নয়াদিল্লি, ১০ ফেব্রুয়ারি: মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন এন বীরেন সিং। রবিবার মণিপুরের রাজ্যপালকে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তাঁর ইস্তফা দেওয়ার একদিন পর এবার বীরেন সিংকে তীব্র কটাক্ষ করলেন কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাজ্যজুড়ে হিংসার জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রীই। তাঁর আরও আগে পদত্যাগ করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা। এদিন চিদাম্বরম বলেছেন, আরও আগে পদত্যাগ করা উচিত ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। বীরেন সিংয়ের কারণেই রাজ্যে হিংসা ছড়িয়েছে। সহিংসতার জন্য তিনিই দায়ী।
উল্লেখ্য, গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে অশান্ত মণিপুর। ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সেই রাজ্যের পরিস্থিতি। তারপর থেকে বিভিন্ন সময় দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতেও হামলা হয়। রাজ্যের পাঁচ জেলায় কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। সোমবার কটাক্ষের সুরে কংগ্রেস নেতা বলেন, “রাজ্যে যখন কংগ্রেসের সরকার ছিল, তখন মণিপুরের মানুষ শান্তি ও উন্নয়ন দেখেছে। এতদিন সেখানে ডবল-ইঞ্জিন সরকার চলছিল। আর রাজ্যে হিংসার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে কংগ্রেসের ঘাড়ে দায় চাপান তিনি। একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীই ছিলেন হিংসা ছড়ানোর কারিগর। আমি খুশি যে তিনি পদত্যাগ করেছেন। আশা করি এবার মণিপুরে শান্তি ফিরবে।”
Read More: সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে ইঞ্জিনিয়ার রাশিদকে দুদিনের প্যারোলে মুক্তি দিল দিল্লি হাইকোর্ট
প্রসঙ্গত, গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে জাতিহিংসায় উত্তপ্ত উত্তরপূর্বের রাজ্য মণিপুর। কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়া অসংখ্য মানুষ। কোনও অবস্থাতেই ফিরছে না শান্তি। এই আবহে এবার পদত্যাগ করলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। রবিবার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লার হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্রও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরেই ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন বীরেন। পদত্যাগপত্রে বীরেন লিখেছেন, ‘এতদিন মণিপুরের মানুষের সেবা করতে পেরেছি, এটা আমার কাছে সম্মানের। মণিপুরবাসীর স্বার্থে সময়োপযোগী পদক্ষেপ করা এবং নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ আমি।’
যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন বীরেন সিং। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। কুকি-জো বিধায়কদের পাশাপাশি মেইতেই বিধায়করাও তাঁর ইস্তফার দাবিতে সরব হয়েছিলেন। এমনকী বিজেপি বিধায়কদের অনেকেই তাঁকে আর মুখ্যমন্ত্রী পদে চাইছিলেন না বলে খবর। ফলে দলের অভ্যন্তরে ও বাইরে চাপের সন্মুখীন হতে হচ্ছিল বীরেনকে। এই আবহে ৯ ফেব্রুয়ারি আচমকা ইস্তফা দিলেন তিনি।