২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০৮ পুরসভার ভোটেও লজ্জাজনক ভরাডুবি, রাজ্য নেতৃত্বের উপরে ক্ষুব্ধ নাড্ডা-শাহ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৪ মার্চ ২০২২, শুক্রবার
  • / 5

নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা সহ পাঁচ পুরনিগমের ভোটে মুখ থুবড়ে পড়েছিল দল। আশা ছিল, অন্তত ১০৮ পুরসভার ভোটে উত্তরবঙ্গে মুখরক্ষা হবে। কিন্তু নিজেদের গড়ে ভূমিশয্যা নিয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। এমনকী বাক-সর্বস্ব হিসেবে পরিচিত বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে বিরোধি দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাড়াতেও হারের স্বাদ পেতে হয়েছে। আর দলের এমন ফলাফলের পরেই রাজ্য নেতৃত্বের উপরে বেজায় চটেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে পুরভোটের ভরাডুবির কারণ নিয়ে কৈফিয়‍ৎ তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ রাজ্যের ভোট মিটে যাওয়ার পরেও বঙ্গ বিজেপির বাক-সর্বস্ব নেতাদের দিল্লিতে তলব করা হচ্ছে।

গত রবিবার রাজ্যের যে ১০৮টি পুরসভায় ভোট নেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে ছিল উত্তরবঙ্গের ১৯ পুরসভা। বিধানসভা ভোটে অধিকাংস পুরসভার ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফলে এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। বিধানসভা ভোটের পরে গড় ধরে রাখতে উত্তরবঙ্গ থেকে মোদি মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেওয়া হয়েছিল উত্তরবঙ্গের দুই সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও জন বার্লাকে। এমনকী দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দলের রাজ্য সভাপতির কুর্সিতে বসানো হয়েছিল বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে। কিন্তু এত করেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে উত্তরবঙ্গ থেকে। বিধানসভা ভোটের নিরিখে বনগাঁ, গোবরডাঙ্গা, কাঁথি, রানাঘাট, মেদিনীপুর, বোলপুর সহ একাধিক পুরসভায় এগিয়ে ছিল পদ্ম শিবিরের প্রার্থীরা। কিন্তু সেই লিড ধরে রাখা যায়নি। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়ায় মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটে ভর করে বেশ কিছু পুরসভায় বাজিমাত করার আশায় ছিলেন বিজেপি শীর্ষ নেতারা। কিন্তু প্রাথমিক পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটও মেলেনি। বরং তৃণমূলকে আঁকড়ে ধরেছেন মতুয়ারা। এই প্রবণতা বজায় থাকলে আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এবং ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে যে ফের মুখ থুবড়ে পড়তে হবে, তা ভাল্-ই বুঝতে পারছেন শাহ-নাড্ডা সহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

তাই কোথায় গলদ রয়েছে, কেন বিধানসভা ভোটে যে সব এলাকায় মানুষের সমর্থন পাওয়া গিয়েছিল, তা ধরে রাখা গেল না, তা রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে জানতে চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই বিজেপির একাধিক জেলা সভাপতি দলের বিপর্যয়ের জন্য রাজ্য নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাঁরা নালিশও ঠুকেছেন। সব মিলিয়ে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট মিটে গেলেই বঙ্গের সংগঠনের খোলনলচে বদলানো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে চলেছেন শাহ-নাড্ডারা।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

১০৮ পুরসভার ভোটেও লজ্জাজনক ভরাডুবি, রাজ্য নেতৃত্বের উপরে ক্ষুব্ধ নাড্ডা-শাহ

আপডেট : ৪ মার্চ ২০২২, শুক্রবার

নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা সহ পাঁচ পুরনিগমের ভোটে মুখ থুবড়ে পড়েছিল দল। আশা ছিল, অন্তত ১০৮ পুরসভার ভোটে উত্তরবঙ্গে মুখরক্ষা হবে। কিন্তু নিজেদের গড়ে ভূমিশয্যা নিয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। এমনকী বাক-সর্বস্ব হিসেবে পরিচিত বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে বিরোধি দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাড়াতেও হারের স্বাদ পেতে হয়েছে। আর দলের এমন ফলাফলের পরেই রাজ্য নেতৃত্বের উপরে বেজায় চটেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে পুরভোটের ভরাডুবির কারণ নিয়ে কৈফিয়‍ৎ তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ রাজ্যের ভোট মিটে যাওয়ার পরেও বঙ্গ বিজেপির বাক-সর্বস্ব নেতাদের দিল্লিতে তলব করা হচ্ছে।

গত রবিবার রাজ্যের যে ১০৮টি পুরসভায় ভোট নেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে ছিল উত্তরবঙ্গের ১৯ পুরসভা। বিধানসভা ভোটে অধিকাংস পুরসভার ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফলে এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। বিধানসভা ভোটের পরে গড় ধরে রাখতে উত্তরবঙ্গ থেকে মোদি মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেওয়া হয়েছিল উত্তরবঙ্গের দুই সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও জন বার্লাকে। এমনকী দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দলের রাজ্য সভাপতির কুর্সিতে বসানো হয়েছিল বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে। কিন্তু এত করেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে উত্তরবঙ্গ থেকে। বিধানসভা ভোটের নিরিখে বনগাঁ, গোবরডাঙ্গা, কাঁথি, রানাঘাট, মেদিনীপুর, বোলপুর সহ একাধিক পুরসভায় এগিয়ে ছিল পদ্ম শিবিরের প্রার্থীরা। কিন্তু সেই লিড ধরে রাখা যায়নি। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়ায় মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটে ভর করে বেশ কিছু পুরসভায় বাজিমাত করার আশায় ছিলেন বিজেপি শীর্ষ নেতারা। কিন্তু প্রাথমিক পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটও মেলেনি। বরং তৃণমূলকে আঁকড়ে ধরেছেন মতুয়ারা। এই প্রবণতা বজায় থাকলে আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এবং ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে যে ফের মুখ থুবড়ে পড়তে হবে, তা ভাল্-ই বুঝতে পারছেন শাহ-নাড্ডা সহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

তাই কোথায় গলদ রয়েছে, কেন বিধানসভা ভোটে যে সব এলাকায় মানুষের সমর্থন পাওয়া গিয়েছিল, তা ধরে রাখা গেল না, তা রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে জানতে চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই বিজেপির একাধিক জেলা সভাপতি দলের বিপর্যয়ের জন্য রাজ্য নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাঁরা নালিশও ঠুকেছেন। সব মিলিয়ে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট মিটে গেলেই বঙ্গের সংগঠনের খোলনলচে বদলানো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে চলেছেন শাহ-নাড্ডারা।