২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত সরকারের উদ্যোগে ইরানের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে হায়দরাবাদের নিজামের ‘ফরমান’ বই আকারে প্রকাশ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৪ মার্চ ২০২৩, শনিবার
  • / 10

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মীর ওসমান আলি খান ছিলেন হায়দরাবাদের সপ্তম নিজাম। অনেকের মতে, তৎকালীন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তাঁর মোট সম্পদের অঙ্ক অবাক করার মতো। বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির হিসাবে তাঁর প্রায় ২৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট সম্পদ ছিল। ফলে এখনকার দিনের সঙ্গে তুলনা করলে ইলন মাস্ক, বার্নার্ড আর্নল্ট, জেফ বেজোসদের টেক্কা দিতে পারতেন তিনি। ১৯৬৭ সালে ৮০ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। এবার হায়দরাবাদের সপ্তম নিজামের শাসনকাল, গৌরব, ঐতিহ্য পরবর্তী প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এক বিশেষ উদ্যোগ নিল ইরান ও ভারত সরকার।

হায়দরাবাদে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত ডা. ইরাজুল্লাহ রাজ্যের সপ্তম নিজাম মীর ওসমান আলি খানের সরকারি ফরমানের প্রতিলিপি বই আকারে প্রকাশ করলেন। এই প্রথম এটি প্রকাশ করা হল। হায়দরাবাদে রাজ্যের আর্কাইভে এটি স্থান পাবে। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে ইরানের রাষ্ট্রদূত ডা. ইরাজুল্লাহ’র সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইরানের কাউন্সিল জেনারেল মেহেদি শাহরুখী।

ইরান সরকারের উদ্যোগে ফার্সি ভাষায় দিল্লিতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক নূর মাইক্রোফিল্ম সেন্টার (এনএমআইসি) পুরনো আর্কাইভাল রেকর্ডের ডিজিটাইজেশন, সংরক্ষণ এবং তালিকাভুক্তির কাজ শুরু করেছে। রাষ্ট্রদূত এবং ইরানের কাউন্সিল জেনারেল স্টেট আর্কাইভস প্রাঙ্গণে স্থাপিত সংরক্ষণ ও ডিজিটাইজেশনের জন্য নির্মিত অত্যাধুনিক সরঞ্জাম তৈরি এই ইউনিটটি পরিদর্শণ করেন।

রাষ্ট্রদূত ডা. ইরাজুল্লাহ বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক সবসময়ই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশের মধ্যে অনেক সাংস্কৃতিক বিনিময় হয়েছে। যেহেতু ফার্সি আমাদের জাতীয় ভাষা, আমরা ভারতে ফার্সি ভাষার ঐতিহ্যকে বাঁচাতে আগ্রহী, যেটি একসময় এই দেশেরও জাতীয় ভাষা ছিল।’

রাজ্যের আর্কাইভ ডিরেক্টর ডা. জারিনা পরভীন জানিয়েছেন, ‘১৪০৬ খ্রীস্টাব্দের আগের ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কয়েকমিলিয়ন রেকর্ড ফার্সি ভাষায় সংরক্ষিত আছে। হায়দরাবাদের গৌরময় ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য এগুলো ভালোভাবে সুরক্ষিত করা খুব প্রয়োজন। এই সমস্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নূর মাইক্রোফিল্ম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারকে (এনএমআইসি)।

ডা. জারিনা পরভীন রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন যে, এখনও পর্যন্ত দাফতার-দারুল ইনশা, চুক্তি, পাণ্ডুলিপি (হস্তলিখিত) বই, আওয়ারজাস (লেজার), বাবা শাহ মুসাফির (হায়দ্রাবাদের একজন সুফি সাধক) সম্পর্কিত পুরনো ফার্সি রেকর্ডের তিন লক্ষ পৃষ্ঠা, (ডেকান) এবং ইনায়েত নামা (চিঠি),ষষ্ঠ ও সপ্তম নিজামের ফরমান (রাজকীয় আদেশ) সংরক্ষিত করেছে। ক্ষতি হওয়া রেকর্ডগুলিকেও মেরামত করা হচ্ছে। নিজাম সরকারের ১৪টি দফতর ছিল যেগুলো ফরমান, মুনতাখাব, পুরনো মানচিত্র এবং গেজেট ছাড়াও উল্লিখিত কাজের জন্য নেওয়া হবে।

এনএমআইসি ডিরেক্টর আরও জানিয়েছেন, তারা স্টেট আর্কাইভসকে অনুরোধ করেছেন যে ষষ্ঠ ও সপ্তম নিজামের ফরমানগুলির ৩৫৫টি বই সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বইগুলি ব্যবহারের জন্য প্রতিলিপি আকারে প্রকাশ করতে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভারত সরকারের উদ্যোগে ইরানের রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতিতে হায়দরাবাদের নিজামের ‘ফরমান’ বই আকারে প্রকাশ

