পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ইতিমধ্যেই নিউ টাউন ও সংলগ্ন রাজারহাট এলাকায় একাধিক নামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস তৈরি হয়েছে। কিন্তু আগামী দিনে যে পরিকল্পিত শহর তৈরি করতে চাইছে রাজ্য সরকার সেখানে নিউ টাউন ও রাজারহাট সংলগ্ন এলাকে একটা শিক্ষার হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে রাজ্য সরকার। মূলত সে-কথা মাথায় রেখেই নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া III-তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য ৫.৯৭ একর (২৪১৬০ বর্গমিটার) জমি বরাদ্দ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গ হাউজিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (হিডকো) কর্পোরেট সংস্থাগুলির কাছ থেকে এই জমি বরাদ্দের জন্য অফার আহ্বান করেছে। মূলত ফ্রি হোল্ডের ভিত্তিতেই এই জমি দেওয়া হবে বলে খবর। এখনও পর্যন্ত এর জন্য যে নির্দিষ্ট জমি চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলি প্লট নম্বর IIIF/12 এবং IIIF/15-তে অবস্থিত।
হিডকোর এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘আগামী ২৬ মার্চ এই জমির ই-নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। ন্যূনতম ভিত্তিমূল্য ধার্য করা হয়েছে ৯৪.৫৭ কোটি টাকা। শর্ত অনুযায়ী, এই জমিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। কোনওভাবেই অন্য কিছু তৈরি করা যাবে না। নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এন কে ডিএ)-র অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুসারেই নির্মাণ করতে হবে। জমির দখল পাওয়ার এক বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু করতে হবে এবং নির্মাণ কাজ পাঁচ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে রাজ্যের অন্যতম বিনিয়োগের বড় জায়গা হল এই এলাকা। নিউ টাউনে ইতিমধ্যেই টিসিএস, উইপ্রো, ডিএলএফ, অম্বুজা, বেঙ্গল ইউনিটেক-এর মতো বড় সংস্থাগুলি বিনিয়োগ করেছে। আগামী দুই থেকে তিন বছরে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পূর্ণ হলে এটি কলকাতার অন্যতম বিনিয়োগযোগ্য এলাকা হয়ে উঠবে। এই নিউ টাউনেই একটি ফিনান্সিয়াল অ্যান্ড লিগাল হাব গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সরকারি ব্যাঙ্ক ও বিমা সংস্থাগুলি সেখানে প্লট গ্রহণ করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কলকাতা উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হওয়ায় এবং নিউ টাউন কলকাতা বিমানবন্দরের নিকটে থাকার কারণে এই গোটা অঞ্চল উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।’ শুধু শিল্প নয় সরকার চাইছে নিউ টাউন ও রাজারহাট-এর এই বিস্তৃত এলাকায় শিক্ষা স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ মেলবন্ধন তৈরি হোক।
ইতিমধ্যেই এই নিউ টাউনে হাসপাতাল তথা স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়েছে টাটা মেডিক্যাল সেন্টার, শঙ্কর নেত্রালয়, ওহাইও হাসপাতালের মতো নামি সংস্থারকে। এ ছাড়া ২০০ একরেরও বেশি জমিতে বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি টেকনোলজি পার্ক গড়ে উঠছে, যা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে এই এলাকা একটা বড় বিনিয়োগের ক্ষেত্র হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে নিউ টাউনে প্রায় ১২,০০০ বাসস্থান নির্মিত হয়েছে এবং আরও ১৬,০০০ নির্মাণাধীন। ভবিষ্যতে এখানে প্রায় ২ লাখ আবাসন নির্মিত হবে। মূলত এই বিপুল জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতেই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়তে চাইছে রাজ্য সরকার।