২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেহালায় শিশুমৃত্যুর ঘটনায় পরিবারে পাশে মুখ্যমন্ত্রী, জখম বাবার চিকিৎসার দায়িত্ব নিল রাজ্য সরকার

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৫ অগাস্ট ২০২৩, শনিবার
  • / 13

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  বেহালায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত শিশুর পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। গতকাল দুর্ঘটনার হওয়ার পর পরই সিপি ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে ফোন করে খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিভাবে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হল, তা নিয়ে কড়া নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার মৃত শিশুর বাড়িতে গিয়েছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সেই সময়েই মুখ্যমন্ত্রী ফোনে কথা বলেন পরিবারের লোকেদের সঙ্গে। ঘটনায় ঘাতক গাড়ি চালকের কড়া শাস্তি হবে বলেন জানিয়েছেন মন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত ব্যাপারটি তদার করছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। শিশুর বাবা এখনও হাসপাতালে আছেন। তাঁর চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব রাজ্য সরকার নিয়েছে।’

লরির ধাক্কায় মৃত সৌরনীলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে কার্যত ভেঙে পড়েছেন অরূপ বিশ্বাস। অত্যন্ত ভারাক্রান্ত তাঁর মন। বলছেন, ‘বাড়িতে ঢুকে আমার হাত-পা কাঁপছিল। শিশুর মা এখনও প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় রয়েছেন। এ দৃশ্য দেখার পর কোনও ভাষা নেই।’

মৃত শিশুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে রাতে এসএসকেএম হাসপাতালেও যান তিনি। দুর্ঘটনার পিছনে পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করে স্থানীয় মানুষ থেকে অভিভাবকরা। অরূপ বিশ্বাস বলছেন, ‘প্রশাসন সবরকমভাবে সর্ব স্তরের মানুষের জন্য কাজ করে। অভিযোগ সব সময়েই কিছু না কিছু থাকে, আগামীতেও থাকবে। তবে প্রশাসনের তরফ থেকে সবসময় লক্ষ্য রাখা হয়।’

বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা নাগাদ বেপরোয়া লরির ধাক্কায় বেহালায় মর্মান্তিক মৃত্যু দ্বিতীয় শ্রেণির স্কুলছাত্রের। আহত ছাত্রের বাবা। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায়  এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় অগ্নিগর্ভ বেহালা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। নামানো হয় র‍্যাফ।  মৃত শিশু সৌরনীল সরকারের বয়স সাত বছর। ২৫ আগস্টই জন্মদিন ছিল তার।

বেহালার চৌরাস্তার কাছে বড়িশা স্কুলের সামনে সাত সকালেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। বাবার সঙ্গে স্কুলে যাচ্ছিল ওই ছাত্র। স্কুলে পরীক্ষা ছিল তার। ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঘটনাস্থল।  যানজটে পড়ে মানুষ। ডায়মন্ড হারবার রোড সহ আশপাশের সবকটি রাস্তাই প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে যায়। প্রায় তিনঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকে রাস্তা।

আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে একের পর এক পুলিশের গাড়িতে। উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে যায় বিরাট পুলিশ বাহিনী। স্কুলের সামনে পড়ুয়াদের সুরক্ষা কোথায়, এই প্রশ্ন তুলেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকেরা।  তাঁদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় ট্রাফিকের কোনও নিয়ম মানা হয় না,  সে দিকে কোন নজরই নেই পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগও জানাচ্ছেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি,  পুলিশ টাকা নেয় বলেই ওই রাস্তা দিয়ে দ্রুতগতিতে বেরিয়ে যায় লরি। তার জেরেই আজকের এই ঘটনা বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন বিক্ষোভকারীরা। প্রথমে পুলিশ ভ্যান ও পরে বাইকে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, ভাঙচুর চালানো হয়  বাসে। উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে দফায় দফায় লাঠিচার্জ করছে পুলিশ। নামানো হয় র‌্যাফ।

