নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: অকাল বৃষ্টিতে মাথায় হাত চাষিদের। বৃহস্পতিবার প্রবল ঝড়-বৃষ্টি এবং কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টির কারণে হুগলি ও আশপাশের জেলার আলু চাষিরা পড়ল বিপাকে। অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে কোথাও জল জমে গেছে, আবার কোথাও আলুর গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও যেসব এলাকায় শিলা বৃষ্টি হয়নি, সেখানে বৃষ্টির কারণে ফলন কিছুটা ভালো হতে পারে বলে আশা করছেন কৃষকদের একাংশ।
এ বছর হুগলিতে প্রচুর আলু উৎপাদন হয়েছে, যার কারণে দামের পতন হয়েছে। কৃষকরা কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছিলেন, ফলে আগেই লোকসানের মুখে পড়েছেন। এর মধ্যেই অকাল বৃষ্টির কারণে অনেক জমির আলু মাটির উপরে বেরিয়ে পড়েছে এবং পচে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হল, যা ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
রাজ্যের হিমঘরগুলিতে ১ মার্চ থেকে আলু সংরক্ষণ শুরু হবে, কিন্তু অধিক উৎপাদনের ফলে সংরক্ষণের জায়গা নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। রাজ্য সরকার কিছু আলু কিনে সুফল বাংলার মাধ্যমে বিক্রি করলেও, তা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে না বলে মনে করছেন কৃষকরা।
জেলার চাষিদের কথায়, এক বিঘা জমিতে আলু চাষে ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কৃষকদের অনেকেই ব্যাংক বা মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছেন। দুর্যোগের কারণে আলু নষ্ট হলে তারা ঋণ শোধ করতে পারবেন না, ফলে আর্থিক সংকটে পড়তে পারে কৃষকরা।
অনেক কৃষক মনে করছেন, দুর্যোগ ও নিম্ন আলুর দাম তাদের আর্থিক পরিস্থিতিকে আরও দুর্বল করে দেবে। আলু চাষে বিনিয়োগ করা টাকা উঠে না এলে ঋণের দায়ে কৃষকরা বড় সংকটে পড়বেন। কৃষকরা সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য, ঋণ মওকুফ এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন। সরকার তৎপরতা না দেখালে কৃষকদের দুর্দশা আরও বাড়বে বলে মনে করছে অনেকে।