৫০০’র বেশি শিক্ষককে কলকাতা থেকে জেলায় বদলির সিদ্ধান্ত

- আপডেট : ৩ মে ২০২৩, বুধবার
- / 9
পুবের কলম প্রতিবেদক: শহর কলকাতায় দীর্ঘদিন ধরেই ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে পঠনপাঠনের প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু তার পরেও শহরে বাংলা মাধ্যম স্কুলও চলতো ভাল ভাবেই। কিন্তু সেই শহরের নাগরিক চরিত্রটাই এখন দ্রুত হারে বদলে যাচ্ছে। বদলাচ্ছে আর্থসামাজিক চরিত্রও। মূল কলকাতা শহরে বাঙালির সংখ্যা দ্রুত হারে কমছে। বাড়ছে হিন্দিভাষী মানুষের ভিড়।
আর তার জেরেই শহরে ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা যেমন ক্রমশ হু হু করে বাড়ছে তেমনি শহরে থাকা বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলিতে পড়ুয়া ক্রমশ কমছে। কেননা শহরে এখনও যা অবশিষ্ট বাঙালি রয়েছে তাঁরাও ছেলেমেয়েদের ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে পড়াতে চাইছেন। এই অবস্থায় দেখা যাচ্ছে শহরে থাকা সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিতে পড়ুয়া ক্রমশ কমছে কিন্তু শিক্ষক রয়ে গিয়েছেন অনেক বেশি। ঠিক উল্টো ছবি গ্রামে। সেখানে পড়ুয়া বেশি, কিন্তু শিক্ষক কম। এই ছবিটা বদলাতেই এবার কলকাতা থেকে ৫০০’র বেশি শিক্ষককে বদলি করা হচ্ছে গ্রাম বাংলার স্কুলে
কলকাতায় থাকা সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা দিন দিন কমছে। পড়ুয়া টানতে তুলনায় দুর্বল স্কুলগুলি নিজেদের মতো করে উদ্যোগও নিচ্ছে। কিন্তু লাভের লাভ সেভাবে কিছুই হচ্ছে না। কেননা বাবা-মারাই চাইছেন না ছেলে বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়ুক। এ সমস্যা কলকাতার স্কুলগুলিতে সর্বাধিক। কলকাতায় থাকা আর্থিকভাবে তুলনায় স্বচ্ছল বাঙালির মধ্যে সরকারি বাংলামাধ্যম স্কুলে পাঠানোর প্রবণতা কমেছে।
বরং ইংরেজি স্কুলে সন্তানকে পাঠাতেই বেশি ঝুঁকছেন তাঁরা। খুব নামি স্কুল বা তুলনায় আর্থিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণির বাস এমন এলাকার স্কুলগুলিতে তবু কিছু পড়ুয়া রয়েছে। এর পাশাপাশি অবাঙালিদের যে ভিড় শহরে বাড়ছে ক্রমশ তাঁরা আসছেন বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও হরিয়ানা থেকে। একই ছবি উত্তর শহরতলি মায় হাওড়া ও হুগলি জেলার শিল্পাঞ্চল এলাকাতেও। এরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াতে চাইছেন।
এই অবস্থায় রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সব স্কুলে বাড়তি শিক্ষক রয়েছে সেখান থেকে শিক্ষকদের বদলি করা হবে গ্রামের সেই স্কুলে যেখানে শিক্ষক তুলনায় কম রয়েছে। সেই হিসাবে এবার ৫০০’র বেশি স্কুল শিক্ষককে কলকাতা থেকে পার্শ্ববর্তী জেলায় বদলির একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ডিআই অফিস থেকে তা শিক্ষকদের কাছে ইতিমধ্যেই পাঠানো শুরু হয়েছে।
এই অবস্থায় কলকাতার সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিতে পড়ুয়া না বাড়লে আগামী দিনে সেই স্কুলগুলি কার্যত বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না রাজ্য সরকারের কাছে।