২৫ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
BRAKING :
তুরস্কে ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলার করুণ চিত্র

ইমামা খাতুন
- আপডেট : ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, বৃহস্পতিবার
- / 6
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: শতাব্দীর ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে তুরস্ক ও সিরিয়া। সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪.১৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮।
বলা বাহুল্য মৃত্যুর ধবংসস্তূপের উপরে বসে আছে তুরস্ক। ক্রমশই বেড়ে চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা। তুরস্ক ও সিরিয়া মিলিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
এখন ধবংসস্তূপ থেকে উঠে চলেছে একের পর এক নিথর দেহ। আহত ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তবে অসমর্থিত সূত্রে খবর, হতা-হতের সংখ্যা আরও বেশি। ৫ বার ভূমিকম্প ও মোট ১,১১৭টি আফটারশকের ফলে বিপর্যস্ত তুরস্ক-সিরিয়ায় হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।
এই ধ্বংসযজ্ঞের তুলনা করে ভূমিকম্পের আগের অক্ষত এবং ভূমিকম্প পরবর্তী ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া তুরস্কের কিছু ভবনের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দেখে নিন সেই করুণ চিত্র
সিরিয়ার সীমান্ত লাগোয়া তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গজিয়াতেপ শহর ছিল প্রথম ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল। সেখানকার ইসকেনদেরান শহরের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে। যেখানে এই শহরের কিছু ভবন ভূমিকম্পের পর কেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা দেখা যাচ্ছে।
ভূমিকম্প সবচেয়ে বেশি তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে তুরস্কের কাহরামানমারাস, গাজিয়াতেপ, দিয়াবাকির শহরে। মধ্য তুরস্কের শহর কাহরামানমারাসে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৬।
গজিয়াতেপ বেশিরভাগ দোকানপাট ও বাড়িঘর ধসে পড়েছে এবং আশপাশের রাস্তাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এক সময় যেখানে বহুতলের সারি ছিল, কম্পনের ধাক্কায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ার পর এখন সেখানে শুধুই ধ্বংসস্তূপ। চারদিকে শুধু কংক্রিটের স্তূপ। শহর, মফস্সল, পাড়া, অলিগলির মানচিত্র এই ধ্বংসলীলায় একেবারে বদলে গিয়েছে। আগে যেখানে শপিং মল ছিল, এখন সেখানে ইট, কাঠ-পাথরের স্তূপ।
সোমবার ৭.৮ তীব্রতায় তুরস্কে ধ্বংসলীলা চালায় ভূমিকম্প। শহরের পর শহর ধরে সেই ধ্বংসলীলা চলেছে। পশ্চিমে আদানা থেকে পূর্বে দিয়ারবাকির, উত্তরে মালাটিয়া থেকে দক্ষিণে হাটয় পর্যন্ত শুধু ধ্বংসের ছবি।
তুরস্কের মোট ১০টি প্রদেশে কম্পনে ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টে ১৭ মিনিটে কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারিক জেলা ছিল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল।
কাহরামানমারাস ছাড়াও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি হয়েছে গাজিয়াতেপ প্রদেশ এবং দিয়াবাকিরে। দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের গাজিয়ানটেপে ২০ লক্ষ মানুষের বাস। তাঁদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ সিরিয়ার শরণার্থী।
গাজিয়াতেপের যে শহরগুলিতে ভূমিকম্প তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে তার চিত্র সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে। শহরের আগের রূপ এবং কম্পনের পরে যে রূপ ধরা পড়েছে, তাতে বুঝে ওঠাই দায় যে, এখানে আগে বড় বড় বাড়ি, রাস্তাঘাট, হাসপাতাল এবং বহুতল ছিল।
গাজিয়াতেপের একটি শহর নুদাগি। কম্পনের পরে এই শহরের চেহারা কী ভাবে বদলে গিয়েছে ভয়ঙ্কর ছবি প্রকাশ্যে এনেছে ম্যাক্সার টেকনোলজিস। এই শহরটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি থাকায় ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি বহুগুণে বেড়েছে।
তুরস্কের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জানিয়েছে, ছোট-বড় মিলিয়ে নুরদাগি শহরের প্রায় ১২ হাজার বাড়ি কম্পনের জেরে মাটিতে মিশে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বহুতলগুলির। বহুতলের জায়গায় এখন শুধু কংক্রিটের ঢিবি চোখে পড়ছে।
গাজিয়াতেপ প্রদেশের আর একটি শহর ইলাহিয়ে। নুরদাগির পার্শ্ববর্তী এই শহরেও ভূমিকম্পের তাণ্ডবের ছাপ স্পষ্ট। এলাকার পর এলাকা মাটিতে মিশে গিয়েছে। সিটি সেন্টারের কয়েকশো বহুতল ভেঙে পড়েছে।
নুরদাগির সবচেয়ে ব্যস্ত রাস্তা, যেখানে দিন রাত যানবাহনের যাতায়াত চলত, এখন সেই রাস্তাই হয়ে উঠেছে আস্ত একটি হাসপাতাল। কম্পনে আহত মানুষদের বাঁচাতে অনবরত অ্যাম্বুল্যান্স ছোটাছুটি করছে এই রাস্তা দিয়ে। রাস্তার দু’পাশে থাকা বাড়িগুলির অস্তিত্ব মিলিয়ে গিয়েছে কম্পনের জেরে।
প্রচণ্ড ঠান্ডা, তুষারপাত, আশ্রয়ের অভাব, খাবার না পেয়ে দিশাহারা মানুষ। কম্পনের পর থেকে তাই আতঙ্কে গাজিয়াতেপ ছেড়ে দলে দলে পালিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা।
انتشال عالقين من تحت الأنقاض في منطقة #عفرين بريف #حلب الشمالي بعد الزلزال الذي ضرب المنطقة فجر اليوم الاثنين 6 شباط وخلف عشرات القتلى ومئات المصابين والعالقين.#الخوذ_البيضاء
#زلزال_سوريا #سوريا pic.twitter.com/sBZqlKWtse— الدفاع المدني السوري (@SyriaCivilDefe) February 6, 2023