১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩৭০ দিনে ৮,৬৪০ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে হজ করতে মক্কায় পৌঁছালেন কেরলের শিহাব

সামিমা এহসানা
  • আপডেট : ১০ জুন ২০২৩, শনিবার
  • / 11

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ এক সময় হজের কাফেলা বা ক্যারাভ্যান দুর্গম মরুপথ পেরিয়ে হেঁটে ও উটে চড়ে রওনা দিত। ভারতসহ বিশ্বের নানা জায়গা থেকে জলপথে জাহাজে করেও বহুদিন হজযাত্রীরা হজ করতে গেছেন। এখন প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের যানবাহন হয়েছে উড়োজাহাজ। এ দেশের হজযাত্রীরা বিমানে করেই রওনা দেনে হজে। কিন্তু কেরলের শিহাব চত্তুর চেয়েছিলেন ভিন্ন কিছু করতে। গাড়ি বা ‘হাওয়াই জাহাজ’ নয়, তিনি হেঁটে মক্কায় পৌঁছানোর ইরাদা করেছিলেন। ১ বছর ৫ দিন অর্থাৎ ৩৭০ দিনের দীর্ঘ যাত্রার পর অবশেষে তিনি মঞ্জিলে পৌঁছাতে পেরেছেন।

কেরল থেকে রওনা দিয়ে মক্কায় পৌঁছালেন ৭ জুন, ৮৬৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে। ভারত থেকে রওনা দিয়ে পাকিস্তান, ইরান, ইরাক, কুয়েত, এই চারটি রাষ্ট্র পার হয়ে নবীর দেশে পৌঁছেছেন তিনি। তাঁর এই অদম্য প্রাণশক্তি ও হজের প্রতি সম্মান দেখে বিস্মিত হচ্ছেন বিশ্ববাসী। তাঁর এই কীর্তিতে হইচই পড়েছে আরব দেশেও। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তাঁর সাক্ষাৎকারও নিচ্ছে সেখানে।

গত বছরের ২ জুন কেরলের মালাপ্পুরমের অথবানন্দ গ্রাম থেকে হেঁটে হজ করতে যাওয়ার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেন শিহাব। তাঁর একটি সুপারমার্কেট রয়েছে। ইচ্ছে করলেই তিনি বিমানে হজে যেতে পারতেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকে শুনছেন, একসময় কেরল থেকে হেঁটে হেঁটে আরবে হজ করতে যেত তাঁর গ্রামের লোকজন। সেসব কাহিনি শুনেই তাঁর মধ্যে এই ইচ্ছে নাড়া দেয়। সংকল্প স্থির হয়। যা শেষ পর্যন্ত পরিণতিও পেল।

হজের পথে বাধাও এসেছে। ওয়াঘা সীমান্তে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়েছিল ভিসার কারণে। ট্রানজিট ভিসা পাওয়ার জন্য পঞ্জাবের একটি স্কুলে বেশ কয়েকমাস থাকতে হয়েছিল তাঁকে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে শিহাবকে ট্রানজিট ভিসা দেয় পাকিস্তান সরকার। এরপর হাঁটার গতি বাড়িয়েছেন তিনি। মদিনা থেকে মক্কায় যেতে ৪৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন মাত্র ৯ দিনে। আপাতত সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। ফ্লাইটে শিহাবের মা হজ করতে আসছেন। তিনি এসে পৌঁছালে দু’জনে একসঙ্গে হজ করবেন। হজের যাত্রাপথে ইরানে শিকারি প্রাণীর মুখোমুখি হয়েছেন, তীব্র ঠান্ডায় পাড়ি দিতে হয়েছে রাতের মরুভূমি। তবে শিহাবের ভাষায়, যার ভালো ইরাদা থাকে, সে অবশ্যই লক্ষ্যে পৌঁছায় আল্লাহর ইচ্ছায়।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

৩৭০ দিনে ৮,৬৪০ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে হজ করতে মক্কায় পৌঁছালেন কেরলের শিহাব

আপডেট : ১০ জুন ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ এক সময় হজের কাফেলা বা ক্যারাভ্যান দুর্গম মরুপথ পেরিয়ে হেঁটে ও উটে চড়ে রওনা দিত। ভারতসহ বিশ্বের নানা জায়গা থেকে জলপথে জাহাজে করেও বহুদিন হজযাত্রীরা হজ করতে গেছেন। এখন প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের যানবাহন হয়েছে উড়োজাহাজ। এ দেশের হজযাত্রীরা বিমানে করেই রওনা দেনে হজে। কিন্তু কেরলের শিহাব চত্তুর চেয়েছিলেন ভিন্ন কিছু করতে। গাড়ি বা ‘হাওয়াই জাহাজ’ নয়, তিনি হেঁটে মক্কায় পৌঁছানোর ইরাদা করেছিলেন। ১ বছর ৫ দিন অর্থাৎ ৩৭০ দিনের দীর্ঘ যাত্রার পর অবশেষে তিনি মঞ্জিলে পৌঁছাতে পেরেছেন।

কেরল থেকে রওনা দিয়ে মক্কায় পৌঁছালেন ৭ জুন, ৮৬৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে। ভারত থেকে রওনা দিয়ে পাকিস্তান, ইরান, ইরাক, কুয়েত, এই চারটি রাষ্ট্র পার হয়ে নবীর দেশে পৌঁছেছেন তিনি। তাঁর এই অদম্য প্রাণশক্তি ও হজের প্রতি সম্মান দেখে বিস্মিত হচ্ছেন বিশ্ববাসী। তাঁর এই কীর্তিতে হইচই পড়েছে আরব দেশেও। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তাঁর সাক্ষাৎকারও নিচ্ছে সেখানে।

গত বছরের ২ জুন কেরলের মালাপ্পুরমের অথবানন্দ গ্রাম থেকে হেঁটে হজ করতে যাওয়ার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেন শিহাব। তাঁর একটি সুপারমার্কেট রয়েছে। ইচ্ছে করলেই তিনি বিমানে হজে যেতে পারতেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকে শুনছেন, একসময় কেরল থেকে হেঁটে হেঁটে আরবে হজ করতে যেত তাঁর গ্রামের লোকজন। সেসব কাহিনি শুনেই তাঁর মধ্যে এই ইচ্ছে নাড়া দেয়। সংকল্প স্থির হয়। যা শেষ পর্যন্ত পরিণতিও পেল।

হজের পথে বাধাও এসেছে। ওয়াঘা সীমান্তে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়েছিল ভিসার কারণে। ট্রানজিট ভিসা পাওয়ার জন্য পঞ্জাবের একটি স্কুলে বেশ কয়েকমাস থাকতে হয়েছিল তাঁকে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে শিহাবকে ট্রানজিট ভিসা দেয় পাকিস্তান সরকার। এরপর হাঁটার গতি বাড়িয়েছেন তিনি। মদিনা থেকে মক্কায় যেতে ৪৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন মাত্র ৯ দিনে। আপাতত সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। ফ্লাইটে শিহাবের মা হজ করতে আসছেন। তিনি এসে পৌঁছালে দু’জনে একসঙ্গে হজ করবেন। হজের যাত্রাপথে ইরানে শিকারি প্রাণীর মুখোমুখি হয়েছেন, তীব্র ঠান্ডায় পাড়ি দিতে হয়েছে রাতের মরুভূমি। তবে শিহাবের ভাষায়, যার ভালো ইরাদা থাকে, সে অবশ্যই লক্ষ্যে পৌঁছায় আল্লাহর ইচ্ছায়।