আপডেট : ৪ মার্চ ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মীর ওসমান আলি খান ছিলেন হায়দরাবাদের সপ্তম নিজাম। অনেকের মতে, তৎকালীন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তাঁর মোট সম্পদের অঙ্ক অবাক করার মতো। বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির হিসাবে তাঁর প্রায় ২৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট সম্পদ ছিল। ফলে এখনকার দিনের সঙ্গে তুলনা করলে ইলন মাস্ক, বার্নার্ড আর্নল্ট, জেফ বেজোসদের টেক্কা দিতে পারতেন তিনি। ১৯৬৭ সালে ৮০ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। এবার হায়দরাবাদের সপ্তম নিজামের শাসনকাল, গৌরব, ঐতিহ্য পরবর্তী প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এক বিশেষ উদ্যোগ নিল ইরান ও ভারত সরকার।

হায়দরাবাদে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত ডা. ইরাজুল্লাহ রাজ্যের সপ্তম নিজাম মীর ওসমান আলি খানের সরকারি ফরমানের প্রতিলিপি বই আকারে প্রকাশ করলেন। এই প্রথম এটি প্রকাশ করা হল। হায়দরাবাদে রাজ্যের আর্কাইভে এটি স্থান পাবে। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে ইরানের রাষ্ট্রদূত ডা. ইরাজুল্লাহ’র সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইরানের কাউন্সিল জেনারেল মেহেদি শাহরুখী।

ইরান সরকারের উদ্যোগে ফার্সি ভাষায় দিল্লিতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক নূর মাইক্রোফিল্ম সেন্টার (এনএমআইসি) পুরনো আর্কাইভাল রেকর্ডের ডিজিটাইজেশন, সংরক্ষণ এবং তালিকাভুক্তির কাজ শুরু করেছে। রাষ্ট্রদূত এবং ইরানের কাউন্সিল জেনারেল স্টেট আর্কাইভস প্রাঙ্গণে স্থাপিত সংরক্ষণ ও ডিজিটাইজেশনের জন্য নির্মিত অত্যাধুনিক সরঞ্জাম তৈরি এই ইউনিটটি পরিদর্শণ করেন।

রাষ্ট্রদূত ডা. ইরাজুল্লাহ বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক সবসময়ই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশের মধ্যে অনেক সাংস্কৃতিক বিনিময় হয়েছে। যেহেতু ফার্সি আমাদের জাতীয় ভাষা, আমরা ভারতে ফার্সি ভাষার ঐতিহ্যকে বাঁচাতে আগ্রহী, যেটি একসময় এই দেশেরও জাতীয় ভাষা ছিল।’

রাজ্যের আর্কাইভ ডিরেক্টর ডা. জারিনা পরভীন জানিয়েছেন, ‘১৪০৬ খ্রীস্টাব্দের আগের ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কয়েকমিলিয়ন রেকর্ড ফার্সি ভাষায় সংরক্ষিত আছে। হায়দরাবাদের গৌরময় ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য এগুলো ভালোভাবে সুরক্ষিত করা খুব প্রয়োজন। এই সমস্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নূর মাইক্রোফিল্ম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারকে (এনএমআইসি)।

ডা. জারিনা পরভীন রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন যে, এখনও পর্যন্ত দাফতার-দারুল ইনশা, চুক্তি, পাণ্ডুলিপি (হস্তলিখিত) বই, আওয়ারজাস (লেজার), বাবা শাহ মুসাফির (হায়দ্রাবাদের একজন সুফি সাধক) সম্পর্কিত পুরনো ফার্সি রেকর্ডের তিন লক্ষ পৃষ্ঠা, (ডেকান) এবং ইনায়েত নামা (চিঠি),ষষ্ঠ ও সপ্তম নিজামের ফরমান (রাজকীয় আদেশ) সংরক্ষিত করেছে। ক্ষতি হওয়া রেকর্ডগুলিকেও মেরামত করা হচ্ছে। নিজাম সরকারের ১৪টি দফতর ছিল যেগুলো ফরমান, মুনতাখাব, পুরনো মানচিত্র এবং গেজেট ছাড়াও উল্লিখিত কাজের জন্য নেওয়া হবে।

এনএমআইসি ডিরেক্টর আরও জানিয়েছেন, তারা স্টেট আর্কাইভসকে অনুরোধ করেছেন যে ষষ্ঠ ও সপ্তম নিজামের ফরমানগুলির ৩৫৫টি বই সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বইগুলি ব্যবহারের জন্য প্রতিলিপি আকারে প্রকাশ করতে।