নিউ ইয়র্ক: ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সলমন রুশদির উপর হামলার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হল ২৭ বছরের হাদি মাতারকে। আমেরিকার আদালতে তাঁর বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ২৩ এপ্রিল নিউ ইয়র্কের আদালত হাদির শাস্তি শোনাবে। যে যে ধারায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তাতে ন্যূনতম ৩০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
অভিযোগ, ২০২২ সালে আমেরিকার একটি অনুষ্ঠানে রুশদির ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালান হাদি। মঞ্চে উঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় রুশদিকে। ছুরির আঘাতে মঞ্চেই লুটিয়ে পড়েছিলেন বুকারজয়ী ব্রিটিশ লেখক। বেশ কিছু দিন তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। পরে সুস্থ হয়ে উঠলেও হামলার ফলে একটি চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর লেখক। অকেজো হয়ে গিয়েছে একটি হাতও। রুশদির উপর হামলাকারী দীর্ঘদিন আমেরিকার জেলে বন্দি ছিলেন। চলতি মাসে তার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয় নিউ ইয়র্কের একটি কাউন্টি আদালতে।
১৯৮৮ সালে ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের ব্যাপক তোপের মুখে পড়েন রুশদি। এই উপন্যাসে নবী মুহাম্মদ(সা )র জীবনের কিছু অংশকে কাল্পনিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। রুশদির এই কুৎসামূলক উপন্যাসের জেরে নজিরবিহীন আন্তর্জাতিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল সেই সময়। এই উপন্যাসে নবী (সা ) এবং তাঁর স্ত্রীদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত আপত্তিকর কথা লেখা হয়েছিল। রুশদির এই উপন্যাস ছিল ইসলামের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর । তিনি ইচ্ছাকৃতই এমন কাজটি করেছিলেন বলে অভিযোগ অনেকের। বিতর্কিত এমন একটি লেখা দিয়ে তিনি দ্রুত জনপ্রিয় হতে চেয়েছিলেন বলেও মনে করেন কেউ কেউ। ভারতই সে সময় প্রথম রুশদির এই বই নিষিদ্ধ করে। ১৯৮৯ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডের মুসলমানরা আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির একটি কপি আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। রুশদির এই কাজের জন্য তাঁর নিজ শহর মুম্বইয়ে দাঙ্গায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছিলেন।রুশদির জন্ম ভারতের মুম্বাইয়ে হলেও বেড়ে উঠেছেন ব্রিটেনে। তিনি পাঁচটি বিয়ে করেছেন। তাঁর চতুর্থ স্ত্রী পদ্ম লক্ষ্ণী আত্মজীবনীতে বলেছেন, ‘সলমান রুশদি ঈর্ষাকাতর, লোভী ও কামুক. ।’