সংসদীয় কমিটির তলবে ‘সুপ্রিম’ স্থগিতাদেশ, সাময়িক স্বস্তি রাজ্যের ৫ আমলার

- আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, সোমবার
- / 10
মোল্লা জসিমউদ্দিন: সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে সন্দেশখালিতে সুকান্ত-ইস্যুতে সংসদীয় কমিটির তলবকে চ্যালেঞ্জ করে কিছুটা আইনী স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার। সংসদীয়-শুনানিতে আপাতত স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিনকার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সব পক্ষকে নোটিস ইস্যু করার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে হবে সব পক্ষকে।
উল্লেখ্য, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালিকাণ্ডে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার টাকিতে পুলিশের ঘেরাটোপের মুখে পড়েছিলেন। বিজেপির তরফে পুলিশের সঙ্গে সুকান্তের সেই ধ্বস্তাধ্বস্তিকে ‘হামলা’ বলে চিহ্নিত করা হয়। শুধু তাই নয়, সেই ঘটনার জেরে রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা সহ ৫ আধিকারিককে ডেকে পাঠিয়েছে লোকসভার স্বাধিকার কমিটি।মুখ্যসচিব ছাড়াও ডেকে পাঠানো হয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী, বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান এবং বসিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষকে। তাঁদের সবাইকে সোমবার অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় কমিটির সদস্যদের মুখোমুখি হতে বলা হয়েছিল। যদিও তার আগেই এদিনই ওই ৫ আধিকারিক সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন এই ঘটনা নিয়ে। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সংসদীয় কমিটির তলবের ওপর স্থগিতাদেশ দিল। সোমবার এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল ও আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। রাজ্যের পাঁচ প্রশাসনিক কর্তা সংসদীয় কমিটির তলবে সাড়া দেবেন কিনা? তা নিয়ে তীব্র চাপানউতোর ছিল। গত রবিবার রাত পর্যন্ত রাজ্য প্রশাসনের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো না হয়নি। এদিনের শুনানিতে তাঁদের তরফে আর্জি জানানো হয় যে, ‘সংসদীয় কমিটি দিন বদলের আর্জি মানলে সমস্যা থাকবে না। কেননা আগামী ৪ মার্চ রাজ্যে আসছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও কমিশন-কর্তারা রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ৫ মার্চ জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা তাঁদের। ৬ মার্চ মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি, এডিজির (আইনশৃঙ্খলা) সঙ্গে ভোট-প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক হতে পারে ফুল বেঞ্চের। তার আগে প্রস্তুতি সেরে ফেলতে হবে। তার ওপরে চলছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার নজরদারিতেও ব্যস্ত আছেন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারেরা। এই অবস্থায় এদিনই হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়’।
স্বাধিকার কমিটির ডাক পুরোপুরি না এড়িয়ে দিন বদলের প্রস্তাব দিয়েছে। কেননা সংসদের স্বাধিকার কমিটির ক্ষমতা যথেষ্ট। তাঁরা বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জানিয়েই লিখিত ভাবে ডেকে পাঠিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বেতনভুক কর্মী হিসেবে এ রাজ্যে কর্মরত সব আইএএস ও আইপিএস আধিকারিকদের এই ডাক তাই অগ্রাহ্য করা খুবই কঠিন। তাই এদিন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও রাজ্যের মুখ্যসচিব সহ ৫ আধিকারিক কিন্তু কেউই জানাননি যে তাঁরা যাবেন না। বরঞ্চ তাঁরা একযোগে দিন বদলের আর্জি জানিয়েছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তাই সুপ্রিম কোর্টও স্বাধিকার কমিটির নোটিসের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে এদিন। সুপ্রিম কোর্টের তরফে এদিন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।চার সপ্তাহ পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।