১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের জন্য বেতনের সব অর্থ দান করলেন শ্রীলঙ্কার মুসলিম ডাক্তার

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 7

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় প্রসূতিবিদ্যা ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ শাফি শিহাবউদ্দিন। ২০১৯ সালে মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। কেবলমাত্র মুসলিম পরিচয়ের কারণে একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে। দীর্ঘ ভোগান্তি শেষে তিনি নির্দোষ প্রমাণ হয়েছেন ও জামিন পেয়েছেন। উচ্চ আদালতে আপিল করে আদায় করেছেন তিন বছরের বকেয়া বেতন ২৬ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮১৬ রুপিয়া। এই অর্থের পুরোটাই তিনি দান করে দিয়েছেন দেশের মানুষের জরুরি ওষুধ ক্রয়ের জন্য। শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলীয় করুনাগেলে শহরের এক হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন ডাক্তার শাফি। করুনাগেলে হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন ডাক্তার শাফির চিকিৎসক স্ত্রী। সন্তানরা পড়াশোনা করছিল স্থানীয় নামী স্কুলে। সুখ, সম্মান ও সমৃদ্ধির কমতি ছিল না জীবনে। পেশাগত সাফল্য ও সম্মানের কারণে পরশ্রীকাতর সহকর্মীদের রোষানলে ছিলেন তিনি। একইভাবে চক্ষুশূল হয়েছিলেন সাম্প্রদায়িক রাজনীতির। এরপর আসে ২০১৯ সাল। সে বছর এপ্রিলে ইস্টার সানডের সময় কলম্বোতে রক্তক্ষয়ী হামলা হয়। ইস্টার সানডের ঠিক এক মাসের মাথায় শ্রীলঙ্কার একটি সংবাদমাধ্যমে ছাপা হয় চাঞ্চল্যকর এক প্রতিবেদন। বলা হয়, করুনাগেলে হাসপাতালে কর্মরত ‘বিশেষ সম্প্রদায়ভূক্ত’ একজন গাইনি চিকিৎসক অস্ত্রোপচারের সময় নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে ফ্যালোপিয়ান টিউবে চাপ দিয়ে কয়েক হাজার সিংহলি নারীর দ্বিতীয়বারের মতো সন্তান ধারণের সম্ভাবনা বন্ধ করে দিচ্ছেন। এটুকুই দরকার ছিল। একটি দায়িত্বহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদনকে পুঁজি করে মঞ্চে নামেন রাথানা থেরো নামের একজন প্রভাবশালী বর্ণবাদী সিংহলি ধর্মযাজক, যিনি পূর্ববর্তী বছরগুলোয় মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযানকে সমর্থন করে পরিচিতি পেয়েছিলেন। মুসলিম চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগের খবর সামনে রেখে তিনি হাওয়া দিতে থাকেন সাম্প্রদায়িক উসকানির পালে। ডাক্তার শাফিকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে আদালত জামিন মঞ্জুর করলে মুক্ত হন তিনি।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দেশের জন্য বেতনের সব অর্থ দান করলেন শ্রীলঙ্কার মুসলিম ডাক্তার

আপডেট : ১৬ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় প্রসূতিবিদ্যা ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ শাফি শিহাবউদ্দিন। ২০১৯ সালে মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। কেবলমাত্র মুসলিম পরিচয়ের কারণে একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে। দীর্ঘ ভোগান্তি শেষে তিনি নির্দোষ প্রমাণ হয়েছেন ও জামিন পেয়েছেন। উচ্চ আদালতে আপিল করে আদায় করেছেন তিন বছরের বকেয়া বেতন ২৬ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮১৬ রুপিয়া। এই অর্থের পুরোটাই তিনি দান করে দিয়েছেন দেশের মানুষের জরুরি ওষুধ ক্রয়ের জন্য। শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলীয় করুনাগেলে শহরের এক হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন ডাক্তার শাফি। করুনাগেলে হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন ডাক্তার শাফির চিকিৎসক স্ত্রী। সন্তানরা পড়াশোনা করছিল স্থানীয় নামী স্কুলে। সুখ, সম্মান ও সমৃদ্ধির কমতি ছিল না জীবনে। পেশাগত সাফল্য ও সম্মানের কারণে পরশ্রীকাতর সহকর্মীদের রোষানলে ছিলেন তিনি। একইভাবে চক্ষুশূল হয়েছিলেন সাম্প্রদায়িক রাজনীতির। এরপর আসে ২০১৯ সাল। সে বছর এপ্রিলে ইস্টার সানডের সময় কলম্বোতে রক্তক্ষয়ী হামলা হয়। ইস্টার সানডের ঠিক এক মাসের মাথায় শ্রীলঙ্কার একটি সংবাদমাধ্যমে ছাপা হয় চাঞ্চল্যকর এক প্রতিবেদন। বলা হয়, করুনাগেলে হাসপাতালে কর্মরত ‘বিশেষ সম্প্রদায়ভূক্ত’ একজন গাইনি চিকিৎসক অস্ত্রোপচারের সময় নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে ফ্যালোপিয়ান টিউবে চাপ দিয়ে কয়েক হাজার সিংহলি নারীর দ্বিতীয়বারের মতো সন্তান ধারণের সম্ভাবনা বন্ধ করে দিচ্ছেন। এটুকুই দরকার ছিল। একটি দায়িত্বহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদনকে পুঁজি করে মঞ্চে নামেন রাথানা থেরো নামের একজন প্রভাবশালী বর্ণবাদী সিংহলি ধর্মযাজক, যিনি পূর্ববর্তী বছরগুলোয় মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযানকে সমর্থন করে পরিচিতি পেয়েছিলেন। মুসলিম চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগের খবর সামনে রেখে তিনি হাওয়া দিতে থাকেন সাম্প্রদায়িক উসকানির পালে। ডাক্তার শাফিকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে আদালত জামিন মঞ্জুর করলে মুক্ত হন তিনি।