১১ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কড়া পদক্ষেপ উত্তরপ্রদেশ সরকারের, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করল অভিযুক্ত কাশির সিরাপ সংস্থা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, শুক্রবার
  • / 14

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ শিশু মৃত্যুর জেরে নয়ডার ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডে’র সব ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সামাজিক মাধ্যম টুইটারে টুইট করে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মান্ডব্য।

 

তিনি আরও জানিয়েছেন,  কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কনট্রোল অর্গানাইজেশন ওই ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থায় তল্লাশি অভিযান চালায়।  তারপরই বৃহস্পতিবার রাতে ওই সংস্থার নয়ডা ইউনিটে সব ওষুধের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডে’র ঊর্ধ্বতন আধিকারক জানিয়েছেন, আমরা তদন্তকারীদের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি।

 

রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আমরা ওষুধ উৎপাদন বন্ধ রাখব। গত বৃহস্পতিবারই ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডকে সর্দি-কাশির সিরাপ ‘ডক-১ ম্যাক্স’ উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। পাশাপাশি, প্রোপিলিন গ্লাইকলযুক্ত অন্য ওষুধগুলির উৎপাদনও বন্ধ রাখতে বলা হয় অভিযুক্ত সংস্থাকে।ওষুধ উৎপাদন বন্ধ রাখার প্রসঙ্গে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ‘সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ এবং রাজ্যের ‘ড্রাগ কন্ট্রোলিং অ্যান্ড লাইসেন্সিং অথরিটি’-র যৌথ ভাবে এই বিষয়ের ওপর তদন্ত করছে।

 

তদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাবেনা। তবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওপর যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, সেটির সত্যতা যাচাই না করা পর্যন্ত ওষুধগুলি উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। ইতিমধ্যেই তদন্তকারী দলের সদস্যরা নয়ডার ওই কারখানা ঘুরে দেখেন।এবং তাঁরা কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন বলেও সরকারি  সূত্রের খবর।

 

প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক মাস আগে ভারতের তৈরি কাশির ওষুধ খেয়ে গাম্বিয়ায় প্রায় ৭০জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। এবার উজবেকিস্তানে ভারতের তৈরি কাশির ওষুধ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮জন শিশুর। মেরিয়ন বায়োটেক নামে ওই ওষুধ সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে উজবেকিস্তানের নিরাপত্তা পরিষদ।আমদানিকারক সংস্থা কিউরাম্যাক্সের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে তারা। বিষয়টি নড়েচড়ে বসেছে ভারতও।

 

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বলেন, ঘটনাটি নিয়ে ২৭ ডিসেম্বর থেকেই উজবেকিস্তানের ‘ন্যাশনাল ড্রাগ রেগুলেটর’-এর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে ভারতের ‘দ্য সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গ্যানাইজেশন’ (সিডিএসসিও)।

 

অভিযোগ, ডক-১ ম্যাক্স নামের ওষুধটি খেয়ে উজবেকিস্তানে পরপর শিউমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মাণ্ডব্য জানান, ভারতের তরফে ওই কফ সিরাপের নমুনা ইতিমধ্যেই পরীক্ষার জন্য চণ্ডীগড়ের ‘রিজিওয়াল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি’তে পাঠানো হয়েছে।

 

স্থানীয় সংবাদ মাঝ্যম সূত্রে খবর, ল্যাবরেটরির টেস্টে ওই কাশির সিরাপের মধ্যে ‘ইথিলিন গ্লাইকল’ নামে একটি রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সংস্থার তরফে কফ সিরাপটি তৈরির কাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, এর আগে গাম্বিয়ায় যে কফ সিরাপ খেয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল তাতেও এই একই রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছিল বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, নয়ডার ওই সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরে উজবেকিস্তানে ওষুধ সরবরাহ করত।

 

এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের ড্রাগ কন্ট্রোলিং ও লাইসেন্সিং অথরিটির ডেপুটি কমিশনার এ কে জৈন বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক দলের কাছ থেকে একটি ই-মেল পেয়েছি। এই নিয়ে আমাদের তদন্ত করতে বলা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে একটি তদন্তকারী দল গঠন করেছি।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই ওষুধের তদন্তে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়ে বুধবারই এক বিবৃতি জারি করেছিল।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কড়া পদক্ষেপ উত্তরপ্রদেশ সরকারের, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করল অভিযুক্ত কাশির সিরাপ সংস্থা

আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ শিশু মৃত্যুর জেরে নয়ডার ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডে’র সব ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সামাজিক মাধ্যম টুইটারে টুইট করে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মান্ডব্য।

 

তিনি আরও জানিয়েছেন,  কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কনট্রোল অর্গানাইজেশন ওই ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থায় তল্লাশি অভিযান চালায়।  তারপরই বৃহস্পতিবার রাতে ওই সংস্থার নয়ডা ইউনিটে সব ওষুধের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডে’র ঊর্ধ্বতন আধিকারক জানিয়েছেন, আমরা তদন্তকারীদের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি।

 

রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আমরা ওষুধ উৎপাদন বন্ধ রাখব। গত বৃহস্পতিবারই ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডকে সর্দি-কাশির সিরাপ ‘ডক-১ ম্যাক্স’ উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। পাশাপাশি, প্রোপিলিন গ্লাইকলযুক্ত অন্য ওষুধগুলির উৎপাদনও বন্ধ রাখতে বলা হয় অভিযুক্ত সংস্থাকে।ওষুধ উৎপাদন বন্ধ রাখার প্রসঙ্গে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ‘সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ এবং রাজ্যের ‘ড্রাগ কন্ট্রোলিং অ্যান্ড লাইসেন্সিং অথরিটি’-র যৌথ ভাবে এই বিষয়ের ওপর তদন্ত করছে।

 

তদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাবেনা। তবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওপর যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, সেটির সত্যতা যাচাই না করা পর্যন্ত ওষুধগুলি উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। ইতিমধ্যেই তদন্তকারী দলের সদস্যরা নয়ডার ওই কারখানা ঘুরে দেখেন।এবং তাঁরা কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন বলেও সরকারি  সূত্রের খবর।

 

প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক মাস আগে ভারতের তৈরি কাশির ওষুধ খেয়ে গাম্বিয়ায় প্রায় ৭০জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। এবার উজবেকিস্তানে ভারতের তৈরি কাশির ওষুধ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮জন শিশুর। মেরিয়ন বায়োটেক নামে ওই ওষুধ সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে উজবেকিস্তানের নিরাপত্তা পরিষদ।আমদানিকারক সংস্থা কিউরাম্যাক্সের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে তারা। বিষয়টি নড়েচড়ে বসেছে ভারতও।

 

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বলেন, ঘটনাটি নিয়ে ২৭ ডিসেম্বর থেকেই উজবেকিস্তানের ‘ন্যাশনাল ড্রাগ রেগুলেটর’-এর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে ভারতের ‘দ্য সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গ্যানাইজেশন’ (সিডিএসসিও)।

 

অভিযোগ, ডক-১ ম্যাক্স নামের ওষুধটি খেয়ে উজবেকিস্তানে পরপর শিউমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মাণ্ডব্য জানান, ভারতের তরফে ওই কফ সিরাপের নমুনা ইতিমধ্যেই পরীক্ষার জন্য চণ্ডীগড়ের ‘রিজিওয়াল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি’তে পাঠানো হয়েছে।

 

স্থানীয় সংবাদ মাঝ্যম সূত্রে খবর, ল্যাবরেটরির টেস্টে ওই কাশির সিরাপের মধ্যে ‘ইথিলিন গ্লাইকল’ নামে একটি রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সংস্থার তরফে কফ সিরাপটি তৈরির কাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, এর আগে গাম্বিয়ায় যে কফ সিরাপ খেয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল তাতেও এই একই রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছিল বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, নয়ডার ওই সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরে উজবেকিস্তানে ওষুধ সরবরাহ করত।

 

এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের ড্রাগ কন্ট্রোলিং ও লাইসেন্সিং অথরিটির ডেপুটি কমিশনার এ কে জৈন বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক দলের কাছ থেকে একটি ই-মেল পেয়েছি। এই নিয়ে আমাদের তদন্ত করতে বলা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে একটি তদন্তকারী দল গঠন করেছি।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই ওষুধের তদন্তে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়ে বুধবারই এক বিবৃতি জারি করেছিল।