১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রখ্যাত পাকিস্তানি অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ ও স্কলার খুরশিদ আহমদের ইন্তেকাল

চামেলি দাস
  • আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
  • / 37

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও জামাআতে ইসলামি (জেআই)-এর সাবেক নায়েবে আমীর প্রফেসর খুরশিদ আহমদ রবিবার যুক্তরাজ্যের লেস্টারে ৯২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক সেনেটর ও বাণিজ্য এবং পরিকল্পনা বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

১৯৮৫, ১৯৯৭ ও ২০০২ সালে তিনি পাকিস্তান সেনেটের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৮ সালে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি, তিনি পরিকল্পনা কমিশনের উপ-চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি ইসলামাবাদের ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের লেস্টারে অবস্থিত দ্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, যা তিনি খুররম মুরাদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ফাউন্ডেশনটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

প্রফেসর খুরশিদ আহমদ ইসলামি অর্থনীতির তাত্ত্বিক কাঠামো গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং এই শাখাকে একটি স্বতন্ত্র একাডেমিক ডিসিপ্লিন হিসেবে প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। তিনি ইংরেজি ও উর্দুতে মোট ৭০টি গ্রন্থ রচনা করেন এবং জামাআতে ইসলামীর মুখপত্র ‘তারজুমানুল কোরআন’-এর সম্পাদক ছিলেন।

তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি নিসান-ই-ইমতিয়াজ, সউদি আরবের শাহ ফয়সাল অ্যাওয়ার্ড, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পুরস্কারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনমিক্স ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং জেদ্দার শাহ আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

প্রফেসর খুরশিদ আহমদের জন্ম ১৯৩২ সালের ২৩ মার্চ, ভারতের নয়াদিল্লিতে। তিনি  অর্থনীতি ও ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৪৯ সালে তিনি ইসলামি ছাত্র সংগঠন ইসলামি জামিয়াতে তালাবার সঙ্গে যুক্ত হন এবং ১৯৫৬ সালে জামাআতে  ইসলামিতে যোগ দেন। তিনি প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ড. আনিস আহমদের বড় ভাই।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, সিনেট চেয়ারম্যান ও উপ-চেয়ারম্যান, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আহসান ইকবাল, জামাআতে ইসলামীর আমীর হাফিজ নাঈমুর রেহমান সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও শিক্ষামহল তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ইসলামী গবেষণা, অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে তার অবদানের জন্য তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়েছে।

তার বুদ্ধিবৃত্তিক অবদান, নীতিনির্ধারণী পরামর্শ ও ইসলামিক মূল্যবোধভিত্তিক জ্ঞানের অনুশীলন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

প্রখ্যাত পাকিস্তানি অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ ও স্কলার খুরশিদ আহমদের ইন্তেকাল

আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও জামাআতে ইসলামি (জেআই)-এর সাবেক নায়েবে আমীর প্রফেসর খুরশিদ আহমদ রবিবার যুক্তরাজ্যের লেস্টারে ৯২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক সেনেটর ও বাণিজ্য এবং পরিকল্পনা বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

১৯৮৫, ১৯৯৭ ও ২০০২ সালে তিনি পাকিস্তান সেনেটের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৮ সালে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি, তিনি পরিকল্পনা কমিশনের উপ-চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি ইসলামাবাদের ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের লেস্টারে অবস্থিত দ্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, যা তিনি খুররম মুরাদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ফাউন্ডেশনটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

প্রফেসর খুরশিদ আহমদ ইসলামি অর্থনীতির তাত্ত্বিক কাঠামো গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং এই শাখাকে একটি স্বতন্ত্র একাডেমিক ডিসিপ্লিন হিসেবে প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। তিনি ইংরেজি ও উর্দুতে মোট ৭০টি গ্রন্থ রচনা করেন এবং জামাআতে ইসলামীর মুখপত্র ‘তারজুমানুল কোরআন’-এর সম্পাদক ছিলেন।

তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি নিসান-ই-ইমতিয়াজ, সউদি আরবের শাহ ফয়সাল অ্যাওয়ার্ড, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পুরস্কারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনমিক্স ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং জেদ্দার শাহ আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

প্রফেসর খুরশিদ আহমদের জন্ম ১৯৩২ সালের ২৩ মার্চ, ভারতের নয়াদিল্লিতে। তিনি  অর্থনীতি ও ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৪৯ সালে তিনি ইসলামি ছাত্র সংগঠন ইসলামি জামিয়াতে তালাবার সঙ্গে যুক্ত হন এবং ১৯৫৬ সালে জামাআতে  ইসলামিতে যোগ দেন। তিনি প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ড. আনিস আহমদের বড় ভাই।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, সিনেট চেয়ারম্যান ও উপ-চেয়ারম্যান, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আহসান ইকবাল, জামাআতে ইসলামীর আমীর হাফিজ নাঈমুর রেহমান সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও শিক্ষামহল তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ইসলামী গবেষণা, অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে তার অবদানের জন্য তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়েছে।

তার বুদ্ধিবৃত্তিক অবদান, নীতিনির্ধারণী পরামর্শ ও ইসলামিক মূল্যবোধভিত্তিক জ্ঞানের অনুশীলন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।