ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও প্রাণ! আলৌকিক ভাবে বেঁচে ফিরছেন অনেকে

- আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, সোমবার
- / 11
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ পরও জরুরি উদ্ধারকাজ জারি। আর এই উদ্ধার অভিযানে ঘটে চলেছে একে পর এক অলৌকিক ঘটনা। এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিতদের উদ্ধার করা হচ্ছে। সর্বশেষ, ভূমিকম্পের ১৭০ ঘণ্টা পর তুরস্কের গাজিয়াতেপ শহরের এক ধ্বংসস্তূপ থেকে এক মহিলাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ৪০ বছর বয়সী ওই নারীর নাম সিবেল কায়া। তাই নিখোঁজদের ফেরার আশা ছাড়ছেন না স্বজনরা।
কাহরামানমারাস শহরে ভূমিকম্পের ১৬২ ঘন্টা পরে আন্তালিয়া ফায়ার ব্রিগেড ৪৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে। একে ‘অলৌকিক’ বর্ণনা করে উদ্ধারকাজের ভিডিয়োটি শেয়ার করেন আন্তালিয়ার মেয়র মুহিতিন বোসেক। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের হাতায় শহরের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকেও এক কিশোরীকে ১৪৭ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
১২ বছর বয়সী ওই কিশোরীর নাম কুডি। উদ্ধারের পর কুডিকে উদ্ধারকারীরা বলেন, ‘তুমি একটা অলৌকিক বিষয়।’ এর আগে একই শহরের অরেকটি জায়গার ধ্বংসস্তূপে ১৩৯ ঘণ্টা আটকে থাকার পর ৭ মাস বয়সী এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করেন উদ্ধারকর্মীরা। তার আগে হাতায় শহর থেকে ভূমিকম্পের ১২৮ ঘণ্টা পর ২ মাসের এক শিশুকে জীবন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। তারও আগে দুই বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। গাজিয়াতেপের আরেকটি ধসে যাওয়া ভবনের নিচ থেকে এসমা সুলতান নামে ১৩ বছর বয়সী এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় গত সোমবার ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরপর আরও কয়েকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয় দেশ দু’টিতে। ইতিমধ্যে দেশ দু’টিতে মৃতের সংখ্যা ৩৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে তুরস্কেই মারা গিয়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতের সংখ্যা প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রাষ্ট্রসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বহুগুণে বাড়বে। তবে উদ্ধারকর্মীরা এখনও কংক্রিটের চাঙড়ে কান পেতে প্রাণের স্পন্দনের খোঁজ জারি রেখেছেন। ভূমিকম্পের ১৫৯ ঘণ্টা পর রবিবার ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১০ বছর বয়সী এক শিশু ও তাঁর বাবাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
দক্ষিণ তুরস্কের হাতায় প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। রবিবার দক্ষিণ তুরস্কের হাতায় প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১৫৯ ঘণ্টা পর ৫৫ বছর বয়সী এক নারীকেও জীবিত উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ভূমিকম্পের ১৫৮ ঘণ্টা পর তিন বছর বয়সী এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তুরস্কে পুরোদমে উদ্ধারকাজ চললেও আধুনিক ও ভারি যন্ত্রপাতির অভাবে সিরিয়ার অনেক এলাকায় উদ্ধারকাজ বন্ধ হয়ে আছে। মনে করা হচ্ছে, সেসব এলাকায় আরও অনেক মরদেহ চাপা পড়ে রয়েছে।
গৃহযুদ্ধ কবলিত দেশটিতে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাইরের কোনও দেশ থেকেও সেখানে যেতে পারেনি উদ্ধারকারীরা। বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশ উদ্ধারকার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। ভূমিকম্পে তুরস্কের প্রায় ৭ হাজার ভবন ধসে পড়েছে। এদিকে ভূমিকম্প নিরোধক ভবন নির্মাণ না করায় বা নির্মাণে ত্রুটি থাকায় তুরস্কে ১১৩টি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এরই মধ্যে অন্তত ১২ জনকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। বাকিদেরও খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে বলে জানানো হয়েছে।