ডেউচা পাঁচামি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা ঘিরে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া
- আপডেট : ৯ নভেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার
- / 10
কৌশিক সালুই বীরভূম “ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। যা হবে আলোচনার ভিত্তিতে”। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিধানসভায় এই ঘোষণার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া এলাকায়। মঙ্গলবার তিনি জমি দাতা,পাথর ব্যবসায়ী, শ্রমিক সহ বিভিন্ন মানুষজনের অর্থনৈতিক পুনর্বাসন এর কথা ঘোষণা করেন।
ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্পাঞ্চল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিধানসভায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন নিয়ে 10 হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। যদিও যে সমস্ত জমি অধিগ্রহণ হবে তা দাতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে, জোর করে নয়। এই ঘোষণার পর বৃহৎ অংশের মধ্যে বিশাল খুশির হাওয়া হলেও কিছু মানুষের কাছে বিষয়টি যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। জমি দাতা পাথর ব্যবসায়ী পাথর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক কৃষি শ্রমিক সকলের জন্য পুনর্বাসন ঘোষণা করেছেন।
জমি হারাদের বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা এবং একজন করে মোট প্রায় ৫হাজার জনকে জুনিয়র কনস্টেবল সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। একসঙ্গে যাদের বাড়ি অধিগ্রহণ হবে তাদের কে ৬০০ বর্গফুটের বাড়ি এবং ৫লক্ষ টাকা শিফটিং অ্যালাউন্স দেওয়া হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় বর্তমানে পাথর শিল্পাঞ্চলে কর্মরত ৩০০০ জন শ্রমিককে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা এককালীন দেওয়া হবে। ওই এলাকায় কর্মরত ১৬০জন কৃষি শ্রমিককে এককালীন ৫০হাজার টাকা এবং ৫০০ দিনের জন্য ১০০দিনের কাজ দেওয়া হবে। ২৮৫ জন ক্রাশার মালিক কে তার জমি এবং বাড়ির জন্য মূল্য এবং এককালীন ৫০হাজার টাকা এছাড়া৬মাস ধরে প্রতিদিন ১০ ট্রাক কালো পাথর বিনামূল্যে দেওয়া হবে এছাড়া চাঁদা মৌজায় ব্যাসল্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করে পুনর্বাসন দেওয়া হবে।
প্রথম পর্যায়ে দেওয়ানগঞ্জ এবং হরিণসিঙ্গা এলাকায় যেখানে কম গভীরতা কয়লা আছে সেখানে কাজ শুরু হবে। কিন্তু অন্য একটা অংশ মুখ্যমন্ত্রীর পুনর্বাসন ঘোষণায় সরাসরি বিরোধিতা শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল আলম বলেন,” কয়লা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ঘোষণা করেছে তাতে খুশি। আমরা চাই দ্রুত এলাকায় কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হোক”। বীরভূম জেলা আদিবাসী নেতা সুনীল সরেন বলেন,” মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে একতরফাভাবে এলাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তার আমরা তীব্র প্রতিবাদ করছি। আমরা বরাবর চেয়েছি এলাকার মানুষদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এই আর্থিক পুনর্বাসন ঘোষণা হোক। কিন্তু সেটা হয়নি। সবারই স্বার্থ সুরক্ষা কতটা হবে সে নিয়ে আমরা যথেষ্ট আশঙ্কায় রয়েছি”। জেলার আর এক আদিবাসী নেতা রবিন সরেন বলেন,” আদিবাসীরা কয়লা শিল্পাঞ্চল এর পক্ষে। সরকার সঠিক ও উপযুক্ত পুনর্বাসন দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করবে এবং সেটা সাধারণ মানুষের অনুমতি সাপেক্ষে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন জোর করে নয় আলোচনা করে অধিগ্রহণ হবে। পুনর্বাসন এবং প্রকল্পের বাস্তবতা নিয়ে আমাদেরকে সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। এটা সরকারিভাবে জানানোর দাবি করছি”।