BREAKING:
রাজ্যসভায় পেশ ওয়াকফ বিল সংক্রান্ত জেপিসি রিপোর্ট দূরদর্শনে সম্প্রচারের অনুমতি পেল না স্যার সৈয়দ আহমদের বায়োপিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে সোমবার রাজ্যের আইনজীবীদের ধর্মঘট হেট স্পিচ: বিজেপি নেতা পিসি জর্জের আগাম জামিন নাকচ দুবাইয়ে সব বেসরকারি স্কুলে বাধ্যতামূলক হল আরবি ৫০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা সিআইএর পাকিস্তান ম্যাচের আগে বাবা তৌসিফকে স্মরণ শামির ইউজিসির খসড়া নির্দেশিকার বিরোধিতায় জাতীয় কনভেনশন, যোগ দিল অবিজেপিশাসিত চার রাজ্য হেমন্ত রাজ্যে মুসলিম সাংসদ রাকিবুল হুসেনের ওপর প্রাণঘাতী হামলা শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন সোনিয়া গান্ধি ভাষা ও সাহিত্য হোক দ্বীন প্রচারের মাধ্যম

দেরি করে ঘুমাতে নিষেধ করেছেন মহানবী সা.

রিপোর্টার:
  • শেষ আপডেট: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

পুবের কলম, দ্বীন দুনিয়া ডেস্ক: রাতে জলদি ঘুমাতে যাওয়া আর সকালে জলদি ঘুম থেকে ওঠা সুস্বাস্থ্য, সম্পদ আর জ্ঞানের পূর্বশর্ত। বিষয়টি রাসূল সা.-এর হাদিসের সঙ্গেও মিলে যায়। রাসূল সা. রাতে দেরি করে ঘুমানো অপছন্দ করতেন। সাহাবায়ে কিরামকে তাগিদ দিতেন এশার পরপরই ঘুমিয়ে যাওয়ার। রাসূলুল্লাহ্ সা. এশার নামায এক-তৃতীয়াংশ রাত পরিমাণ দেরি করে পড়া পছন্দ করতেন, আর এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। (সহিহ বুখারী, হাদিস : ৫৯৯)

রাতে দেরিতে ঘুমানোয় স্বাস্থ্যঝুঁকি

মানুষের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম। এর জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময় হলো রাত। কেননা আল্লাহ তাআলা রাতকে বিশ্রামের উপযোগী করেই বানিয়েছেন। মহান আল্লাহ্তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাত্রিকে করেছি আবরণস্বরূপ আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য।’ (সূরা নাবা, আয়াতঃ ৯-১১) 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসারবিষয়ক গবেষণা বিভাগ ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের তথ্য মতে, যখন সূর্যের আলো থাকে না তখন শরীরকে কাজ করতে বাধ্য করা বা জাগিয়ে রাখা শরীরে মেলাটনিন হরমোন তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে। আর এই মেলাটনিনই মানুষের দেহে টিউমারের বৃদ্ধিকে রোধ করে। ফলে তাদের ধারণা, রাত জাগা মানুষদের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অর্থাৎ রাতের ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং এটি কোনোভাবেই দিনের বেলায় ঘুমিয়ে পুষিয়ে নেওয়া যায় না।

তাই রাতের বেলা গল্পগুজব, ফেসবুকিংসহ সব অহেতুক কাজ থেকেই বিরত থাকা প্রয়োজন। কারণ রাতে অহেতুক দেরি করে ঘুমানো মানুষকে শেষরাতের ইবাদত ও ফজর নামায থেকে যেমন বঞ্চিত করে, তেমনি এটি স্বাস্থ্যের জন্যও মোটেই শুভকর নয়। ব্রিটেনের এক দল গবেষকের মতে, যারা দেরিতে ঘুমায় ও দেরিতে ঘুম থেকে ওঠে, তাদের অকালমৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ব্রিটেনের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. পিরেঞ্জ লেভি বলেন, রাত জাগার বদ-অভ্যাস যারা গড়ে তুলেছে, তাদের ৯০ শতাংশই মানসিক রোগের শিকার। ৩০ শতাংশে থাকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। এছাড়া স্নায়বিক সমস্যা থেকে শুরু করে অন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।

