১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলিপুর আদালতে পেশ করার সময় স্ত্রী-সন্তানদের দেখে কান্নায় ভাসলেন সুবীরেশ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২২, সোমবার
  • / 4

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সোমবার এক আবেগজনিত ঘটনার সাক্ষী থাকল আলিপুর আদালত চত্বর। এ দিন এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় জেল হেফাজতে থাকা এসএসসির প্রাক্তন কর্তা সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে পেশ করা হয়েছিল সিবিআই এজলাসে। এজলাসে পেশ করার সময় একাধারে পিতৃস্নেহ অপরদিকে স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার জ্বলন্ত ছবি দেখা গেল সুবীরেশের মধ্যে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই বলেছে, ‘নিয়োগ দুর্নীতিতে সুবীরেশ ভট্টাচার্যই নাটের গুরু।’

 

পদ হারালেও এখনও প্রভাবশালী তিনি। অথচ এ দিন আলিপুর আদালতে সিবিআই এজলাসের সামনে সেই ‘প্রভাবশালী’ সুবীরেশকেই দেখা গেল অনবরত চোখের জল ফেলতে। সোমবার আদালতে সশরীরের হাজির ছিলেন নিয়োগ দুর্নীতির মূল অভিযুক্তরা। অন্যদের পাশাপাশি ছিলেন এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। এ দিন এজলাসের সামনে ছিলেন স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যা। মামলা-মোকাদ্দমার কোলাহলের মধ্যেই ক্রমাগত রুমালের কোনে চোখের জল মুছতে দেখা গেল সুবীরেশকে।

তদন্তকারীদের অভিযোগ, ‘শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁরই আমলে যাবতীয় অনিয়ম হয়েছে।’ অন্যদিকে সুবীরেশের বরাবর দাবি, ‘তিনি কোনও দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন না। তাঁর আমলে একটি নিয়োগেও দুর্নীতি হয়নি। পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটি থাকতে পারে।’ তবে সিবিআই এইসবের কথায় বিশ্বাস রাখেনি, তথ্য ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতার হয়েছেন সুবীরেশ। এত দিন তিনি জেল হেফাজতেই ছিলেন, মাঝখানে ভার্চুয়াল শুনানি চলে।

 

সোমবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় তাঁকে। এজলাসে পেশ করার সময় প্রকাশ্যে কাঁদতে দেখা যায় প্রাক্তন এসএসসির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যকে। আদালত সূত্রে প্রকাশ, এজলাসে তখন শুনানি শেষের পথে। পিছনের দিকে স্ত্রী ছেলে এবং মেয়ের কিছুটা দূরে বসেছিলেন সুবীরেশ। ক্রন্দনরত সুবীরশকে বোঝাতে দেখা যায় স্ত্রী এবং ছেলেকে। মেয়েও এসে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেন বাবাকে। যদিও তার পরও চোখ মোছা বন্ধ হয়নি সুবীরেশের।

 

প্রসঙ্গত, সুবীরেশ এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। এসএসসি দুর্নীতি সংক্রান্ত কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও ওই সময়েই শিক্ষা নিয়োগে দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে। সিবিআইয়ের বক্তব্য, সুবীরেশকে তাঁর জমানায় এই নিয়োগের নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সহযোগিতা করেননি। এসএসসির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যাওয়ার পরও সুবীরেশের প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে। তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে সরেও একসঙ্গে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং দার্জিলিং হিলস বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ছিলেন। সেইসঙ্গে কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ কলেজের অধ্যক্ষ, নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি এবং রাজ্যের উপাচার্য পরিষদের সম্পাদক পদেও নাম রয়েছে তাঁর। এ দিন আলিপুর আদালতে সিবিআই এজলাসে এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ জারি করা হয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

আলিপুর আদালতে পেশ করার সময় স্ত্রী-সন্তানদের দেখে কান্নায় ভাসলেন সুবীরেশ

আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২২, সোমবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সোমবার এক আবেগজনিত ঘটনার সাক্ষী থাকল আলিপুর আদালত চত্বর। এ দিন এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় জেল হেফাজতে থাকা এসএসসির প্রাক্তন কর্তা সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে পেশ করা হয়েছিল সিবিআই এজলাসে। এজলাসে পেশ করার সময় একাধারে পিতৃস্নেহ অপরদিকে স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার জ্বলন্ত ছবি দেখা গেল সুবীরেশের মধ্যে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই বলেছে, ‘নিয়োগ দুর্নীতিতে সুবীরেশ ভট্টাচার্যই নাটের গুরু।’

 

পদ হারালেও এখনও প্রভাবশালী তিনি। অথচ এ দিন আলিপুর আদালতে সিবিআই এজলাসের সামনে সেই ‘প্রভাবশালী’ সুবীরেশকেই দেখা গেল অনবরত চোখের জল ফেলতে। সোমবার আদালতে সশরীরের হাজির ছিলেন নিয়োগ দুর্নীতির মূল অভিযুক্তরা। অন্যদের পাশাপাশি ছিলেন এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। এ দিন এজলাসের সামনে ছিলেন স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যা। মামলা-মোকাদ্দমার কোলাহলের মধ্যেই ক্রমাগত রুমালের কোনে চোখের জল মুছতে দেখা গেল সুবীরেশকে।

তদন্তকারীদের অভিযোগ, ‘শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁরই আমলে যাবতীয় অনিয়ম হয়েছে।’ অন্যদিকে সুবীরেশের বরাবর দাবি, ‘তিনি কোনও দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন না। তাঁর আমলে একটি নিয়োগেও দুর্নীতি হয়নি। পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটি থাকতে পারে।’ তবে সিবিআই এইসবের কথায় বিশ্বাস রাখেনি, তথ্য ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতার হয়েছেন সুবীরেশ। এত দিন তিনি জেল হেফাজতেই ছিলেন, মাঝখানে ভার্চুয়াল শুনানি চলে।

 

সোমবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় তাঁকে। এজলাসে পেশ করার সময় প্রকাশ্যে কাঁদতে দেখা যায় প্রাক্তন এসএসসির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যকে। আদালত সূত্রে প্রকাশ, এজলাসে তখন শুনানি শেষের পথে। পিছনের দিকে স্ত্রী ছেলে এবং মেয়ের কিছুটা দূরে বসেছিলেন সুবীরেশ। ক্রন্দনরত সুবীরশকে বোঝাতে দেখা যায় স্ত্রী এবং ছেলেকে। মেয়েও এসে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেন বাবাকে। যদিও তার পরও চোখ মোছা বন্ধ হয়নি সুবীরেশের।

 

প্রসঙ্গত, সুবীরেশ এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। এসএসসি দুর্নীতি সংক্রান্ত কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও ওই সময়েই শিক্ষা নিয়োগে দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে। সিবিআইয়ের বক্তব্য, সুবীরেশকে তাঁর জমানায় এই নিয়োগের নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সহযোগিতা করেননি। এসএসসির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যাওয়ার পরও সুবীরেশের প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে। তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে সরেও একসঙ্গে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং দার্জিলিং হিলস বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ছিলেন। সেইসঙ্গে কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ কলেজের অধ্যক্ষ, নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি এবং রাজ্যের উপাচার্য পরিষদের সম্পাদক পদেও নাম রয়েছে তাঁর। এ দিন আলিপুর আদালতে সিবিআই এজলাসে এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ জারি করা হয়।