ডিজিটাল মিডিয়ার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা এবং এই মাধ্যমের সামনে আসা নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে রবিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হল ডিজিটাল মিডিয়া ফেডারেশনের (Digital Media Federation) প্রথম রাজ্য সম্মেলন। অনুষ্ঠানে ডিজিটাল সাংবাদিকদের আইনি স্বীকৃতি, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যবীমা এবং সরকারি বিজ্ঞাপনের যোগ্যতা সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরা হয়।
সম্মেলনে রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এবং ডিজিটাল মিডিয়ার উন্নতির জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, বামপন্থী নেতৃবৃন্দ, কংগ্রেস, আইএসএফ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী মোফাক্কেরুল ইসলাম, ফিরদৌস সামীম, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য মাওলানা কামরুজ্জামান, EME একাডেমির চেয়ারম্যান কাজী মহসীন আজিমি এবং একাধিক সমাজকর্মী ও শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সম্মেলনের মূল দাবি, ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রথাগত সংবাদ মাধ্যমের সমতুল্য আইনি স্বীকৃতি প্রদান, ডিজিটাল সাংবাদিকদের জন্য পৃথক প্রেস ক্লাব স্থাপন, ডিজিটাল সাংবাদিকদের স্বাস্থ্যবীমা ও জীবনবীমার ব্যবস্থা, স্বতন্ত্র প্রেস কার্ড ও সরকারি অনুমোদন প্রদান, সরকারি বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল মিডিয়ার অন্তর্ভুক্তি, রিপোর্টিংয়ের সময় ডিজিটাল সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ডিজিটাল সাংবাদিকদের জন্য আইনি সহায়তা ও সুরক্ষা প্রদান, কলকাতা প্রেস ক্লাবসহ অন্যান্য প্রেস ক্লাবে ডিজিটাল সাংবাদিকদের সদস্যপদ নিশ্চিত করা।
সম্মেলনে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, “ডিজিটাল মিডিয়াকে এমন এক অবস্থানে যেতে হবে, যেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের পাশে থাকার প্রয়োজন হবে না। ডিজিটাল সাংবাদিকতা এবং ব্যক্তিগত কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট করা দরকার। আমরা সরকারকে আপনাদের দাবিগুলি জানাব। তবে আপনাদের স্বাধীনতা আরও শক্তিশালী হওয়া উচিত।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা ডিজিটাল মিডিয়া ফেডারেশনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। অনেকেই এই সম্মেলনকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং সংগঠনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “আমরা সমস্ত ডিজিটাল সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ করতে চাই, যাতে গদি মিডিয়ার বিরুদ্ধে সত্য খবর পরিবেশন করা যায়। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় জেলা সম্মেলন ও কমিটি গঠন করে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করব।”
এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকদের অধিকার ও স্বীকৃতির দাবিকে আরও জোরদার করার পথ সুগম হল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।