♦ সকালে দেরিতে ঘুম থেকে উঠার অপকারিতা

ব্রিটেনের সুবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রোনোলজি বিভাগের অধ্যাপক জন রিচার্ডসন বলেন, ‘আমরা দেখেছি, যারা দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে তারা নানা ধরনের মানসিক ও শারীরিক জটিলতায় ভোগে। তাদের গড় আয়ু নিয়মিত সকালে উঠা মানুষের চেয়ে সাড়ে ছয় বছর কম।’

খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠার উপকারিতা

খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা সম্পদ ও জ্ঞানের জন্য পূর্বশর্ত। বলা যায় সফলতার চাবিকাঠি। কেননা ভোররাতে বা দিনের শুরুতে সবচেয়ে বেশি কল্যাণ থাকে। শুধু ইবাদাত-বন্দেগীই নয়, দুনিয়াবি কাজের জন্যও এটি সবচেয়ে উপযুক্ত ও বরকতময় সময়। রাসূলুল্লাহ্ সা. ভোরবেলার কাজের জন্য বরকতের দোয়া করেছেন।

হযরত সখর গামেদি রা. সূত্রে বর্ণিত, রাসূল সা. এই দোয়া করেছেন, ‘হে আল্লাহ্! আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরুকে বরকতময় করুন।’ এ জন্যই রাসূল সা. কোনও যুদ্ধ অভিযানে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতে পাঠাতেন। বর্ণনাকারী বলেন, হযরত সখর রা.-ও তাঁর ব্যবসায়ী কার্যক্রম ভোরবেলা শুরু করতেন। এতে তাঁর ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয়। তিনি সীমাহীন প্রাচুর্য লাভ করেন। (আবু দাউদ, হাদিস ২৬০৬) 

 

তাছাড়া এই সময় বান্দাহ্র রিযিক বণ্টন হয়। যারা তখন ঘুমিয়ে থাকে তারা সফলতা ও রিযিকের বরকত থেকে বঞ্চিত হয়। রাসূল সা. ইরশাদ করেন,  ‘সকালবেলায় রিযিকের অন্বেষণ করো! কেননা সকালবেলা বরকতময় ও সফলতা অর্জনের জন্য উপযুক্ত সময়।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস ৬২২০)

ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ সা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূল সা. আমার ঘরে এসে আমাকে ভোরবেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় দেখলেন, তখন আমাকে পা দিয়ে নাড়া দিলেন এবং বললেন, মামণি! ওঠো! তোমার রবের পক্ষ থেকে রিযিক গ্রহণ করো! অলসদের দলভুক্ত হয়ো না। কেননা আল্লাহ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত মানুষের মধ্যে রিযিক বণ্টন করে থাকেন। (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব, হাদিস ২৬১৬)

খুব ভোরে ওঠা মানুষগুলো সবার থেকে আলাদা ও কর্মদক্ষ হয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা যায়, যারা খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে কিংবা রাতে কম ঘুমায়, অন্যদের তুলনায় তাদের আইকিউ ভালো হয়। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী ভোরবেলায়ই জাগতে পারে, তারা দেরিতে জাগ্রতদের চেয়ে বেশি নম্বর পায়। এই সাফল্যের পেছনে তারা বাড়তি উৎপাদনশীলতা এবং ভালো ঘুম হওয়াকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করে।

রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ্ ওই বান্দাহর ওপর রহম করুন, যে রাত্রিকালে উঠে নামায আদায় করে এবং তার স্ত্রীকেও জাগায় এবং সেও  নামায আদায় করে। যদি সে (স্ত্রী) নিদ্রার চাপে উঠতে না চায়, তবে সে (ভালোবেসে) তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়। আল্লাহ ওই নারীর ওপরও রহম করুন, যে রাত্রিতে উঠে নামায আদায় করে এবং তার স্বামীকে ঘুম থেকে জাগায় এবং সেও নামায আদায় করে। যদি সে ঘুম থেকে উঠতে না চায়, তবে সে (ভালোবেসে) তার মুখে পানি ছিটিয়ে জাগিয়ে তোলে।’ (আবু দাউদ, হাদিস ১৪৫০) 

এই সংক্রান্ত আরও খবর
Copyright © 2025 Puber Kalom All rights reserved.
Developed By eTech Builder