১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খোশ আমদেদ মাহে রমযান

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার
  • / 12

খোশ আমদেদ মাহে রমযানআহমদ হাসান ইমরানঃ আজ থেকে দেশে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমযান মাস। এ মাসের গুরুত্ব ও মর্যাদা এই জন্য যে, এই মুবারক মাসটিতে ব্যক্তি এবং সমাজের সামনে একটি বড় সুযোগ আসে। রমযান মানব জাতির কল্যাণ এবং মুক্তির সওগাত বহন করে আনে। আল্লাহর শেষ নবী সা.-এর একটি হাদিস রয়েছে।  তাহল,  সেই ব্যক্তি যথার্থ হতভাগ্য যে রমযান মাস পেল অথচ নিজের গুনাহ (পাপরাশি) মাফ করিয়ে নিতে পারল না। রমযান মাস ক্ষমার মাস, বরকতের মাস, মানুষের জন্য সব থেকে ভয়ানক শাস্তি জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত বা মুক্তি অর্জনের মাস।

 

রমযান মানুষকে আত্মশুদ্ধির পথও বাতলে দেয়। কি করে আমরা সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করে নবী সা.-এর সুন্নাহ অনুসরণ করে নিজের জীবনকে পরিশুদ্ধ করতে পারি। সর্বত্তোম গুণাবলীতে ভূষিত করতে পারি। কি করে আল্লাহর রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে পারি। রমযানের রোযা আমাদের কাছে সেই সুযোগ নিয়ে আসে।

 

রমযানের আরও শিক্ষা হল, ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ। বলা হয়েছে, কেউ যদি কোনও রোযাদার ব্যক্তিকে গালমন্দ,  অপমান করে, তবে সে রেগে না গিয়ে বলবে ভাই আমি রোযা রেখেছি, আমি কোনও অনাবশ্যক বিতণ্ডায় লিপ্ত হতে চাই না। রমযানের রোযার আরও অনেক দিক রয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে, কেউ যদি রোযা রেখে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকে কিন্তু সে খারাপ কাজ ও আচরণ থেকে বিরত না হয় তবে আল্লাহ বলছেন, এই ব্যক্তি শুধু ক্ষুধা ও পিপাসাই অর্জন করবে। রমযানের কোনও সওয়াব সে পাবে না।

আমরা জানি, রমযান হচ্ছে সহানুভূতিরও মাস। পরস্পরকে বিশেষ করে আর্ত ও বিপন্ন মানুষের প্রতি সহানুভূতি এই মাসে আমাদের জন্য আল্লাহর রহমত নিয়ে আসবে। ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান থেকে শুরু করে যে কোনও সদাচরণ আল্লাহর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আর রমযান মাসে আল্লাহ এক্ষেত্রে সওয়াব বা পুরস্কার বহুগুণ বৃদ্ধি করেন।

রমযান শয়তানি কাজ ও অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকারও পূর্ণ তাগিদ দেয়। সমাজ থেকে অবিচার, অশ্লীলতা দূর করার ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই ভূমিকা পালন করা উচিত।

আরও উল্লেখযোগ্য হল, এই মাহে রমযানেই পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছিল। ঐশী বাণী অবতীর্ণ হয়েছিল। তাই এই মাসে আমাদের যেমন আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করতে হবে, সেইসঙ্গে পবিত্র কুরআনের তিলাওয়াত ও অর্থ বোঝার দ্বারা আল্লাহর বাণীকে মেনে চলার অঙ্গিকার করতে হবে। সমাজেও তা ছড়িয়ে দিতে হবে।

আর শেষ কথা হল, রমযান মাসে আমরা ত্যাগ, তিতিক্ষা সবরের যে শিক্ষা অর্জন করি, শিক্ষা অর্জন করি খোদা ভীরুতার, তা যেন বাকি ১১ মাস আমাদের জীবনকে অনুপ্রাণিত করতে থাকে, তার সঠিক প্রচেষ্টাও আমাদের করতে হবে।   তবেই আমাদের জীবনে রমযান সার্থক হয়ে উঠবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

