Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the login-customizer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/u419551674/domains/puberkalom.in/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
জীবনকে বদলে দিতে পারে সুরা লোকমান! | Puber Kalom
১৬ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জীবনকে বদলে দিতে পারে সুরা লোকমান!

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 30

ফেরদৌস ফয়সালঃ সূরা লোকমান পবিত্র কুরআনের ৩১তম সূরা। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এতে ৪ রুকু, ৩৪ আয়াত রয়েছে। মুসলিমদের জন্য পবিত্র কুরআন একটি একক কিতাব ও পথ-নির্দেশক। সেই কুরআনের অন্যতম একটি সূরা হল ‘সূরা লোকমান’।

লোকমান হাকিম একটি পরিচিত নাম। যিনি তার পুত্রকে অসাধারণ কিছু উপদেশ দিয়েছিলেন। সেই উপদেশগুলোর মূল বার্তাগুলোই সূরা লোকমানে উল্লেখ করা হয়েছে। যে উপদেশগুলো জীবনের চলার পথকে বদলে দিতে পারে । এছাড়া যারা নামায আদায় করে, যাকাত দেয়, আখিরাতে বিশ্বাস রাখে এবং জীবনে চলার অনবরত সঠিক পথ খোঁজার চেষ্টা করে। তাঁদের জন্য এই সূরাটি একটি মহামূল্যবান জীবন পথের নির্দেশিকা।

উপদেশ-১: আল্লাহর একত্ববাদ মেনে চলাই হচ্ছে ইসলামের মূল ভিত্তি। শিরক করা সবচেয়ে বড় গুনাহ এবং এটি চরম সীমা লঙ্ঘন। তাই সূরা লোকমানে এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে ।

উপদেশ-২: নামায শুধু দৈনিক এক প্রকার ইবাদাত নয় বরং এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। নামাযে দাঁড়ালে মনকে স্থির রাখার চেষ্টা করা জরুরি, যেন শয়তান আমাদের মনোযোগ বিভ্রান্ত না করে। তাই নামাযে একাগ্রতা রাখা জরুরি।

উপদেশ-৩: খাবার ধীরে সুস্থে খাওয়া। তাড়াহুড়ো করে খাবার খেতে গিয়ে গলায় আটকে যায় অথবা খাবার ওপরে উঠে নাক জ্বালাপোড়া করে। একটু অসতর্কতায় বড় বিপদ ডেকে নিয়ে আসতে পারে। এজন্য লোকমান হাকিম খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেছেন।

 

উপদেশ-৪ : অন্যের ঘরে গিয়ে এদিক-ওদিক না তাকানো। এই অভ্যাস থাকলে দূর করা উচিত। লোকমান হাকিম বললেন, অন্যের ঘরে গিয়ে যেন চোখের হেফাজত করে। আপনার জন্য তারাও যেন লজ্জিত না হয়। আপনিও যাতে লজ্জিত না হন।

উপদেশ-৫: কথা বলা বা ভাষণ দেওয়ার সময় নিজেকে সংযত রাখা। অসতর্কভাবে কথা বললে বিপদ হতে পারে। বেশি কথা বললে নিজের মর্যাদার হানি হয়। ‘আর তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর। তোমার আওয়াজ নীচু কর। নিশ্চয় সবচাইতে নিকৃষ্ট আওয়াজ হল গাধার আওয়াজ’।

উপদেশ-৬: মৃত্যুকে এক মুহূর্তের জন্যও না ভুলে যাওয়া। মৃত্যু জীবনের অপরিহার্য বাস্তবতা। এটি স্মরণে রাখলে মানুষের অহংকার কমে। এছাড়া জীবন চলার পথে দায়িত্বশীলতা বাড়ে। তাই সার্বক্ষণিক মৃত্যুকে স্মরণ রাখা উচিত।

উপদেশ-৭: আল্লাহ্কে স্মরণ করা। আল্লাহর স্মরণ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে অর্থবহ করে তোলে। সূরা বাকারায়  আল্লাহ্ বলেন, ‘যদি তোমরা আমাকে স্মরণ করো তবে আমি তোমাদের স্মরণ করব। যার অন্তরে সব সময়  আল্লাহর যিকির থাকবে, যার জিভ সব সময় আল্লাহর যিকিরে ব্যস্ত থাকবে, আল্লাহ্ তাঁকে প্রিয় বান্দাহ্দের কাতারে শামিল করে নেবেন।

উপদেশ-৮ : কারও উপকার করলে সেটা একেবারের জন্য ভুলে যাওয়া । কেউ কারও কাছে সহজে হাত পাতে না; অভাবে পড়ে কিংবা বিপদে পড়ে মানুষ সাহায্য চায়। উপকার করলে তা নিয়ে খোঁটা দেওয়া যাবে না।

উপদেশ-৯ : কেউ আঘাত দিয়ে থাকলে ভুলে যেতে হবে। ক্ষমার গুণে মানুষের হৃদয়ে জয় করা সম্ভব তাই কেউ আঘাত দিলে তা ভুলে যাওয়াই উত্তম।

উপদেশ-১০: তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ্ রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করান এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করান? আর তিনি সূর্য ও চাঁদকে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকেই চলছে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। আর নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ্ সেই সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত।

সূরা লোকমান-এর এই উপদেশগুলো শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা নয়, বরং এগুলো মানবিক মূল্যবোধের মূর্তপ্রতীক। উপদেশগুলোর সঠিক প্রয়োগ জীবনে বয়ে আনতেপারে শান্তি ও সমৃদ্ধি।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জীবনকে বদলে দিতে পারে সুরা লোকমান!

আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার

ফেরদৌস ফয়সালঃ সূরা লোকমান পবিত্র কুরআনের ৩১তম সূরা। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এতে ৪ রুকু, ৩৪ আয়াত রয়েছে। মুসলিমদের জন্য পবিত্র কুরআন একটি একক কিতাব ও পথ-নির্দেশক। সেই কুরআনের অন্যতম একটি সূরা হল ‘সূরা লোকমান’।

লোকমান হাকিম একটি পরিচিত নাম। যিনি তার পুত্রকে অসাধারণ কিছু উপদেশ দিয়েছিলেন। সেই উপদেশগুলোর মূল বার্তাগুলোই সূরা লোকমানে উল্লেখ করা হয়েছে। যে উপদেশগুলো জীবনের চলার পথকে বদলে দিতে পারে । এছাড়া যারা নামায আদায় করে, যাকাত দেয়, আখিরাতে বিশ্বাস রাখে এবং জীবনে চলার অনবরত সঠিক পথ খোঁজার চেষ্টা করে। তাঁদের জন্য এই সূরাটি একটি মহামূল্যবান জীবন পথের নির্দেশিকা।

উপদেশ-১: আল্লাহর একত্ববাদ মেনে চলাই হচ্ছে ইসলামের মূল ভিত্তি। শিরক করা সবচেয়ে বড় গুনাহ এবং এটি চরম সীমা লঙ্ঘন। তাই সূরা লোকমানে এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে ।

উপদেশ-২: নামায শুধু দৈনিক এক প্রকার ইবাদাত নয় বরং এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। নামাযে দাঁড়ালে মনকে স্থির রাখার চেষ্টা করা জরুরি, যেন শয়তান আমাদের মনোযোগ বিভ্রান্ত না করে। তাই নামাযে একাগ্রতা রাখা জরুরি।

উপদেশ-৩: খাবার ধীরে সুস্থে খাওয়া। তাড়াহুড়ো করে খাবার খেতে গিয়ে গলায় আটকে যায় অথবা খাবার ওপরে উঠে নাক জ্বালাপোড়া করে। একটু অসতর্কতায় বড় বিপদ ডেকে নিয়ে আসতে পারে। এজন্য লোকমান হাকিম খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেছেন।

 

উপদেশ-৪ : অন্যের ঘরে গিয়ে এদিক-ওদিক না তাকানো। এই অভ্যাস থাকলে দূর করা উচিত। লোকমান হাকিম বললেন, অন্যের ঘরে গিয়ে যেন চোখের হেফাজত করে। আপনার জন্য তারাও যেন লজ্জিত না হয়। আপনিও যাতে লজ্জিত না হন।

উপদেশ-৫: কথা বলা বা ভাষণ দেওয়ার সময় নিজেকে সংযত রাখা। অসতর্কভাবে কথা বললে বিপদ হতে পারে। বেশি কথা বললে নিজের মর্যাদার হানি হয়। ‘আর তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর। তোমার আওয়াজ নীচু কর। নিশ্চয় সবচাইতে নিকৃষ্ট আওয়াজ হল গাধার আওয়াজ’।

উপদেশ-৬: মৃত্যুকে এক মুহূর্তের জন্যও না ভুলে যাওয়া। মৃত্যু জীবনের অপরিহার্য বাস্তবতা। এটি স্মরণে রাখলে মানুষের অহংকার কমে। এছাড়া জীবন চলার পথে দায়িত্বশীলতা বাড়ে। তাই সার্বক্ষণিক মৃত্যুকে স্মরণ রাখা উচিত।

উপদেশ-৭: আল্লাহ্কে স্মরণ করা। আল্লাহর স্মরণ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে অর্থবহ করে তোলে। সূরা বাকারায়  আল্লাহ্ বলেন, ‘যদি তোমরা আমাকে স্মরণ করো তবে আমি তোমাদের স্মরণ করব। যার অন্তরে সব সময়  আল্লাহর যিকির থাকবে, যার জিভ সব সময় আল্লাহর যিকিরে ব্যস্ত থাকবে, আল্লাহ্ তাঁকে প্রিয় বান্দাহ্দের কাতারে শামিল করে নেবেন।

উপদেশ-৮ : কারও উপকার করলে সেটা একেবারের জন্য ভুলে যাওয়া । কেউ কারও কাছে সহজে হাত পাতে না; অভাবে পড়ে কিংবা বিপদে পড়ে মানুষ সাহায্য চায়। উপকার করলে তা নিয়ে খোঁটা দেওয়া যাবে না।

উপদেশ-৯ : কেউ আঘাত দিয়ে থাকলে ভুলে যেতে হবে। ক্ষমার গুণে মানুষের হৃদয়ে জয় করা সম্ভব তাই কেউ আঘাত দিলে তা ভুলে যাওয়াই উত্তম।

উপদেশ-১০: তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ্ রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করান এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করান? আর তিনি সূর্য ও চাঁদকে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকেই চলছে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। আর নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ্ সেই সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত।

সূরা লোকমান-এর এই উপদেশগুলো শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা নয়, বরং এগুলো মানবিক মূল্যবোধের মূর্তপ্রতীক। উপদেশগুলোর সঠিক প্রয়োগ জীবনে বয়ে আনতেপারে শান্তি ও সমৃদ্ধি।