 


                            

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বেহালায় শিশুমৃত্যুর ঘটনায় পরিবারে পাশে মুখ্যমন্ত্রী, জখম বাবার চিকিৎসার দায়িত্ব নিল রাজ্য সরকার

আপডেট : ৫ অগাস্ট ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  বেহালায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত শিশুর পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। গতকাল দুর্ঘটনার হওয়ার পর পরই সিপি ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে ফোন করে খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিভাবে এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হল, তা নিয়ে কড়া নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার মৃত শিশুর বাড়িতে গিয়েছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সেই সময়েই মুখ্যমন্ত্রী ফোনে কথা বলেন পরিবারের লোকেদের সঙ্গে। ঘটনায় ঘাতক গাড়ি চালকের কড়া শাস্তি হবে বলেন জানিয়েছেন মন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত ব্যাপারটি তদার করছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। শিশুর বাবা এখনও হাসপাতালে আছেন। তাঁর চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব রাজ্য সরকার নিয়েছে।’

লরির ধাক্কায় মৃত সৌরনীলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে কার্যত ভেঙে পড়েছেন অরূপ বিশ্বাস। অত্যন্ত ভারাক্রান্ত তাঁর মন। বলছেন, ‘বাড়িতে ঢুকে আমার হাত-পা কাঁপছিল। শিশুর মা এখনও প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় রয়েছেন। এ দৃশ্য দেখার পর কোনও ভাষা নেই।’

মৃত শিশুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে রাতে এসএসকেএম হাসপাতালেও যান তিনি। দুর্ঘটনার পিছনে পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করে স্থানীয় মানুষ থেকে অভিভাবকরা। অরূপ বিশ্বাস বলছেন, ‘প্রশাসন সবরকমভাবে সর্ব স্তরের মানুষের জন্য কাজ করে। অভিযোগ সব সময়েই কিছু না কিছু থাকে, আগামীতেও থাকবে। তবে প্রশাসনের তরফ থেকে সবসময় লক্ষ্য রাখা হয়।’

বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা নাগাদ বেপরোয়া লরির ধাক্কায় বেহালায় মর্মান্তিক মৃত্যু দ্বিতীয় শ্রেণির স্কুলছাত্রের। আহত ছাত্রের বাবা। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায়  এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় অগ্নিগর্ভ বেহালা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। নামানো হয় র‍্যাফ।  মৃত শিশু সৌরনীল সরকারের বয়স সাত বছর। ২৫ আগস্টই জন্মদিন ছিল তার।

বেহালার চৌরাস্তার কাছে বড়িশা স্কুলের সামনে সাত সকালেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। বাবার সঙ্গে স্কুলে যাচ্ছিল ওই ছাত্র। স্কুলে পরীক্ষা ছিল তার। ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঘটনাস্থল।  যানজটে পড়ে মানুষ। ডায়মন্ড হারবার রোড সহ আশপাশের সবকটি রাস্তাই প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে যায়। প্রায় তিনঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকে রাস্তা।

আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে একের পর এক পুলিশের গাড়িতে। উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে যায় বিরাট পুলিশ বাহিনী। স্কুলের সামনে পড়ুয়াদের সুরক্ষা কোথায়, এই প্রশ্ন তুলেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকেরা।  তাঁদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় ট্রাফিকের কোনও নিয়ম মানা হয় না,  সে দিকে কোন নজরই নেই পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগও জানাচ্ছেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি,  পুলিশ টাকা নেয় বলেই ওই রাস্তা দিয়ে দ্রুতগতিতে বেরিয়ে যায় লরি। তার জেরেই আজকের এই ঘটনা বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন বিক্ষোভকারীরা। প্রথমে পুলিশ ভ্যান ও পরে বাইকে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, ভাঙচুর চালানো হয়  বাসে। উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে দফায় দফায় লাঠিচার্জ করছে পুলিশ। নামানো হয় র‌্যাফ।