খোশ আমদেদ মাহে রমযান

আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার

খোশ আমদেদ মাহে রমযানআহমদ হাসান ইমরানঃ আজ থেকে দেশে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমযান মাস। এ মাসের গুরুত্ব ও মর্যাদা এই জন্য যে, এই মুবারক মাসটিতে ব্যক্তি এবং সমাজের সামনে একটি বড় সুযোগ আসে। রমযান মানব জাতির কল্যাণ এবং মুক্তির সওগাত বহন করে আনে। আল্লাহর শেষ নবী সা.-এর একটি হাদিস রয়েছে।  তাহল,  সেই ব্যক্তি যথার্থ হতভাগ্য যে রমযান মাস পেল অথচ নিজের গুনাহ (পাপরাশি) মাফ করিয়ে নিতে পারল না। রমযান মাস ক্ষমার মাস, বরকতের মাস, মানুষের জন্য সব থেকে ভয়ানক শাস্তি জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত বা মুক্তি অর্জনের মাস।

 

রমযান মানুষকে আত্মশুদ্ধির পথও বাতলে দেয়। কি করে আমরা সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করে নবী সা.-এর সুন্নাহ অনুসরণ করে নিজের জীবনকে পরিশুদ্ধ করতে পারি। সর্বত্তোম গুণাবলীতে ভূষিত করতে পারি। কি করে আল্লাহর রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে পারি। রমযানের রোযা আমাদের কাছে সেই সুযোগ নিয়ে আসে।

 

রমযানের আরও শিক্ষা হল, ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ। বলা হয়েছে, কেউ যদি কোনও রোযাদার ব্যক্তিকে গালমন্দ,  অপমান করে, তবে সে রেগে না গিয়ে বলবে ভাই আমি রোযা রেখেছি, আমি কোনও অনাবশ্যক বিতণ্ডায় লিপ্ত হতে চাই না। রমযানের রোযার আরও অনেক দিক রয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে, কেউ যদি রোযা রেখে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকে কিন্তু সে খারাপ কাজ ও আচরণ থেকে বিরত না হয় তবে আল্লাহ বলছেন, এই ব্যক্তি শুধু ক্ষুধা ও পিপাসাই অর্জন করবে। রমযানের কোনও সওয়াব সে পাবে না।

আমরা জানি, রমযান হচ্ছে সহানুভূতিরও মাস। পরস্পরকে বিশেষ করে আর্ত ও বিপন্ন মানুষের প্রতি সহানুভূতি এই মাসে আমাদের জন্য আল্লাহর রহমত নিয়ে আসবে। ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান থেকে শুরু করে যে কোনও সদাচরণ আল্লাহর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আর রমযান মাসে আল্লাহ এক্ষেত্রে সওয়াব বা পুরস্কার বহুগুণ বৃদ্ধি করেন।

রমযান শয়তানি কাজ ও অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকারও পূর্ণ তাগিদ দেয়। সমাজ থেকে অবিচার, অশ্লীলতা দূর করার ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই ভূমিকা পালন করা উচিত।

আরও উল্লেখযোগ্য হল, এই মাহে রমযানেই পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছিল। ঐশী বাণী অবতীর্ণ হয়েছিল। তাই এই মাসে আমাদের যেমন আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করতে হবে, সেইসঙ্গে পবিত্র কুরআনের তিলাওয়াত ও অর্থ বোঝার দ্বারা আল্লাহর বাণীকে মেনে চলার অঙ্গিকার করতে হবে। সমাজেও তা ছড়িয়ে দিতে হবে।

আর শেষ কথা হল, রমযান মাসে আমরা ত্যাগ, তিতিক্ষা সবরের যে শিক্ষা অর্জন করি, শিক্ষা অর্জন করি খোদা ভীরুতার, তা যেন বাকি ১১ মাস আমাদের জীবনকে অনুপ্রাণিত করতে থাকে, তার সঠিক প্রচেষ্টাও আমাদের করতে হবে।   তবেই আমাদের জীবনে রমযান সার্থক হয়ে উঠবে।