার হচ্ছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর ভাষায়, এসবের অপকর্মের মাধ্যমে দখলদার ইসরাইল নিজের ধ্বংস তরান্বিত করছে।