পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের পথ খোঁজার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সউদি আরবে বৈঠক করতে পারেন তিনি। এরপর অনেকের মনেই যে প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে তা হল , তিনি কেন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ সম্মেলনের সম্ভাব্য স্থান হিসাবে উপসাগরীয় দেশটিকে বেছে নিলেন। ট্রাম্প অবশ্য বৈঠকের নির্দিষ্ট তারিখ জানাননি, তবে এটি শিগগিরই হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। রবিবার রাতে এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প আর সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদমির পুতিনের সরকার তা মেনেও নিল।
ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মঙ্গলবার সউদি আরবে দু’পক্ষের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি স্তরের বৈঠক হবে। এই শান্তি আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি ইউক্রেনকে। ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন সেদেশের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পুতিনের মনোভাব ‘ইতিবাচক’ বলেও দাবি করেছন ট্রাম্প। পুতিন পুরো ইউক্রেনের দখল নিতে চান বলে ট্রাম্প মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটা তাঁর কাছে আমারও প্রশ্ন। তিনি যদি এমনটা করেন, তবে আমি অনেক বড় সমস্যার মধ্যে পড়ে যাব। আমি মনে করি, তিনি এর অবসান চান এবং তাঁরা দ্রুতই এটা শেষ করতে চান।’ পুতিন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি লড়াই বন্ধ করতে চান।’
এদিকে ইউক্রেনে মস্কোর প্রায় তিন বছরের যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমেরিকার বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও-র পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জল্পনা রয়েছে। রুবিও এখন সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (ইউএই)-তে রয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। পরে শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরুর নির্দেশ দেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় এই যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
এয়ার ফোর্স ওয়ানে ফ্লাইটের পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তাদের একটি বড় শক্তি আছে, আপনি তা বুঝতে পারেন। তারা হিটলার এবং নেপোলিয়নকে পরাজিত করেছিল। তারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছে, আগেও করেছে। কিন্তু আমি মনে করি সে যুদ্ধ তারা বন্ধ করতে চাইবে।
গত বছর আমেরিকায় নির্বাচনের প্রচারপর্বে ফিলাডেলফিয়ায় প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে ট্রাম্প বলেছিলেন, তআমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেব।’’ নভেম্বরে ভোটে জেতার পরে যুদ্ধ থামাতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছিলেন প্রবীণ রিপাবলিকান নেতা। ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের ব্যক্তিগত সমীকরণ ‘মসৃণ’। সেই সূত্র ধরেই ইউক্রেনে শান্তির পথ খুলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
এদিকে ট্রাম্পের রাশিয়ার কাছাকাছি যাওয়া এবং সউদিতে অনুষ্ঠিত হতে চলা আলোচনায় ইউক্রেন-ইউরোপকে না রাখার পর জেলেনস্কি ও ইইউ নেতাদের উদ্বেগ বেড়েছে। ফলশ্রুতিতে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার জন্য জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ইউরোপীয় নেতারা। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এই সম্মেলনের আয়োজক ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। শীর্ষ সম্মেলনের আগে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, তিনি যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইউক্রেনে ব্রিটিশ সেনা পাঠাতে প্রস্তুত এবং ইচ্ছুক।