উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: লোকালয়ে আসা বাঘকে বন্দি করতে গিয়ে জখম হলেন এক অস্থায়ী বনকর্মী। তার ঘাড়ে থাবা বসিয়েছে বাঘ। আহত বনকর্মী গনেশ অরফে মঙ্গল শ্যামলের একটি চোখ নস্ট হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। গুরুতর জখম অবস্থায় টাইগার টিমের ওই বনকর্মীকে উদ্ধার করে প্রথমে জয়নগর কুলতলি গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করা হয়।
রবিবার কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নগেনাবাদে ৯ নম্বর মুলার জেটি ঘাটের কাছে একটি বাঘ দেখতে পান স্থানীয় যুবক রাজকুমার সাফুঁই। তিনি দাবি করেন, বাঘটি জেটিঘাট সংলগ্ন শ্মশানে ঘোরাঘুরি করছিল। পরে সে গ্রামের রাস্তা ধরে। সাইকেলে চেপে বাড়ি ফেরার পথে তা দেখতে পান রাজকুমার। তিনি ভয়ে সাইকেল ফেলে আর্তনাদ করতে করতে বাড়ি ফেরেন। আর নিমেষে ফের বাঘ ঢোকার খবর ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। আর এরপরেই স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা গ্রাম লাগোয়া ম্যানগ্রোভের জঙ্গলের মধ্যে বাঘের টাটকা পায়ের ছাপ লক্ষ করেন। যদিও সেই সময় বাঘটিকে দেখতে পাননি তাঁরা। খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরের রায়দিঘি রেঞ্জের অন্তর্গত নলগোড়া বিট অফিসে। আর মৈপীঠে নতুন করে বাঘের এই উপস্থিতির খবর পেয়ে সোমবার ভোরেই সেখানে পৌঁছান টাইগার টিম সহ বনদপ্তরের কর্মীরা।
এদিন সকালে বাঘটিকে বন্দি করার পরিকল্পনা করে বনদপ্তরের একটি দল। বাঘের খোঁজ শুরু হয়। সেই সময়ই ঝোপের পাশে একটি ধানক্ষেতে বন কর্মীদের উপরে হামলা করে বাঘটি।৩ জন অস্থায়ী বনকর্মীর মধ্যে একজনের ঘাড়ে থাবা বসায় বাঘটি। একটি চোখ ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায় তাঁর। আর এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয় অস্থায়ী বনকর্মী দেবীপুরের বাসিন্দা ৩৮ বছরের গনেশ অরফে মঙ্গল শ্যামল।
তবে এদিন বিকাল পর্যন্ত বাঘটিকে জঙ্গলে ফেরানো সম্ভব হয়নি বলে জানালেন জেলা বন আধিকারিক নিশা গোস্বামী। তিনি এদিন বলেন, নাইলনের জাল দিয়ে এলাকা ঘেরা হয়েছে।বন দফতরের কর্মীরা এলাকায় রয়েছে।আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত বাঘটিকে গভীর জঙ্গলে ফেরাতে।
এপিডিআর-এর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সহ সম্পাদক মিঠুন মন্ডল সোমবার বলেন, বন কর্মীদের গাফিলতির কারণে বারবার জঙ্গলের বাঘ লোকালয়ে চলে আসছে। বাঘ তাঁড়াতে অস্থায়ী বন কর্মীদের কাছে ভরসা শুধু মাত্র লাঠি। আর এদিন শুধু মাত্র লাঠি হাতে বাঘ তাঁড়াতে গিয়ে গুরুতর আহত হল এক অস্থায়ী বন কর্মী। তাই তাঁর চিকিৎসা সহ তাঁর পরিবারের সমস্ত দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।